ঢাকা ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

বঙ্গবন্ধুর শাসনামল ছিল উন্নয়নের শক্ত ভিত্তি

বঙ্গবন্ধুর শাসনামল ছিল উন্নয়নের শক্ত ভিত্তি

আজ শোকের মাস আগস্টের পঞ্চম দিন। বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্যদিয়ে সারা দেশেই পালিত হচ্ছে শোকের মাসটি। এসব কর্মসূচিতে স্মরণ করা হচ্ছে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। তিনি স্বাধীন বাংলাদেশের মহান স্থপতি। অথচ তিনি মাত্র সাড়ে তিন বছর সদ্যস্বাধীন বাংলাদেশ পরিচালনার সুযোগ পেয়েছিলেন। সময়ের মাপকাঠিতে এ সময় তেমন একটা বেশি না হলেও বঙ্গবন্ধু এ সময়ের মধ্যে যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটি পুনর্গঠনে একটি ভিত্তি দাঁড় করিয়েছিলেন। সেই ভিত্তির ওপর দাঁড়িয়ে বাংলাদেশ আজ আগামীর পথে এগিয়ে যাচ্ছে। তিনি তার সাড়ে তিন বছর শাসনামলে দেশের প্রতিটি ক্ষেত্রে দিকনির্দেশনা দিয়ে যে পথ দেখিয়েছেন, সরকার সেভাবেই এগিয়ে যাচ্ছে। বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের সার্বিক উন্নয়নে একটি সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা গ্রহণ করেন। বাস্তবায়ন করেছিলেন অনেক অসাধ্য কর্মসূচির। একটি দেশ সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য, বাঙালির হাজার বছরের লালিত স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য, মুক্তিযুদ্ধের চেতনানির্ভর একটি সময়োপযোগী আধুনিক রাষ্ট্র গঠনের জন্য তিনি সম্ভাব্য সব পদক্ষেপ গ্রহণ করেছিলেন। একটি রাষ্ট্রের জন্য এমন কোনো বিষয় নেই, যেখানে তার স্পর্শ পড়েনি। তিনি রেখে গেছেন বাংলাদেশের সব উন্নয়নের শক্ত ভিত। ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি দেশে আসার পর দিন থেকে বঙ্গবন্ধু দেশ পরিচালনার কাজ শুরু করেন। সেদিনই মন্ত্রিসভার সঙ্গে দুদফা বৈঠক করেন এবং বৈঠকে সংবিধান প্রণয়নসহ অনেক গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। ১২ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু অস্থায়ী সংবিধান অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণ করেন এবং নতুন মন্ত্রিপরিষদ গঠন করেন। ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণের পর থেকে বস্তুত তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের সরকারি-বেসরকারি সব সংস্থাসহ সারা দেশ বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে চলে এবং সেনাবাহিনীর বাঙালি অংশ বঙ্গবন্ধুর নির্দেশের অপেক্ষায় থাকে। বঙ্গবন্ধু ১৯৭২ সালে যখন রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব গ্রহণ করেন, তখন যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশের সর্বত্র ছিল পাকিস্তানি দখলদার বাহিনীর ধ্বংসলীলার ক্ষতচিহ্ন। নাগরিকদের খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থানের অভাব ছিল প্রকট। কলকারখানায় উৎপাদন ছিল শূন্যের কোঠায়, যোগাযোগ ব্যবস্থা পুরোপুরি চালু রাখা এবং ১ কোটি শরণার্থীর পুনর্বাসনসহ দেশে অনেক সমস্যা ছিল। যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশের পুনর্গঠন ছিল বঙ্গবন্ধুর সামনে এক বিরাট চ্যালেঞ্জ, যা তিনি সাফল্যের সঙ্গে মোকাবিলা করেন। স্বাধীনতা-উত্তরকালের বাংলাদেশের সার্বিক অবস্থার পর্যালোচনা করে বিশ্বজুড়ে অনেকেই উদ্বেগ প্রকাশ করেন। বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন, স্বাধীনতা-উত্তর বাংলাদেশের ৫০ লাখ মানুষ অনাহারে প্রাণ হারাবে, দেখা দেবে দুর্ভিক্ষ- এমনি এক ভয়াবহ অবস্থায় বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ শাসনভার গ্রহণ করেছিল। নিঃসন্দেহে তার পরিচালনায় আওয়ামী লীগ সরকার প্রাথমিক অসুবিধা ও সংকটগুলো কাটিয়ে উঠেছিলেন। দেশের প্রথম পাঁচশালা পরিকল্পনা প্রণয়ন ও সে অনুযায়ী কার্যক্রম গ্রহণ প্রমাণ করে, বঙ্গবন্ধুর সরকার প্রাথমিক অনিশ্চয়তা কাটিয়ে একটি সুনিশ্চিত পদক্ষেপের দিকে এগিয়ে যাওয়ার সামর্থ্য অর্জন করেছিল। বঙ্গবন্ধু সরকার মুক্তিযোদ্ধাদের রাষ্ট্রীয় মর্যাদা প্রদান, যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসা এবং পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করে। এছাড়া দেশ গড়ার বিভিন্ন কাজে যোগ্যতা অনুযায়ী তাদের নিয়োগ দেন। রিলিফ ও পুনর্বাসনের জন্য বঙ্গবন্ধু দেশের বিভিন্ন স্থানে জনসংখ্যার ভিত্তিতে মঞ্জুরি দেয়ার ব্যবস্থা করেন। তিনি মুক্তিযুদ্ধে ব্যবহার করা অস্ত্র নিজেদের কাছে না রেখে তা ১৯৭২ সালের ৩১ জানুয়ারির মধ্যে সমর্পণের আহ্বান জানান। এতে সব মুক্তিযোদ্ধা সাড়া দিয়ে বঙ্গবন্ধুর কাছে অস্ত্র জমা দেন। স্বাধীনতার পর প্রশাসনিক শূন্যতা ছিল রাজধানীসহ দেশের সর্বত্র। নিরাপত্তার বিষয়টি ছিল আরো বেশি গুরুত্বপূর্ণ। বঙ্গবন্ধু প্রত্যাবর্তনের পর প্রশাসনকে কর্মোপযোগী করে তোলেন। ১৯৭২ সালের ১২ মার্চ ভারতীয় বাহিনী বাংলাদেশ থেকে ভারতে প্রত্যাবর্তন করে। এটা ছিল বঙ্গবন্ধুর একট দূরদর্শী কূটনৈতিক সাফল্য। ৩০ লাখ শহীদ ও ২ লাখ মা-বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে বাংলাদেশ যে স্বাধীনতা অর্জন করেছে, তারই আদর্শ হিসেবে রচিত হলো রক্তে লেখা একটি সংবিধান। সেটা সম্পন্ন করা হয় ১৯৭২ সালের ৪ নভেম্বর। ১৯৭৩ সালে প্রথম সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশের রাজনৈতিক স্বাধীনতা অর্জনের পর জনগণের দারিদ্র্য দূরীকরণ তথা অর্থনৈতিক মুক্তি অর্জনে জাতির পিতা প্রথম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা গ্রহণ করেন। এ পরিকল্পনার মূল লক্ষ্য ছিল দারিদ্র্য দূরীকরণ। এজন্য যারা কর্মহীন বা আংশিক কর্মহীন, তাদের সবার কর্মসংস্থানের আয়োজন করেন তিনি। তাছাড়া জাতীয় আয় বৃদ্ধির সঙ্গে আয় বণ্টনের জন্য যথাযথ আর্থিক ও মুদ্রানীতি প্রণয়ন তরান্বিত করেন। জনগণের অত্যাবশ্যক পণ্যের চাহিদা যাতে মেটানোর জন্য প্রয়োজনীয় পণ্যসামগ্রীর উৎপাদন বাড়ানোর পদক্ষেপ নেন। খাদ্যশস্যের উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন, কৃষিতে কর্মসংস্থানের সুযোগ বৃদ্ধি এবং শ্রমশক্তির শহরমুখী অভিবাসন বন্ধ করে বঙ্গবন্ধু সরকার। বঙ্গবন্ধুর পররাষ্ট্রনীতি ছিল ‘সকলের সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারো প্রতি বৈরী মনোভাব নয়।’ স্বাধীনতার প্রথম তিন মাসের মধ্যে সোভিয়েত ইউনিয়ন, ব্রিটেন ও ফ্রান্সসহ ৬৩ দেশের স্বীকৃতি লাভ করে বাংলাদেশ। পাকিস্তান স্বীকৃতি দিতে বাধ্য হয় দুই বছর দুই মাসের মধ্যে। বঙ্গবন্ধুর আমলে মোট ১২১ দেশ বাংলাদেশকে স্বীকৃতি প্রদান করে। ইসলামের যথার্থ শিক্ষা ও মর্মবাণী সঠিকভাবে ব্যাপক জনগোষ্ঠীর মধ্যে প্রচার ও প্রসারের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করে বঙ্গবন্ধু ১৯৭৫ সালের ২২ মার্চ প্রতিষ্ঠা করেন ইসলামিক ফাউন্ডেশন। ইসলামী আদর্শের যথাযথ প্রকাশ তথা ইসলামের উদার মানবতাবাদী চেতনা বিকাশের লক্ষ্যে একটি বিধিবদ্ধ সংস্থা হিসেবে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠা ছিল জাতির পিতার সুদূরপ্রসারী চিন্তার এক অমিত সম্ভাবনাময় ফসল। বঙ্গবন্ধু সরকার ১৯৭২ সালের ২৪ জানুয়ারি বাংলাদেশ কোলাবরেটরস স্পেশাল ট্রাইব্যুনাল অর্ডার জারি করে। এতে দালাল, যোগসাজশকারী কিংবা কোলাবরেটরদের সংজ্ঞায়িত করা হয় এভাবে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে দখলদার পাকিস্তানি বাহিনীকে বস্তুগত সহযোগিতা প্রদান বা কোনো কথা বলা, চুক্তি ও কার্যাবলির মাধ্যমে হানাদার বাহিনীকে সাহায্য করা; গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা বা যুদ্ধের চেষ্টা করা; মুক্তিবাহিনীর তৎপরতার বিরুদ্ধে ও মুক্তিকামী জনগণের কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে কার্যকর প্রতিরোধ গড়ে তোলা; পাকিস্তানি বাহিনীর অনুকূলে কোনো বিবৃতি প্রদান বা প্রচারে অংশ নেয়া এবং পাকিস্তানি বাহিনীর কোনো প্রতিনিধিদল বা কমিটির সদস্য হওয়া এবং হানাদারদের আয়োজনে উপনির্বাচনে অংশ নেয়া। পরবর্তীকালে একই বছরে এ আইন দুই দফা সংশোধন করা হয়। এ সংশোধনীতে চার ধরনের অপরাধিকে ক্ষমা করা হয়নি। সুনির্দিষ্ট অভিযোগ যাদের বিরুদ্ধে নেই, তাদের ক্ষমা করা হয়। কিন্তু যারা লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, ধর্ষণ ও হত্যাকাণ্ড এ চারটি অপরাধ করেছে, তাদের ক্ষমা করা হয়নি। ১৯৭৩ সালে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশে ৩৭ হাজার ৪৭১ জনকে দালাল আইনে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। ১৯৭৩ সালে অক্টোবর পর্যন্ত ২ হাজার ৮১৮ মামলার সিদ্ধান্ত হয়। এতে একজনের মৃত্যুদণ্ডসহ ৭৫২ দালাল দণ্ডিত হয়। তৎকালীন সরকার আইনগত ব্যবস্থা ত্বরান্বিত করার জন্য ৭৩টি বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন করে। বঙ্গবন্ধু সরকার ১৯৭৩ সালের ১৯ জুলাই ‘ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইম ট্রাইব্যুনাল অ্যাক্ট’ জারি করে, যা পরবর্তী সময়ে আইন হিসেবে সংবিধানে সংযোজিত হয় এবং আজো তা বহাল রয়েছে। ১৯৭২ সালের ১৮ এপ্রিল গেজেট বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে গোলাম আযমের নাগরিকত্ব বাতিল করা হয়। ১৯৭৩ সালের ৪ নভেম্বর সংবিধানের ১২ ও ৩৮ অনুচ্ছেদের মাধ্যমে ধর্মভিত্তিক রাজনীতি নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। সংবিধানের ৬৬ ও ১২২ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, মুক্তিযুদ্ধবিরোধী তথাকথিত ধর্ম ব্যবসায়ীদের ভোটাধিকার ও নির্বাচনে অংশগ্রহণের অধিকার বাতিল করা হয়েছিল। ১৯৭২ সালে সৌদি আরবে মাওলানা আবদুর রশিদ তর্কবাগীশের নেতৃত্বে ছয় সহস্রাধিক বাংলাদেশিকে হজ পালনের জন্য পাঠানো হয়। ১৯৭২ সালের ১৯ মার্চ ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পাদিত হয় ২৫ বছরমেয়াদি বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রীচুক্তি। কুদরাত-এ-খুদা শিক্ষা কমিশন গঠন ও শিক্ষানীতি প্রণয়ন করেন বঙ্গবন্ধু। ১৯৭৩ সালের ১৮-২৪ অক্টোবর জাপান সফরকালে