ঢাকা ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

আন্দোলনকারী ছাত্রনেতাদের উদ্দেশ্যে যা বললেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

আন্দোলনকারী ছাত্রনেতাদের উদ্দেশ্যে যা বললেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

কোটা আন্দোলনের সময় রংপুরে হওয়া ক্ষয়ক্ষতি পরিদর্শন শেষে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, কোটা সংস্কারে ৫ পার্সেন্ট মুক্তিযোদ্ধার সন্তান কোটা রাখা হয়েছে। আমরা যারা মুক্তিযোদ্ধা, আমাদের সন্তানদের ৩০ বছর পার হয়েছে অনেক আগে। আমাদের মুক্তিযোদ্ধাদের কোটা এখন জিরো। এখন ৯৮ পার্সেন্ট মেধা কোটা। তারপরও ছাত্রনেতারা এখনো কেউ বলল না, আমাদের আন্দোলন আমরা বন্ধ করলাম। কালকে থেকে ভার্সিটিতে যেতে চাই। তাই ছাত্রনেতাদের বলতে চাই, তোমরা ভুল করছ। এখনো যদি তোমরা ভুল করে থাকো। এই যে সম্পদ নষ্ট হলো, অনেক মানুষ মারা গেলো। এর দায়িত্বটা কে নেবে? নিজের কাছে প্রশ্ন কর, তারপর সিদ্ধান্ত নাও। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে রংপুর জেলা শিল্পকলা একাডেমি হলরুমে প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সাথে মতবিনিময়কালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এই আহ্বান জানান।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, যারা যারা দেশের সম্পদ নষ্ট করেছে, থানা লুট করেছে, ভার্সিটির সম্পদ নষ্ট করেছে, ভিসিকে হত্যার চেষ্টা করেছে, সবাইকে চিহ্নিত করা হবে। যারা অর্থায়ন করেছে, তাদের চিহ্নিত করা হবে। বিচারের ব্যবস্থা করা হবে। আমরা কাউকে ছাড় দেব না। যেই পর্যন্ত আমরা সবাইকে শনাক্ত করতে না পারব, সেই পর্যন্ত আমাদের পুলিশি অভিযান, র‌্যাবের অভিযান, বিজিবির অভিযান, আনসারের অভিযান চলবে। সেই সাথে পাশে সেনাবাহিনী আছে থাকবে। আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, প্রধানমন্ত্রী কোটা বিলুপ্ত করে দিলেন। তারপর দুজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান সংক্ষুব্ধ হয়ে হাইকোর্টে রিট করলেন। এরপর ছাত্ররা কোটা আন্দোলন শুরু করে দিলেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বললেন, এটা কোট যেহেতু করছে, তোমরা কোর্টে একটা আবেদন কর। ছাত্ররা তা না করে রাষ্ট্রীয় সম্পদ বিনষ্টের আন্দোলন শুরু করে দিলেন। এরপর সেতু ভবন পুড়ে দিলেন, ত্রাণ অধিদফতরে আগুন দিলো। কোটা আন্দোলনের সাথে সেতু ভবনে, ত্রাণ অধিদফতরের সাথে কী সম্পর্ক। কোটা আন্দোলনের সাথে বিটিভির কী সম্পর্ক। মেট্রোরেলে আগুন দিলো। পরিকল্পিতভাবে হাজার হাজার মানুষ ঢাকায় প্রবেশ করে দেশের সম্পদ বিনষ্ট করল।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, নরসিংদী জেলখানায় হামলা করে কাদের ছিনিয়ে নিয়ে গেল, তাদের লোককে। যারা জঙ্গি, তাদের ছিনিয়ে নিল। তারা শুধু রংপুরের থানা নয়, যাত্রাবাড়ী থানা, মোহাম্মদপুর থানা, উত্তরা থানায় আক্রমণ চালিয়েছে। তাদের উদ্দেশ্য ছিল দেশকে ধ্বংস করা। তবুও পুলিশ মনোবল হারায়নি। একটানা ২০ ঘণ্টা ধরে তারা ডিউটি করেছে। মতবিনিময় সভায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. জাহাঙ্গীর আলমের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, সংরক্ষিত মহিলা সংসদ সদস্য নাছিমা জামান ববি, রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. মনিরুজ্জামান।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন পুলিশের আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন, রংপুর বিভাগের বিভাগীয় কমিশনার হাবিবুর রহমান, রংপুর রেঞ্জ ডিআইজি মো. আব্দুল বাতেন, আওয়ামী লীগের নির্বাহী সদস্য অ্যাডভোকেট হোসনে আরা লুৎফা ডালিয়া, সংসদ সদস্য জাকির হোসেন, আসাদুজ্জামান বাবলুসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।

মতবিনিময়ের আগে ১৬ জুলাই থেকে পরবর্তী রংপুরে যে সহিংসতা ঘটে তার একটি ভিডিও চিত্র প্রদর্শনী করা হয়। সেটি পরিচালনা করেন রংপুরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোবাশ্বের হাসান। এর আগে, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কোটা আন্দোলনে ক্ষতিগ্রস্ত তাজহাট থানা, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির বাসভবন, রংপুর মহানগর ডিবি কার্যালয়, নবাবগঞ্জ ফাঁড়ি, জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয় পরিদর্শন করেন।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত