সংবাদ সম্মেলনে কাদের

ছদ্মবেশে মিছিলে ঢুকে গুলি করে জঙ্গিরা

প্রকাশ : ০২ আগস্ট ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  নিজস্ব প্রতিবেদক

সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি সংস্কার আন্দোলন ঘিরে শিক্ষার্থীদের মিছিলে ছদ্মবেশে ঢুকে জঙ্গিরা গুলি করেছে বলে দাবি করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। গতকাল বৃহস্পতিবার আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডিস্থ রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন সেতুমন্ত্রী।

তিনি বলেন, ‘আন্দোলনে হতাহত অনেকেই মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। আন্দোলনকারীদের মিছিলে অনুপ্রবেশকারী ঢুকে খুব কাছে থেকে তাদের গুলি করে। জঙ্গিরা ছদ্মবেশে আন্দোলনে ঢুকে কাছ থেকে গুলি করেছে। এ ঘটনা ঘটেছে বলেও আমাদের কাছে তথ্য আছে।’

চলমান সহিংস কর্মকাণ্ড এখানেই শেষ, তা এই মুহূর্তে বলা যায় না মন্তব্য করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, যে সহিংস কর্মকাণ্ড চলেছে এখানেই যে তার শেষ তা এই মুহূর্তে বলা যায় না। সহিংসতা এই মুহূর্তে দৃশ্যত স্বাভাবিক মনে হলেও এই জঙ্গিগোষ্ঠীর এখন যে নীরবতা, সেই নীরবতা তাদের পুনঃআক্রমণের পূর্ব প্রস্তুতি হতে পারে।

সহিংসতা প্রতিরোধে আওয়ামী লীগ সতর্ক রয়েছে জানিয়ে সেতুমন্ত্রী বলেন, আমাদের যারা জনপ্রতিনিধি, তারা সতর্ক আছে। সারা দেশে আমরা তাদের সতর্ক থাকতে বলেছি।

ওবায়দুল কাদের বলেন, দেখামাত্র গুলির নির্দেশনা, এ বিষয়ে ভুল বার্তা দেয়া হচ্ছে। কোনো আন্দোলনকারীর ওপর গুলি করার নির্দেশনা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে কখনো দেয়া হয়নি। সেনাবাহিনী কোথাও একটা গুলি ছুড়েছে, এ ধরনের তথ্য আমাদের জানা নেই। তারপরও তদন্ত হচ্ছে। তদন্তে সব বের হয়ে আসবে। তদন্তের মাধ্যমে অপরাধীকে চিহ্নিত করা হবে।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে সেতুমন্ত্রী বলেন, নিরপরাধ কাউকে যেন হয়রানি করা না হয়। নিজের সাম্প্রতিক এক বক্তব্যকে কিছু গণমাধ্যম ভুলভাবে উপস্থাপন করেছে উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, আমাদের কোনো বক্তব্য, মন্তব্য প্রকাশ করতে গিয়ে আপনাদের স্পেস সংকট থাকলে আমাদের কিছু বলার নাই। কিন্তু আমি বললাম, সেদিন ঢাকা জেলার একটি ত্রাণ বিতরণ অনুষ্ঠানে। যারা ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে, তাদের আরেকটা লক্ষ্য ছিল গণভবন। আমি কখনো বলিনি, গণভবন রক্ষার জন্য কারফিউ জারি করা হয়েছে। এটা আমার ওপর অন্যায়। জনগণের জানমাল রক্ষার জন্য সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। গণভবন রক্ষার জন্য নয়।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ড. মুহাম্মদ ইউনূস একটি বিবৃতিতে বাংলাদেশের ওপর হস্তক্ষেপ করার জন্য বিভিন্ন দেশের সরকার, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে আহ্বান জানিয়েছে। এ ধরনের বিবৃতি বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী রাষ্ট্রদ্রোহিতা পর্যায়ে পড়ে। এটা আন্তর্জাতিক আইনেরও চরম লঙ্ঘন। বাংলাদেশে একটা মধ্যবর্তী নির্বাচনের জন্য বিভিন্ন দেশে আহ্বান জানিয়েছেন। তার এই কর্মক্রম বেআইনি। তার এ আহ্বান বাংলাদেশকে আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে ছোট করেছে। দেশকে তিনি খাটো করেছেন। তিনি একজন নোবেল জয়ী। তার পক্ষে কি এটা শোভা পায়?

ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে যখন মামলা চলমান আছে, তখন তিনি এ ধরনের কার্যক্রম করছেন। যা ষড়যন্ত্র বলে মন্তব্য করেন ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, এ থেকেই বোঝা যায়, চলমান বিচার থেকে নিজেকে বাঁচানোর জন্য তিনি এ ধরণের ষড়যন্ত্র করছেন। তার বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিয়ে সরকারসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে আহ্বান জানাচ্ছি। এ সময় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, আহমেদ হোসেন, বিএম মোজাম্মেল হক, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিনসহ কেন্দ্রীয় কমিটির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।