প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার খবরে রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে বিজয় উল্লাস করছেন ছাত্র-জনতা। জাতীয় পতাকা উড়িয়ে, মাথা, বুক ও পিঠে জাতীয় পতাকা বেঁধে স্লোগান দেন নানান বয়সি মানুষ। অনেকে ছেলে-মেয়ে ও শিশু-সন্তানদেরও নিয়ে আসেন মিছিলে-জমায়েতে। গতকাল সোমবার বিকালে গণমাধ্যমে পদত্যাগের খবর প্রচার হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে রাস্তায় নেমে আসে লাখো লাখো মানুষ।
সরেজমিন দেখা গেছে, ঢাকার শাহবাগ ও গণভবনের দিকে রওনা হয়ে লাখো ছাত্র-জনতা জমায়েত হয়। তারা নেচে গেয়ে বিজয় উল্লাসে মেতে ওঠেন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের স্লোগানগুলো মুহুর্মুহু দিতে থাকেন। বেশি স্লোগান ছিল ‘জেগেছেরে জেগেছে ছাত্র-জনতা জেগেছে’ ইত্যাদি।
কারও কারও হাতে লাঠিসোঁটাও দেখা যায়। মিছিল দেখতে বিভিন্ন সড়কের দু’পাশের অলিগলিতে গৃহবধূরাও ভিড় করেন। খুশিতে মিছিল ও জমায়েতে মিষ্টি, চকলেট ও পানি বিতরণ করেন অনেকে।
এর আগে সব বাধা উপেক্ষা করে গণভবনে প্রবেশ করে সাধারণ মানুষ। গতকাল সোমবার বেলা ৩টায় উল্লাস করতে করতে গণভবনে প্রবেশ করেন সাধারণ মানুষ। তখন গণভবনের সব নিরাপত্তা তুলে নেওয়া হয়। এর আগে লং মার্চ টু ঢাকা কর্মসূচিতে রাজধানীর রাজপথ দখলে নেন আন্দোলনকারী ছাত্র-জনতা। গতকাল দুপুর ২টার পর শাহবাগ, সায়েন্সল্যাব, যাত্রাবাড়ী, রামপুরা, বাড্ডা, খিলগাঁও, মোহাম্মদপুর, মহাখালী, গাবতলীসহ ঢাকার সব গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট দখলে নেয় আন্দোলনকারীরা। শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছাড়েন বলে খবর প্রকাশ করে এনডিটিভি ও এএফপি।
এএফপির খবরে বলা হয়, শেখ হাসিনা ও তার ছোট বোন শেখ রেহানা গণভবন থেকে নিরাপদ স্থানে চলে গেছেন। এএফপি আরো জানান, শেখ হাসিনা যাওয়ার আগে একটি ভাষণ রেকর্ড করে যেতে চেয়েছিলেন। তিনি সে সুযোগ পাননি। ১৯৯৬ সালের ২৩ জুন প্রথমবারের মতো প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন শেখ হাসিনা। এরপর ২০০৮ থেকে ২০২৪ পর্যন্ত টানা তিন মেয়াদে দায়িত্ব পালন করেন তিনি। শেখ মুজিবুর রহমানের বড় মেয়ে শেখ হাসিনা। ১৯৪৭ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় তার জন্ম। শিক্ষাজীবন থেকেই রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন তিনি। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু সপরিবারে নিহত হন। সে সময় শেখ হাসিনা ও তার বোন শেখ রেহানা বিদেশে থাকায় বেঁচে যান। ছয় বছর নির্বাসিত জীবন শেষে ১৯৮১ সালে ১৭ মে আওয়ামী লীগের সভানেত্রী হিসেবেই দেশে ফেরেন তিনি।