জাপানের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী কাকুই তানাকার সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় আলোচনার মাধ্যমে যমুনা বহুমুখী সেতু নির্মাণের সূচনা করেন বঙ্গবন্ধু। জাতিসংঘের অধিকাংশ সংস্থা বিশেষ করে বিশ্বব্যাংক ও আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের সদস্যপদ লাভ করে বঙ্গবন্ধু সরকার। স্বাধীনতা অর্জনের পরপরই বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে একটি আধুনিক সুসজ্জিত বাহিনী হিসেবে গড়ে তোলার কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করেন বঙ্গবন্ধু। ১৯৭৪ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘে বাংলাদেশ ১৩৬তম সদস্যপদ লাভ করে। ১৯৭৪ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে বঙ্গবন্ধু বাংলায় ভাষণ দেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর ১৯৭৪ সালের ১৪-২১ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় প্রথম জাতীয় সাহিত্য সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধি ছাড়াও বাংলাদেশের প্রথিতযশা সাহিত্যিক ও শিল্পীরা উপস্থিত ছিলেন। ২৫ বিঘা পর্যন্ত জমির খাজনা ও ৫ হাজার টাকার ওপরে কৃষিঋণ মওকুফ এবং ধনী-দরিদ্রের ব্যবধান কমিয়ে এনে সামাজিক অর্থে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে জমি মালিকানার সিলিং পুনর্নিরধারণ ছিল ঐতিহাসিক পদক্ষেপ। বঙ্গবন্ধু সরকার নগরভিত্তিক ও গ্রামীণজীবনের মধ্যে বিদ্যমান বৈষম্য দূরীকরণের পদক্ষেপ হিসেবে প্রাথমিকভাবে ৫০০ ডাক্তারকে গ্রামে নিয়োগ করেন। তৃণমূল পর্যায়ে স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দেয়ার লক্ষ্যে থানা স্বাস্থ্য প্রকল্প গ্রহণ বিশ্বে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। বাংলাদেশের শিল্প-সংস্কৃতি বিকাশের লক্ষ্যে জাতীয় প্রতিষ্ঠান হিসেবে ১৯৭৪ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি গঠন করেন। শূন্য বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ নিয়ে বঙ্গবন্ধু সরকারকে শুরু করতে হয়েছে বৈদেশিক বাণিজ্য। এছাড়া জোটনিরপেক্ষ আন্দোলন, কমনওয়েলথ, জাতিসংঘ, ইসলামী সম্মেলন সংস্থার মতো আন্তর্জাতিক সংস্থায় বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করে বঙ্গবন্ধু তার সুদক্ষ নেতৃত্বের ছাপ রাখতে সমর্থ হন। পারমাণবিক অস্ত্র প্রতিযোগিতা রোধ এবং বিশ্বশান্তির প্রতি ছিল তার দৃঢ় সমর্থন। এক্ষেত্রে তার ভূমিকার স্বীকৃতিস্বরূপ ১৯৭২ সালে বিশ্বশান্তি পরিষদ বঙ্গবন্ধুকে প্রদান করে ‘জুলিও কুরি’ শান্তি পদক। ১৯৭৪ সালের ১৮ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু তার ভাষণে দুর্নীতির বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, দুর্নীতির বিরুদ্ধে কার্যকরী প্রতিরোধ গড়ে তুলতে না পারলে জাতির ভবিষ্যৎ অন্ধকারে ছেয়ে যাবে। দুর্নীতিবাজ, ঘুষখোর, চোরাচালানি, মজুতদারি, কালোবাজারি ও মুনাফাখোরদের সমাজ ও রাষ্ট্রের শত্রু বলে আখ্যায়িত করে বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, এদের শায়েস্তা করে জাতীয় জীবনকে কলুষমুক্ত করতে না পারলে আওয়ামী লীগের দুই যুগের ত্যাগ-তিতিক্ষা এবং স্বাধীনতা আন্দোলনের নেতৃত্বদানের গৌরব ম্লান হয়ে যেতে পারে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত