ঢাকা ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

শিক্ষার্থীরা ক্লাসে ফিরে যাবে, প্রত্যাশা কাদেরের

রাষ্ট্রের শান্তি-শৃঙ্খলা নিরাপত্তা বিবেচনায় নেয়া উচিত

রাষ্ট্রের শান্তি-শৃঙ্খলা নিরাপত্তা বিবেচনায় নেয়া উচিত

কোটা পদ্ধতি সংস্কারের মধ্যদিয়ে শিক্ষার্থীদের মূল দাবি পূরণ হয়েছে মন্তব্য করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, শিক্ষার্থীদের ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে একটি মহল সরকার বনাম শিক্ষার্থীদের দুই মেরুতে দাঁড় করিয়ে ফায়দা লোটার অপচেষ্টা করছে। তবে রাষ্ট্রে শান্তি-শৃঙ্খলা-জানমালের নিরাপত্তা সবার বিবেচনায় নেয়া উচিত। গতকাল শুক্রবার রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির কার্যালয়ে প্রেসব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেন ওবায়দুল কাদের।

শিক্ষার্থীরা শ্রেণিকক্ষে-পরীক্ষার হলে ফিরে যাবে এ প্রত্যাশা ব্যক্ত করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, শিক্ষার্থীদের মূল দাবি পূরণ হয়েছে। শিক্ষার্থীরা কোনো অবস্থাতেই সরকারের প্রতিপক্ষ নয়। আদালতে রায়ের পর দ্রুত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। তারপরও একটি মহল সরকার বনাম শিক্ষার্থী গেম খেলে ফায়দা লোটার অপচেষ্টা করছে। শিক্ষার্থীদের পুঁজি করে ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে। তিনি বলেন, প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্তে বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিশনের আওতা বাড়ানো হয়েছে। তিনজন বিচারপতিকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। তদন্তে জাতিসংঘসহ যে কোনো দেশ কিংবা সংস্থা চাইলে যোগ দিতে পারে। সরকার তাকে স্বাগত জানাবে। ওবায়দুল কাদের বলেন, নিহতদের পরিবারের প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করেছেন। তাদের অনেকের পরিবারকে আর্থিক সহায়তা দিয়েছেন। আহতদের দেখতে রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতাল পরিদর্শনে গেছেন।

এ সময় শিক্ষার্থীদের আটক নিয়ে সেতুমন্ত্রী বলেন, শিক্ষার্থীদের অযথা হয়রানি অথবা আটক না করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এইচএসসি পরীক্ষার্থীরা যেন নির্বিঘ্নে পরীক্ষায় অংশ নিতে পারে সেজন্য পুনঃসময়সূচি করা হয়েছে। শিক্ষার্থীদের প্রধান দাবি যেহেতু পূরণ হয়েছে, সেহেতু বিশ্বাস করি শিক্ষার্থীরা শ্রেণিকক্ষে, পরীক্ষার হলে ফিরে যাবে। তারা কোনো অশুভ শক্তির ঢাল হিসেবে ব্যবহার হোক এটা জাতি চায় না।

নাগরিক সমাজকে গুরুত্ব দিয়ে সেতুমন্ত্রী বলেন, তাদের ব্যক্তিগত মতামত কাজে লাগিয়ে তৃতীয় কোনো পক্ষ যাতে ফায়দা নিতে না পারে। রাষ্ট্রে শান্তি-শৃঙ্খলা, জনগণের জানমালের নিরাপত্তার বিষয়টি সবার বিবেচনায় নেয়া উচিত।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ৯ দফা দাবির একটি হলো, ‘ছাত্র হত্যার দায় নিয়ে সেতুমন্ত্রী এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে নিজ নিজ মন্ত্রণালয় ও দল থেকে পদত্যাগ করতে হবে।’ এ প্রসঙ্গ টেনে সংবাদ সম্মেলনে একজন গণমাধ্যমকর্মী প্রশ্ন করেন, ‘শিক্ষার্থীদের প্রধান দাবি কোটা সংস্কারের। সেটা সরকার মেনে নিয়েছে। এখন তারা ৯ দফা দাবি দিয়েছে। এই ৯ দফার মধ্যে আপনার এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পদত্যাগসহ বেশ কয়েকটা দাবি আছে। এ দাবির ব্যাপারে আপনারা কী ভাবছেন?’

উত্তরে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘দেখুন, আমি একটা কথা পরিষ্কার করে বলতে চাই, আমি আজকেও বলেছি, সরকার অলরেডি বিচারবিভাগীর তদন্ত কমিশন গঠন করেছে। এতে তিন জন বিচারপতি, জাতিসংঘসহ যেসব দেশ এই তদন্তের ব্যাপারে আগ্রহ প্রকাশ করবে, আমরা তাদেরও স্বাগত জানিয়েছি। তদন্তকাজে তারাও অংশ নিতে পারে।’

তিনি বলেন, ‘এখন কে অপরাধী, কে অপরাধী নয়, প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের তদন্ত করতে আমরা বদ্ধপরিকর। সেটাও ওই যে তদন্ত কমিশন, তার কার্যপরিধির আওতার মধ্যে পড়ে। কাজেই এ বিষয়টি সেখানেই থাকবে, সেখানেই সিদ্ধান্ত হবে।’

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, জামায়াত-শিবির নিষিদ্ধে দেশের জনগণ সাধুবাদ জানালেও অসন্তুষ্ট বিএনপি। দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুলের বিবৃতিতে স্পষ্ট বিএনপির সঙ্গে জামাতের সম্পর্ক কতটা নিবিড়। সে কারণে তারা জামায়াত-শিবির নিষিদ্ধের সিদ্ধান্তকে সাংবিধানিক ও অগণতান্ত্রিক বলেছেন। বিএনপি-জামায়াত সব সময় গাটছড়া বেধে পথ চলেছে।

সেতুমন্ত্রী বলেন, উদ্ভূত পরিস্থিতি নিরাসনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের পেশাজীবী ও নাগরিক সমাজের সঙ্গে মতবিনিময় শুরু করেছেন। পর্যায়ক্রমে সবার সঙ্গেই মতবিনিময় করবেন তিনি।

প্রেস ব্রিফিংয়ে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, মির্জা আজম, সুজিত রায় নন্দী, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়াসহ কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের নেতারা।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত