ঢাকা ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

ছাত্র আন্দোলন

দেশবাসীকে শামিল হওয়ার আহ্বান মির্জা ফখরুলের

দেশবাসীকে শামিল হওয়ার আহ্বান মির্জা ফখরুলের

ছাত্রদের চলমান আন্দোলনে শুধু সমর্থন নয় সব রকমের সহযোগিতা থাকবে বিএনপির। একইসঙ্গে দেশবাসীকে এই আন্দোলনে শামিল হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। পাশাপাশি নেতাকর্মীদেরও এই আন্দোলনে সব ধরনের সহযোগিতা করার আহ্বান জানান তিনি। গতকাল শনিবার দুপুরে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী এবং

নজরুল ইসলাম খানের বাসায় তাদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করে সাংবাদিকদের কাছে তিনি এসব কথা বলেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, আমি বলব যে, দেশে এখন একটা গণজাগরণ শুরু হয়ে গেছে। আপনারা লক্ষ্য করে দেখছেন যে, এখন শিক্ষার্থীদের কোটা বৈষম্যবিরোধী যে আন্দোলন সেই আন্দোলনে সাধারণ মানুষ যোগ দিয়েছে। শুধু ছাত্ররা নয়, এখন অভিভাবক, চিকিৎসক, আইনজীবী, শিল্পী-সাংস্কৃতিক কর্মী, সাংবাদিকসহ সব পেশার মানুষ এই আন্দোলনে যুক্ত হয়েছেন। তারা যুক্ত হয়েছেন সব ভয়কে উপেক্ষা করে। এবারের আন্দোলনের সবচেয়ে বড় দিক হচ্ছে, মানুষ অন্যায়ের বিরুদ্ধে তারা জেগে উঠেছেন এবং জাগরণ সৃষ্টি হয়েছে।

তিনি বলেন, আমি মনে করি যে, এই আন্দোলন তার বিজয়ের দ্বারপ্রান্তে এসে গেছে। বিশ্বাস করি জনগণের বিজয় অবশ্যই হবে, ছাত্র-শিক্ষার্থীদের বিজয় অবশ্যই হবে। বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমরা প্রথম দিন থেকে, ছাত্ররা যখন আন্দোলন শুরু করেছে তখনই এর যে যৌক্তিকতা, তা নিয়ে আমরা কথা বলেছি, তাদের সঙ্গে সহযোগিতা শুধু নয়, তাদের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করেছি। আরো বেশি দৃঢ়তার সঙ্গে বলতে চাই, ছাত্রদের এই যৌক্তিক আন্দোলন এ আন্দোলনে আমাদের শুধু সমর্থন নয়, আমাদের সব রকমের সহযোগিতা থাকবে। যেহেতু শিক্ষার্থীদের আন্দোলন এটা; সেজন্য রাজনৈতিক দল হিসেবে আমাদের যে দায়িত্ব-কর্তব্য সেই দায়িত্ব-কর্তব্য পালন করছি, করতে থাকব। আমাদের সারা দেশে সব নেতাকর্মীদের প্রতি এই আহ্বান জানাতে চাই যে, ছাত্রদের এই যৌক্তিক আন্দোলনে সবাইকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করতে হবে।

মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা যেটা সব সময় বলে আসছিলাম, তরুণদের জাগ্রত হওয়ার কথা। সেই তরুণরাই এবার জেগে উঠেছে। এজন্যই আমরা অত্যন্ত আশাবাদী। এ কারণে, তরুণরা যখন জেগে ওঠে, ছাত্ররা যেখানে জেগে ওঠে, যুবকরা যেখানে জেগে ওঠে সেই আন্দোলনকে পরাজিত করা কারো পক্ষে সম্ভব নয়। তিনি বলেন, আজ ভয়াবহ যে দানবীয় ফ্যাসিস্ট সরকার তারা যেভাবে হত্যা করেছে, সেটা অবর্ণনীয়, ভাষায় বর্ণনা করার মতো নয়। শত শত ছাত্রদের তারা হত্যা করেছে। আমরা যখন দেখতে পাই যে, তাদের গণকবর দেওয়া হয়েছে। আমি যেটা দেখলাম পত্রিকায় ৫৯ জনকে গণকবর দেওয়া হয়েছে। এটা পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীকেও তো হার মানিয়ে যাচ্ছে। চিন্তাই করা যায় না! এর আগে গতকাল শনিবার সকাল ১১টায় বিএনপি মহাসচিব প্রথমে যান বনানী ডিওএইচএসে দলের কারাবন্দি স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খানের বাসায় তার অসুস্থ স্ত্রী কান্তা ইসলামকে দেখতে যান। এই সময়ে তার ছেলে অনিক খান, স্ত্রী রাবেয়া আক্তার রাখি খান উপস্থিত ছিলেন।

পরে বনানীতে কারাবন্দি স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীর স্ত্রী তাহেরা খসরুর সঙ্গে দেখা করেন। এ সময় তার ছেলে ইসরাফিল খসরু উপস্থিত ছিলেন। গত ২১ জুলাই নজরুল ইসলাম খান ও আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীকে তাদের বাসা থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা গ্রেপ্তার করে। বিএনপিসহ অন্যান্য যাদের গত এক মাস ধরে গ্রেপ্তার করা হয়েছে তারা অমানবিক জীবন-যাপন করছে জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, কারাগারে পরিবারের লোকজনদের সঙ্গে তাদের দেখা করতে দেওয়া হচ্ছে না। এমনকি ওষুধপত্র পাঠাতেও দেওয়া হচ্ছে না। মির্জা ফখরুল বলেন, দেশে একটি গণজাগরণ শুরু হয়ে গেছে। ছাত্রদের বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে দেশের সব জনগণ একসঙ্গে যোগ দিয়েছে। এই আন্দোলনের সবচেয়ে বড় দিক হচ্ছে সমস্ত ভয়কে উপেক্ষা করে সমস্ত মানুষ একসঙ্গে যোগ দিয়েছে। তিনি বলেন, এবার তরুণরা জেগে উঠেছে। তরুণদের এই জাগরণ পরাজিত হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। এই অত্যাচার পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীকেও হার মানাচ্ছে। এই আন্দোলন বিজয়ের দ্বারপ্রান্তে। এটার বিচার হবেই।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত