রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বৈঠক

সরকারকে সহযোগিতার আশ্বাস

প্রকাশ : ১৩ আগস্ট ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আনুষ্ঠানিকভাবে বৈঠক করেছে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। বৈঠকে সরকারে নানাভাবে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে রাজনৈতিক দলগুলো। গতকাল সোমবার বিকাল ৪টায় বিএনপিকে দিয়ে এই আলোচনার পর্ব শুরু করেছেন প্রধান উপদেষ্টা নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস। সরকারি বাসভবন যমুনায় এই বৈঠকে অংশ নিতে প্রবেশ করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, সালাউদ্দিন আহমেদ, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও সেলিমা রহমান।

বৈঠক শেষে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জানিয়েছেন, ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে আলোচনা হয়নি। তিনি বলেন, প্রধান উপদেষ্টা আমাদের আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। আমরা বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করেছি। দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে কী কী করা যায়, সে বিষয়ে আমরা মতামত দিয়েছি। তারা আমাদের সঙ্গে শেয়ার করেছেন কী করতে যাচ্ছেন। এখন মনে করি, সরকারকে সহায়তা করা প্রতিটি দেশপ্রেমিক মানুষের একমাত্র কর্তব্য।

এদিন বিকাল সাড়ে ৪টার পর জামায়াতের আমির শফিকুর রহমানের নেতৃত্বে দলটির নেতৃবৃন্দ যুমনায় প্রবেশ করেন। সেখানে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর শীর্ষ নেতৃবৃন্দ।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সঙ্গে বৈঠক শেষে বেরিয়ে জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সঙ্গে নির্বাচন নিয়ে কোনো কথা হয়নি। ওনারা কেবল বসলেন, মাত্র চারটা দিন হলো, আমরা দেখতে চাই ওনারা (অন্তর্বর্তী সরকার) কীভাবে জাতিকে নিয়ে এগোতে চাচ্ছেন। সমস্যাগুলোর সমাধান কীভাবে করেন। যৌক্তিক সময়ে সমাধান হবে বলে আমরা আশাবাদী।

জামায়াতের আমির বলেন, আন্দোলনে যারা শাহাদাতবরণ করেছেন তাদের জন্য দোয়া করেছি। যারা আহত হয়েছেন তাদের প্রতি সহানুভূতি ও সুস্থতা কামনা করেছি। দেশের বিভিন্ন ভালো-মন্দ বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছি।

বিএনপি-জামায়াতের পর এবি পার্টি, ইসলামী আন্দোলন, গণঅধিকার পরিষদ, গণঅধিকার পরিষদ (একাংশ) এবং সন্ধ্যা পৌনে ৭টায় গণতন্ত্র মঞ্চের নেতাদের সঙ্গে কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। এরপর সাড়ে ৭টায় সিপিবি ও বাসদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি।

বৈঠকের আগে বিএনপি নেতারা জানান, দলের পক্ষ থেকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে অভিনন্দন জানানো হবে। পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি, ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের নিরাপত্তা, দেশের অর্থনীতির অগ্রগতি নিয়ে এবং ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে দলের মতামত তুলে ধরবেন।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য বলেন, বিএনপি নতুন সরকারকে অন্তত এক বছর সময় দিতে চায়। এরইমধ্যে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, মহাসচিব মির্জা ফখরুল তিন মাসের মধ্যে নির্বাচনের দাবি করলেও আসলে এক বছর সময় মেনে নেবে বিএনপি।

প্রসঙ্গত, ছাত্র-জনতার গণআন্দোলনে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর দেশজুড়ে নৈরাজ্যকর পরিস্থিতির মধ্যে নোবেলজয়ী মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গত বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের যাত্রা শুরু হয়। সেদিন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টাসহ ১৩ জন উপদেষ্টা শপথ নিয়েছিলেন। তারপর গত রোববার আরো দুই উপদেষ্টা শপথ নেন। ১৬ উপদেষ্টার মধ্যে ফারুক-ই-আজম যুক্তরাষ্ট্রে থাকার কারণে শপথ নিতে পারেননি। তিনি গত রোববার রাতে দেশে পৌঁছেছেন। আজ মঙ্গলবার তার শপথ নেয়ার কথা রয়েছে।