জামায়াত-শিবিরের রাজনীতি প্রশাসনিক অর্ডারে বন্ধ করা ঠিক নয়

রংপুরে জাপা চেয়ারম্যান

প্রকাশ : ০১ আগস্ট ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  রংপুর ব্যুরো

জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও বিরোধী দলীয় নেতা, জিএম কাদের এমপি বলেছেন, জামায়াত-শিবিরের রাজনীতি প্রশাসনিক অর্ডারে বন্ধকরা ঠিক নয়। জনগণ তাদের জন্য কোনো রাজনৈতিক দলকে ক্ষতিকারক মনে করণে তারা বয়কট করবে। একসময় সেই রাজনৈতিক দলবিলীন হয়ে যাবে। জোর করে কিছু করলে তাদের যদি গ্রহণযোগ্যতা ও সাংগঠনিক কাঠামো থাকে, তাহলে তারা আন্ডারগ্রাউন্ড হবে, তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করবে। এতে করে অস্বাভাবিক রাজনীতির বীজ বপণ হতে পারে। গতকাল বুধবার বিকাল সাড়ে ৩টায় রংপুরে দুদিনের সফরে এসে সার্কিট হাউজে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি। তিনি বলেন, সরকারি দল রাষ্ট্রীয় সম্পদ ও কর্মকর্তাদের ব্যবহার জনগণের ওপর গুলিবর্ষণ করিয়ে ভীতিকর পরিবেশ তৈরি করে দমন-নিপীড়নের মাধ্যমে তাদের মতামত চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে। যারা দেশের জনগণ ও রাষ্ট্রকে রক্ষা করবে, তারা জনগণের ওপর বন্দুক তাক করে রয়েছে।

জিএম কাদের বলেন, সরকার যাদের নির্বিচারে গুলি করে হত্যা করেছে, তাদের কাউকে সন্ত্রাসী হিসেবে চিহ্নিত করার সুযোগ পায়নি। আমার প্রশ্ন হলো- তাহলে কেন নির্বিচারে এমন গণহত্যা করা হলো। হেলিকপ্টার থেকে, বাড়ির ছাঁদ থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কীভাবে বুঝলো- কে সন্ত্রাসী, কে ভালো, কে শিশু। সরকারের এমন কর্মকাণ্ডে আজ দেশের অর্থনীতি চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বহির্বিশ্বে দেশের সুনাম ক্ষুণ্ণ হয়েছে। দেশে অর্থনৈতিক সমস্যা দেখা দিলে রাজনৈতিক অস্থিরতা বাড়বে। আবারও জনগণ মাঠে নামবে, মানুষ মারা যাবে। একসময় বাংলাদেশ বহির্বিশ্বে সন্ত্রাসী জাতি হিসেবে চিহ্নিত হবে। আমি মনে করি, এ থেকে উত্তোরণে সরকারকে এগিয়ে আসতে হবে।

জিএম কাদের বলেন, সংঘর্ষের শুরু থেকে বিএনপি-জামায়াত বলে বলে যতবার সরকার যেভাবে প্রচার করুক না কেন, আমি ঢাকায় দেখেছি, মানুষের সঙ্গে কথা বলেছি। জনগণ সরকারের এ কথা গ্রহণ করেনি। এটি জনগণের সংগ্রাম। বিএনপি-জামায়াত-জাতীয় পার্টির কেউ থাকলে তারা ব্যক্তিগতভাবে আন্দোলনে গিয়েছিল।

জামায়াত-শিবিরের রাজনীতি বন্ধ নিয়ে জিএম কাদের বলেন, কোনো রাজনৈতিক দলকে প্রশাসনিক অর্ডারে বন্ধ করা ঠিক নয়। জনগণ তাদের জন্য কোনো রাজনৈতিক দলকে ক্ষতিকারক মনে করণে তারা বয়কট করবে। একসময় সেই রাজনৈতিক দল বিলীন হয়ে যাবে। জোর করে কিছু করলে তাদের যদি গ্রহণযোগ্যতা ও সাংগঠনিক কাঠামো থাকে, তাহলে তারা আন্ডারগ্রাউন্ড হবে, তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করবে। এতে করে অস্বাভাবিক রাজনীতির বীজ বপণ হতে পারে। কোটা আন্দোলন নিয়ে জিএম কাদের বলেন, কোটা আন্দোলনে নির্বিচারে যাদের গুলি করে হত্যাকারীদের নিরপেক্ষ তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাচ্ছি। এ ছাড়া মানুষকে হয়রানি, মামলা-মোকদ্দমায় ফেলা হচ্ছে। মামলা দেয়া হলো একজনকে পঙ্গু করে দেওয়া। মামলা হলে আদালতে যাওয়া, জামিন নেওয়া, মামলা মোকাবিলা করাসহ নানান সমস্যা জর্জরিত হয়ে ছাত্ররা নিঃস্ব হয়ে যাবে। আমি ছাত্রদের নামে মামলা দেওয়ার ঘটনাটি ঘর্ণার সঙ্গে প্রতিবাদ করি। আওয়ামী লীগও একসময় বিএনপি দ্বারা এমন নির্যাতনের শিকার হয়েছিল। তখন জাতীয় পাটির পক্ষ থেকে আমরা এর প্রতিবাদ জানিয়েছিলাম। পরে তিনি তার বাবা-মার কবর জিয়ারত করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন, জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান, সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা, জাতীয় পার্টির ভাইস চেয়ারম্যান এসএম ইয়াসিরসহ জেলা ও মহানগর জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীরা।