ঢাকা ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

আজ সতর্ক অবস্থানে থাকবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী

আজ সতর্ক অবস্থানে থাকবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী

ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের মধ্য দিয়ে দেশ ছেড়ে যান সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর গত ৮ আগস্ট ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত হয় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। গত বুধবার এক প্রজ্ঞাপনে ১৫ আগস্ট ঘোষিত সাধারণ ছুটি বাতিল করে সরকার। এদিকে দেশের বাইরে থেকে জাতীয় শোক দিবস পালন করতে নেতাকর্মীদের আহ্বান জানিয়েছেন শেখ হাসিনা। দিবসটিকে কেন্দ্র করে পাল্টা কর্মসূচি ও প্রতিরোধের ঘোষণা দিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনসহ ৩৬টি সংগঠন। এমন অবস্থায় যে কোনো ধরনের সংঘর্ষ ও বিশৃঙ্খলা ঠেকাতে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। বাংলাদেশ স্বাধীনতার প্রায় চার বছর পর ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ধানমন্ডির ৩২ নম্বরের নিজ বাড়িতে সপরিবারে হত্যার শিকার হন শেখ মুজিবুর রহমান। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর দিনটিকে জাতীয় শোক দিবস হিসেবে পালন করা হয়। ২০০২ সালে চারদলীয় জোট সরকার দিবসটি বাতিল ঘোষণা করে। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে তখন থেকে প্রতি বছর ১৫ আগস্ট দিনটি জাতীয় শোক দিবস হিসেবে পালিত হয়ে আসছিল। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা বলছেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জাতির জনক। তাকে বাঙালি জাতির পিতা হিসেবে ভূষিত করা হয়েছে। ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিসব যে কোনো মূল্যে পালন করা হবে।

গত মঙ্গলবার রাতে শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে শেখ হাসিনার বক্তব্য তুলে ধরেন। সেখানে ১৫ আগস্টের হত্যাকাণ্ড ও ছাত্র আন্দোলনের বিভিন্ন বার্তা তুলে ধরেন। এছাড়া ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস পালন করার আহ্বান রেখে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেছেন, ‘বঙ্গবন্ধু ভবনে পুষ্পমাল্য অর্পণ ও দোয়া মোনাজাত করে সবার আত্মার মাগফিরাত কামনা করুন। মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিন বাংলাদেশের মানুষের মঙ্গল করুন।’ এছাড়া মঙ্গলবার বিকালে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের লিয়াজোঁ কমিটি এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনসহ ৩৫টি ছাত্রসংগঠন জাতীয় দিবসটি প্রত্যাহার করে প্রতিরোধ করবে। এতে বলা হয়, ১৫ আগস্টকে আওয়ামী ফ্যাসিবাদের রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক প্রতীকে রূপান্তর করা হয়েছে এবং এ দিবসকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে পুনরায় সন্ত্রাসী ও জঙ্গিবাদী কর্মকাণ্ডের ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। তাই জনগণের জান-মালের নিরাপত্তা ও অভ্যুত্থান সংহত করার লক্ষ্যে ১৫ আগস্টের শোক দিবস প্রতিরোধ করা হবে। পুলিশের একাধিক কর্মকর্তা জানান, বর্তমানে দেশে রাজনৈতিক অস্থিরতা বিরাজ করছে। এরমধ্যে ১৫ আগস্ট কেন্দ্র করে সর্বত্র উত্তজনা বিরাজ করছে। একদিকে আওয়ামী লীগ শোক দিবস পালনের ঘোষণা দিয়েছে। অপরদিকে প্রতিরোধের ঘোষণা দিয়েছে ছাত্র সংগঠনগুলোর। এমন অবস্থায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নানা কৌশল নিচ্ছে পুলিশ। যাতে করে কোনো ধরনের অরাজকতা সৃষ্টি না হয়। এদিকে ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস প্রতিরোধে বুধবার (১৪ আগস্ট) দুপুরের পর থেকে ধানমন্ডিসহ বিভিন্ন এলাকায় ছাত্র-জনতা ও বিএনপির নেতাকর্মীরা মিছিল করছেন। এদিন সন্ধ্যায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থী ৩২ নম্বর সড়কের আশপাশে অবস্থান নিয়ে বিভিন্ন স্লোগান দিতে দেখা যায়। পুলিশ সদর দপ্তরের এআইজি ইনামুল হক সাগর একটি গণমাধ্যমকে বলেন, রাজধানীর ঢাকাসহ সারা দেশের শৃঙ্খলা বজায় রাখতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। কোনো ধরনের অরাজকতা পরিস্থিতি যেন সৃষ্টি না হয় সে ব্যাপারেও প্রস্তুত আছে পুলিশ। এছাড়াও ১৫ আগস্টকে কেন্দ্র করে সহিংসতা ঠেকাতে গুরুত্বপূর্ণ জায়গাগুলোতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এর আগে গত মঙ্গলবার বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সদর দপ্তরে বিজিবি হাসপাতলে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন সাংবাদিকদের বলেছেন, ১৫ আগস্ট কোনো কর্মসূচির নামে কেউ যাতে নাশকতা করতে না পারে, সেজন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে থাকবে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত