ঢাকা ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১১ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

বিদ্যুৎ খাতের ­২০১০ বিশেষ আইন বাতিলের দাবি

বিদ্যুৎ খাতের ­২০১০ বিশেষ আইন বাতিলের দাবি

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি দ্রুত সরবরাহ বিশেষ আইন ২০১০ বাতিলের দাবি জানিয়েছেন জ্বালানি বিশেষজ্ঞ, অর্থনীতিবিদ ও বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (বিপিডিবি) কর্মকর্তারা। সেই সঙ্গে বিদ্যুতের দাম পুনর্নিধারণে বেসরকারি প্ল্যান্ট অপারেটরদের সঙ্গে আলোচনা এবং দেশের বিদ্যুৎ খাতকে টিকিয়ে রাখতে ক্যাপাসিটি চার্জ কমানোরও দাবি জানান তারা। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নবনিযুক্ত উপদেষ্টা বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব গ্রহণের ঠিক আগ মুহূর্তে তারা এসব পরামর্শ দেন। সাবেক বিদ্যুৎ সচিব মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খানকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়; সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় এবং রেলপথ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। উচ্চমূল্যে বিদ্যুৎ কিনতে বছরে বিপিডিবির ক্ষতি হচ্ছে ৪৫ হাজার কোটি টাকারও বেশি এবং বেসরকারি কোম্পানির কাছে বকেয়া বিল ৪৫ হাজার কোটি টাকা। দেশের বিদ্যুৎ খাতের এমন সংকটময় মুহূর্তের প্রেক্ষাপটে বিশেষজ্ঞদের কাছ থেকে এই পরামর্শ এসেছে। বেসরকারি বিদ্যুৎ উৎপাদকদের সঙ্গে চুক্তির আওতায় ক্যাপাসিটি চার্জ পরিশোধে প্রতিষ্ঠানটির বার্ষিক ৩৭ হাজার ৯৩ কোটি টাকার বাড়তি বোঝা টানতে হচ্ছে।

সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের গবেষণা পরিচালক ও অর্থনীতিবিদ ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে প্রথমে দেশের বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে বড় ধরনের সংস্কারে মনোনিবেশ করতে হবে। তিনি বলেন, সব ধরনের বৈষম্য দূরীকরণ এবং ক্রয় প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা ও প্রতিযোগিতা নিশ্চিত করতে এই সংস্কারের অংশ হিসেবে প্রথমে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি দ্রুত সরবরাহ বিশেষ আইন ২০১০ বাতিল করতে হবে। তিনি বলেন, পরবর্তী পদক্ষেপ হওয়া উচিত বেসরকারি বিদ্যুৎ উৎপাদকদের সঙ্গে তাদের শুল্ক পুনর্নির্ধারণের জন্য পুনরায় আলোচনা করা, বিশেষ করে যেসব কোম্পানিতে সরকারের দীর্ঘমেয়াদি বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তি রয়েছে এবং একটি গুরুত্বপূর্ণ ন্যূনতম সময় পার করেছে। সিপিডি পরিচালক বলেন, তৃতীয় পদক্ষেপ হতে হবে, যেসব কোম্পানি বিদ্যুৎ কেনার চুক্তির জন্য অযাচিতভাবে নির্বাচিত হয়েছে, তাদের সঙ্গে লেটার অব ইনটেন্ট (এলওআই) বাতিল করতে হবে। বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে সংস্কারের ধারণার সঙ্গে একমত পোষণ করে কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সিনিয়র সহ-সভাপতি ও জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ড. এম শামসুল আলম বলেন, সরকারকে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) পুনর্গঠন করতে হবে এবং ট্যারিফ নির্ধারণ কর্তৃপক্ষের কাছে ফিরিয়ে দিতে হবে। পাশাপাশি বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকেও ঢেলে সাজাতে হবে, যাতে সঠিক নেতৃত্ব আসে। তিনি আরো বলেন, বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দাম বাড়ানোর জন্য সরকারের কোনো পদক্ষেপ নেয়া উচিত নয় এবং অবিলম্বে এই খাতের স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে তাদের পরামর্শের জন্য বসা উচিত। বিদ্যুতের দাম ও ক্যাপাসিটি চার্জ কমানোর বিষয়েও বেসরকারি বিদ্যুৎ কোম্পানিগুলোর সঙ্গে আলোচনা করছেন বিপিডিবির কর্মকর্তারা। গত বছর ক্যাপাসিটি চার্জ পরিশোধের পরিমাণের উপর ভিত্তি করে একজন শীর্ষ কর্মকর্তা জানান, ক্যাপাসিটি চার্জ পুনর্বিবেচনা করে ৫০ শতাংশে নামিয়ে আনা গেলে সরকার বছরে ১৮ থেকে ২০ হাজার কোটি টাকা সাশ্রয় করতে পারবে।

তারা আরো বলেন, বিদ্যমান বিদ্যুৎ ও জ্বালানি দ্রুত সরবরাহ বিশেষ আইন ২০১০ বাতিল করা হলে বিদ্যুৎ খাতে জবাবদিহি ও স্বচ্ছতা আসবে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত