চট্টগ্রামে খুলেছে পোশাক কারখানা

প্রকাশ : ২৬ জুলাই ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  তামীম রহমান, চট্টগ্রাম

দেশব্যাপী চলমান কোটাবিরোধী আন্দোলনে সহিংসতায় ব্যাপক পরিমাণে জানমালের ক্ষতিসহ অস্থিতিশীল পরিস্থিতি বিরাজমান ছিল। বিগত কয়েকদিন সারা দেশে কারফিউ জারি করায় পরিস্থিতি ক্রমেই শান্ত হয়ে আসে। বন্দরনগরী চট্টগ্রাম মেট্রো এলাকায় থমথমে অবস্থা ছিল বেশ কয়েকদিন। দোকান, স্কুল, কলেজ, কল-কারখান বন্ধ ছিল। খেটে খাওয়া মানুষজন ছাড়া রাস্তাঘাটে মানুষজনের উপস্থিতি ছিল কম। নগরীতে টানা চারদিন বন্ধ থাকার পর গত বুধবার দিনভর কাজ চলেছে পোশাক কারখানায়। পাঁচ শতাধিক পোশাক কারখানার অধিকাংশই খুলেছে। কারখানায় শ্রমিক উপস্থিতি ছিল ৯০ ভাগ। বিজিএমইএ’র প্রথম সহ-সভাপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম জানান, আমাদের প্রায় সব পোশাক কারখানা খুলেছে। অল্প কিছু কারখানা নিজেদের ব্যবস্থাপনার ঘাটতি থাকায় খুলতে পারেনি। প্রশাসন কারখানা খোলার পর সব ধরনের সহযোগিতা করেছে।

কারখানা খুললেও ইন্টারনেট চালু না হওয়ায় অনেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তারা বলেছেন, বিদেশি বায়ারের অর্ডারের ভিত্তিতে আমরা স্যুয়েটারসহ নানা ধরনের পোশাক তৈরি করছি। সেই বায়ারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছি না। এতে আমাদের মধ্যে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে।

এদিকে গত বুধবার সকালের দিকে চট্টগ্রাম থেকে দূরপাল্লার পথে চলাচলকারী সব বাস টার্মিনাল স্টপেজ পরিদর্শন করছেন। জেলা প্রশাসক আবুল বাশার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান।

তিনি জানান, নগরীর শাহ আমানত ব্রিজ এলাকা থেকে দামপাড়া, সিটি গেট, সিনেমা প্যালেস এলাকার বাস স্টপেজ টার্মিনালগুলো পরিদর্শন করেছি। পরিদর্শনের পর যাত্রী বোঝাই বাসগুলো গন্তব্যের উদ্দেশে ছেড়ে দিতে সহযোগিতা করেছি। বেশ কিছু বাস দেশের বিভিন্ন গন্তব্যের উদ্দেশে রওয়ানা দিয়েছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাদের নিরাপত্তা দেয়া হয়েছে।

গত বুধবার চট্টগ্রামে হরতাল শিথিল হতে পারে কি না এ প্রশ্নে তিনি বলেন, এ ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত পেলে তাৎক্ষণিক জানিয়ে দেয়া হবে।

গত বুধবার দুপুরে নগরীর জামাল খান, বহদ্দারহাট মোড়, আন্দরকিল্লা মোড়, মুরাদপুর মোড় ঘুরে দেখা যায়, কারফিও শিথিল থাকায় লোকজনের চলাচল বেড়ে যায়। সড়কে প্রচুর যানবাহন চলাচল করেছে। কাঁচাববাজারগুলোতে পণ্য সরবরাহ কিছুটা বেড়েছে। তবে এখনো তেমন কমেনি। নগরীর গুরুত্বপূর্ণ এলাকার সবখানে মোতায়েন ছিল পুলিশ। পাশাপাশি বিজিবি ও সেনাবাহিনীর টহলও ছিল। নগরীতে কোথাও কোনো সংঘর্ষের খবর পাওয়া যায়নি। অন্যান্য দিনের মতো ইন্টারনেট না থাকায় এটিএম বুথ থেকে টাকা তুলতে না পারায় অনেকে হতাশা প্রকাশ করেছেন।

এদিকে ছাত্র আন্দোলন নিয়ে দায়ের করা বিভিন্ন মামলায় গত মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত ৫৮৭ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বিভিন্ন থানা এলাকায় বিএনপি-জামায়াত-শিবির কর্মীদের বাড়িতে হানা দিয়েছে পুলিশ।

জানা গেছে, গত মঙ্গলবার রাতে বিভিন্ন পাড়া-মহল্লায় সন্দহজনক বাড়িঘরে পুলিশ তল্লাশি চালিয়েছে। এ সময় সন্দেহজনক ব্যক্তিদের আটক করে পুলিশ।

ইন্টারনেট সংযোগ না থাকায় বিভিন্ন নাগরিকসেবা ব্যাহত হচ্ছে। অ্যাপভিত্তিক বিভিন্ন টাকা পাঠানোর মাধ্যম যেমন- বিকাশ, রকেট, নগদসহ বেশ কিছু অ্যাপভিত্তিক গ্রাহকসেবা গ্রহণ করতে না পারায় নানা ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে। ব্যাহত হচ্ছে অ্যাপভিত্তিক বিল পরিশোধের নানা সেবা কর্যক্রম।

যদিওবা বুধবার ইন্টারনেট পরিসেবা স্বল্প পরিসরে চালু করা হয়েছে। কিন্তু এ সেবা দ্রুত সম্পূর্ণভাবে চালু করা হয়, এ বিষয়ে জোর দাবি জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট মহল।