গ্যাস সংকট কাটছে না মধ্য আগস্টের আগে

প্রকাশ : ০৩ আগস্ট ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  নিজস্ব প্রতিবেদক

সামিটের এলএনজি টার্মিনাল ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে গ্যাস সংকট দেখা দিয়েছে। আগামী ১১ আগস্ট থেকে সামিটের তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) টার্মিনাল আবার সরবরাহ শুরু করতে পারবে বলে জানা গেছে। এতে সাম্প্রতিক সময়ের গ্যাস সংকট কেটে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।

প্রসঙ্গত, ঘূর্ণিঝড় রেমালে টার্মিনাল ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পর সেটি সিঙ্গাপুরে নেয়া হয় মেরামতের জন্য। এর ফলে কয়েক মাস ধরেই দেশের বিদ্যুৎ উৎপাদন, শিল্প, বাণিজ্য; এমনকি বাসা-বাড়িতেও গ্যাসের ঘাটতি দেখা দিয়েছে।

এদিকে গত বুধবার পেট্রোবাংলার সর্বশেষ হিসাবে ২ হাজার ৬৩৪ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস গ্রিডে সরবরাহ করেছে। এর মধ্যে একটি এলএনজি টার্মিনাল থেকে সরবরাহ করা হয়েছে ৬০৫ মিলিয়ন ঘনফুট। বাকিটা দেশের গ্যাস খনি থেকে পাওয়া গেছে।

দেশে সামিট ছাড়াও মার্কিন কোম্পানি এক্সিলারেট এনার্জির একটি ভাসমান টার্মিনাল রয়েছে। ওই টার্মিনাল দিয়েই এলএনজি পাওয়া যাচ্ছে এখন।

ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পর গত ১৩ জুলাই সামিটের এলএনজি টার্মিনাল বাংলাদেশের উপকূলে এসে পৌঁছায়। তখন পেট্রোবাংলার তরফ থেকেবলা হয়েছিল, আগামী ১৫ দিনের মধ্যে গ্রিডের সঙ্গে পাইপলাইন জুড়ে দিলেই আবার সরবরাহ করতে পারবে টার্মিনালটি। সেই হিসাবে ২৮ জুলাই এই টার্মিনাল আবার উৎপাদনে আসার কথা ছিল। গত বুধবার কয়েকটি গণমাধ্যমকে বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেছেন, সামিটের এলএনজি টার্মিনালের গাস সরবরাহ করতে আর ১০ দিন সময় প্রয়োজন হবে।

প্রতিমন্ত্রীর এমন বক্তব্যর পর গত বৃহস্পতিবার সামিটের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে প্রতিষ্ঠানটির একজন পদস্থ কর্মকর্তা বলেন, ‘আমরা চেষ্টা করছি। আশা করছি ১১ আগস্ট থেকেই গ্যাস সরবরাহ করা সম্ভব হবে।’ তবে তিনি জানান, যেহেতু এখন সাগর কিছুটা উত্তাল থাকে, তাই কিছুটা দেরিও হতে পারে। এ বিষয়ে প্রতিষ্ঠানটির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেন তিনি।

সামিটের আনুষ্ঠানিক বক্তব্য জানার জন্য সামিট করপোরেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফয়সাল খান বলেন, ‘সাগরের নিচে পাইপলাইনের কাজে বিশেষ জটিলতা রয়েছে। বাংলাদেশের সাম্প্রতিক আবহাওয়া সেটিকে আরো কঠিন করে তুলেছে। আন্তর্জাতিক লাইসেন্স রয়েছে এবং যারা বিশেষভাবে পারদর্শী, তারাই মুরিং সিস্টেমের কাজ করছেন। আমরা আশা করছি আগামী ১০ দিনের মধ্যে এই কাজ শেষ হবে। কিন্তু সাগরের ৩০ মিটার গভীরতা এবং বৈরী আবহাওয়ায় আমাদের কাজে কোনো কারণে দেরিও হতে পারে।’ এর আগে গত ৪ জুলাই সংবাদ সম্মেলন করে জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, জুলাইয়ের মাঝামাঝি সময়ে দেশে গ্যাসের সরবরাহ স্বাভাবিক হবে।

দেশে এখন মোট গ্যাসের চাহিদা রয়েছে দৈনিক ৪ হাজার মিলিয়ন ঘনফুট। কিন্তু দুটি টার্মিনাল সচল থাকলে তিন হাজার ১০০ থেকে তিন হাজার ২০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করা হয়। তবে একটি টার্মিনালের সর্বোচ্চ ব্যবহার করে এখন সরবরাহ করা হচ্ছে গড়ে ২ হাজার ৬০০ মিলিয়ন ঘনফুট। এতে অন্তত ৫০০ মিলিয়ন ঘনফুটের অতিরিক্ত ঘাটতি সৃষ্টি হয়েছে। এতে বিদ্যুৎ উৎপাদন কমানোর সঙ্গে শিল্পকারখানায়ও সংকট সৃষ্টি হয়েছে। বাসাবাড়িতেও ঘাটতি মোকাবিলা করা সম্ভব হচ্ছে না।