ফের অনির্দিষ্টকালের জন্য কারফিউ, সেনা মোতায়েন

প্রকাশ : ০৫ আগস্ট ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  নিজস্ব প্রতিবেদক

সারা দেশে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন ঘিরে উ™ূ¢ত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সান্ধ্য আইন (কারফিউ) জারি করেছে সরকার। গতকাল সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত গ্রামাঞ্চল বাদে সারা দেশে চলমান কারফিউ বলবৎ থাকবে। গতকাল রোববার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানা গেছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. শরীফ মাহমুদ।

গতকাল বৈষষ্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকা সর্বাত্মক অসহযোগ কর্মসূচি কেন্দ্র করে দেশজুড়ে সংঘর্ষ ও সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। এতে মানুষ নিহত, গাড়ি ভাঙচুর, স্থাপনায় অগ্নিসংযোগ ও ভঙচুরের ঘটনা ঘটে। এমন অবস্থায় দেশের পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে ঢাকা মহানগরসহ সব বিভাগীয় সদর, সিটি কর্পোরেশন, পৌরসভা, শিল্পাঞ্চল, জেলা সদর ও উপজেলা সদরে কারফিউ জারি করেছে সরকার। এখন গ্রাম এলাকা বাদে প্রায় সারা দেশে সন্ধ্যা ৬টা থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য কারফিউ বলবৎ করা হয়েছে।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীর সঙ্গে বৈষম্যবিরোধীদের দেশের বিভিন্ন জেলায় ব্যাপক বিক্ষোভ, সংঘর্ষ ও সহিংসতা হয়। এই উ™ূ¢ত পরিস্থিতিতে সারা দেশে কারফিউ জারি করে সরকার। বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তা করতে সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়। রাজধানী ঢাকার অধিকাংশ মোড়ে সেনাসদস্যরা সতর্ক অবস্থানে। কারফিউর মধ্যেও জরুরি পরিষেবা, রোগীবাহী অ্যাম্বুলেন্স, গণমাধ্যমের গাড়ি ও আন্তর্জাতিক-অভ্যন্তরীণ গন্তব্যের যাত্রীরা টিকিট দেখিয়ে যাতায়াতের সুযোগ থাকছে।

গতকাল দেখা যায়, রাজধানীর যাত্রাবাড়ী, উত্তরা, মেরুল বাড্ডা ও মিরপুরে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষ হয়েছে। কাঁদানে গ্যাসের শেল ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয় পুলিশ। এছাড়া রামপুরা, মালিবাগ, যাত্রাবাড়ী থেকে আন্দোলনকারীরা মিছিল নিয়ে শাহবাগে যান।

সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে গড়ে ওঠা শিক্ষার্থীদের আন্দোলন চরম সহিংস রূপ নিলে গত ১৯ জুলাই কারফিউ জারি করে সরকার। পরে আস্তে আস্তে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে এলে কারফিউ শিথিল করা হয়। গতকাল রোববার থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত সকাল ৬টা থেকে রাত ৯টা (১৫ ঘণ্টা) কারফিউ শিথিল ছিল। কারফিউ ১৫ ঘণ্টা শিথিলের মধ্যে ফের গতকাল সন্ধ্যা ৬টা থেকে অনির্দিষ্ট সময়ের জন্য কারফিউ ঘোষণা করেছে সরকার। সরকার কারফিউ জারি করার পর রাতে সেনাবাহিনীর সদস্যরা বিভিন্ন এলাকায় অবস্থান নেন। পাশাপাশি বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ ও পুলিশ সদস্যরাও সতর্ক পাহারায় আছেন। গতকাল রাতে রাজধানীর বিভিন্ন সড়ক ঘুরে দেখা যায়, গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলো ঘিরে সেনাবাহিনীর উপস্থিতি রয়েছে। কারফিউর সময়েও জরুরি প্রয়োজনে বের হওয়া লোকজনকে জিজ্ঞাসা করে যেতে দিতে দেখা গেছে। আবার কিছু সড়কে যানবাহন প্রবেশ করতে দেয়া হয়নি। কারফিউয়ে রাজধানীর প্রধান বিপণিবিতান ও প্রধান সড়কের পাশের দোকানপাট বন্ধ ছিল। সড়কে মানুষের উপস্থিতি ছিল একেবারেই কম। তবে অলিগলিতে লোকজনকে ঘোরাঘুরি করতে দেখা যায়। জরুরি প্রয়োজনে কেউ কেউ গাড়ি বের করেন। তবে সকালে অসহযোগ আন্দোলনে ঢাকার সড়কে রিকশা ও অল্পসংখ্যক সিএনজিচালিত অটোরিকশা চলাচল করতে দেখা গেছে।