ঢাকা ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ২৯ লাখ মানুষ, ৮ জনের মৃত্যু

বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ২৯ লাখ মানুষ, ৮ জনের মৃত্যু

টানা ভারী বৃষ্টি ও বাঁধ খুলে দেওয়ায় ভারত থেকে নেমে আসা উজানের ঢলে ফেনী, নোয়াখালী, কুমিল্লা, লক্ষ্মীপুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, কক্সবাজার, খাগড়াছড়ি, চট্টগ্রাম, হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজারে দেখা দিয়েছে ভয়াবহ বন্যা। বন্যার পানিতে লাখ লাখ মানুষের বাড়িঘর-ফসলি জমি তলিয়ে গেছে। সেসব এলাকায় তৈরি হয়েছে মানবিক বিপর্যয়। এর মধ্যে চার জেলায় আটজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।

গতকাল বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে চলমান বন্যা নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব কেএম আলী রেজা এ তথ্য জানান। তিনি বলেন- ফেনী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, খাগড়াছড়ি, নোয়াখালী, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা বন্যাকবলিত হয়েছে।

আজ-কাল খোলা থাকবে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় : দাপ্তরিক কাজের প্রয়োজনে আজ শুক্রবার এবং কাল জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের কয়েকটি শাখা খোলা থাকবে। গতকাল জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের প্রশাসন শাখা থেকে এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের দাপ্তরিক কাজের প্রয়োজনে আগামী ২৩ ও ২৪ আগস্ট (শুক্রবার) ও (শনিবার) এপিডি অনুবিভাগের কক্ষগুলো (ভবন নং-০১, ২য় তলা), শৃঙ্খলা অনুবিভাগের সংশ্লিষ্ট কক্ষগুলো এবং সিআর অধিশাখা (ভবন নং-০৩, ৩য় তলা, কক্ষ নং-২০৬-২১০) খোলা রাখা প্রয়োজন। এ অবস্থায় উল্লিখিত কক্ষগুলো, কলাপসিবল গেট এবং লিফট খোলা রাখার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।

আট জেলায় মোট ৪ লাখ ৪০ হাজার ৮৪০টি পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। পানিবন্দি ও ক্ষতিগ্রস্ত লোকদের আশ্রয় দিতে মোট ১ হাজার ৫৩৪টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে এবং আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে মোট ৭৫ হাজার ৬৬৮ জন লোক এবং ৭ হাজার ৪৫৯টি গবাদিপশুকে আশ্রয় দেয়া হয়েছে বলেও জানান অতিরিক্ত সচিব। তিনি বলেন, দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও পূর্বাঞ্চলের প্রধান নদীগুলোর পানি বাড়ছে। আবহাওয়া সংস্থাগুলোর তথ্য অনুযায়ী, আগামী ২৪ ঘণ্টায় দেশের উত্তর, পূর্বাঞ্চল ও তৎসংলগ্ন উজানে ভারি বৃষ্টির প্রবণতা কমে আসতে পারে। এ সময় উত্তর-পূর্বাঞ্চলের মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জ জেলার মনু, খোয়াই, ধলাই নদী সংলগ্ন নিম্নাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতি প্রাথমিকভাবে স্থিতিশীল থেকে পরবর্তী সময়ে উন্নতি হতে পারে। আবহাওয়া সংস্থাগুলোর তথ্য তুলে ধরে আলী রেজা আরো বলেন, আগামী ২৪ ঘণ্টায় দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চল, পূর্বাঞ্চল ও তৎসংলগ্ন উজানে ভারি বৃষ্টির প্রবণতা কমে আসতে পারে। এ সময় এ অঞ্চলের ফেনী, কুমিল্লা ও চট্টগ্রাম জেলার মুহুরী, ফেনী, গোমতী, হালদা ইত্যাদি নদী সংলগ্ন নিম্নাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতি প্রাথমিকভাবে স্থিতিশীল থেকে পরবর্তী সময়ে উন্নতি হতে পারে। অতিরিক্ত সচিব বলেন, ৫০ উপজেলা বন্যা প্লাবিত এবং ক্ষতিগ্রস্ত ইউনিয়ন ৩৫৭টি। আট জেলায় মোট ৪ লাখ ৪০ হাজার ৮৪০ পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত লোকসংখ্যা ২৯ লাখ ৪ হাজার ৯৬৪ জন। মারা গেছেন দুইজন (ফেনীতে একজন ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় একজন)। আট জেলার ক্ষতিগ্রস্তদের চিকিৎসাসেবা দিতে মোট ৪৪৪টি মেডিকেল টিম চালু রয়েছে। এছাড়া দেশের সব জেলায় পর্যাপ্ত ত্রাণসামগ্রী মজুত রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, বন্যা আক্রান্ত জেলাগুলোতে জেলা প্রশাসককে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক, সেনাবাহিনী, মেডিকেল টিম ও অন্যান্য স্বেচ্ছাসেবকদের সঙ্গে সমন্বয় করে একসঙ্গে কাজ করতে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ে সার্বক্ষণিক কন্ট্রোলরুম খোলা হয়েছে। তথ্য ও সহযোগিতার জন্য ০২-৫৫১০১১১৫ নম্বর চালু রয়েছে। ফেনী জেলায় বন্যা উপদ্রুত এলাকায় সেনাবাহিনী ও নৌবাহিনী উদ্ধারকাজে নিয়োজিত রয়েছে। সেনাবাহিনী থেকে ১৬০ জন সদস্য ও ৪০টি উদ্ধারকারী যান ফেনী জেলায় পাঠানো হয়েছে। এছাড়া একটি ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট স্থাপন করা হয়েছে। নৌবাহিনীর ৭১ জন সদস্য ও ৮টি উদ্ধারকারী যান কাজ করছে। এছাড়া বিজিবিসহ আরো নৌযান আনা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন অতিরিক্ত সচিব। ত্রাণ কার্যক্রমের বিষয়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব মোহাম্মদ নাজমুল আবেদীন বলেন, বন্যা দুর্গত আট জেলায় মোট এক কোটি ৮২ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। ত্রাণের চাল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে ১৩ হাজার ৬৫০ টন। এছাড়া শুকনা ও অন্যান্য খাবারের প্যাকেট বরাদ্দ দেয়া হয়েছে ১১ হাজার পিস।

বন্যাকবলিত এলাকায় মোবাইল নেটওয়ার্ক ফ্রি করার নির্দেশ :

পাহাড়ি ঢল আর ভারি বৃষ্টিতে সৃষ্ট আকস্মিক বন্যায় বিপর্যস্ত এলাকায় মোবাইল নেটওয়ার্ক ফ্রি করার নির্দেশ দিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম। গতকাল বৃহস্পতিবার তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা আশরোফা ইমদাদ এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানান। উপদেষ্টা নাহিদ ইসলামের বরাত দিয়ে জানানো হয়, বন্যাদুর্গত এলাকার ১৩ শতাংশ সাইট ডাউন রয়েছে। কয়েকটি উপজেলায় অপটিক্যাল ফাইবার ড্যামেজ হওয়ার কারণে নেটওয়ার্ক বিচ্ছিন্ন হয়েছে। বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন আছে কয়েকটি জায়গা। সেসব জায়গায় জেনারেটর ব্যবহার করা হচ্ছে। বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়, নেটওয়ার্ক একবারে বিচ্ছিন্ন হলে ১০টি ভিএসএটি প্রস্তুত আছে। সংশ্লিষ্ট এলাকায় মোবাইল নেটওয়ার্ক ফ্রি করতে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

বন্যার তথ্য সংগ্রহে কন্ট্রোল রুম চালু

দেশে চলমান বন্যা পরিস্থিতির সার্বিক অবস্থা পর্যবেক্ষণ ও তথ্য সংগ্রহে কন্ট্রোল রুম খুলেছে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়। গতকাল বৃহস্পতিবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, কন্ট্রোল রুমের মোবাইল নম্বর-০১৩১৮২৩৪৫৬০। সার্বিক বিষয়ে ফোকাল পয়েন্ট কর্মকর্তা হিসেবে মনিটরিং করবেন পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব মো. রবিউল আলম (মোবাইল: ০১৯৯২৪৩৯৩৪৭) দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বা কর্মচারীরা চলমান বন্যা পরিস্থিতি বিষয়ে সংশ্লিষ্ট জেলায় স্থাপিত কন্ট্রোল রুম ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের কন্ট্রোল রুমের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রেখে এ বিষয়ে সর্বশেষ তথ্য সংগ্রহ করেবন। এছাড়া সমন্বিত প্রতিবেদন প্রস্তুত করে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব বরাবর প্রতিবেদন জমা দেবেন বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। আকস্মিক বন্যায় দেশের ৯টি জেলার কয়েক লাখ মানুষ পানিবন্দি ও বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছেন। বন্যাকবলিত এসব জেলা হলো ফেনী, সুনামগঞ্জ, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, কুমিল্লা, নোয়াখালী, চট্টগ্রাম, লক্ষ্মীপুর ও খাগড়াছড়ি। ফেনী : ফেনীর বন্যা পরিস্থিতি সম্পর্কে যোগাযোগের নম্বরগুলো তানভীর আহমেদ, এনডিসি ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, ফেনী ৮৮০১৭১৩১৮৭৩০৪ লেফটেন্যান্ট কমান্ডার সাইফুল (নৌবাহিনী) ৮৮০১৭৬৯৭৫৪১০৩ মেজর ফাহিম (সেনাবাহিনী) ৮৮০১৭৬৯৩৩৩১৯২।

বন্যায় কোন জেলায় কত ক্ষতি?

বন্যায় দেশের ৮টি জেলায় ২৯ লাখ ৪ হাজার ৯৬৪ জন মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। ক্ষতিগ্রস্ত এসব জনগণের জন্য জেলাভিত্তিক বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নিয়েছে দুর্যোগ মন্ত্রণালয়। গতকাল বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান দুর্যোগ ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব কে এম আলী রেজা।

ফেনী : ফেনী জেলার ৬টি উপজেলার ১৫টি ইউনিয়ন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, পানিবন্দি ক্ষতিগ্রস্ত লোকসংখ্যা প্রায় ৩ লাখ, বন্যার পানিতে ডুবে ১ জনের মৃত্যু, আশ্রয়কেন্দ্র খোলার সংখ্যা ৭৮টি, আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় গ্রহণকারী লোকসংখ্যা ২০ হাজার। মেডিকেল টিম চালু ৭৬টি, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় হতে নগদ ৪২ লাখ এবং ত্রাণ কার্য (চাল) ১ হাজার ৪০০ টন ও শুকনা খাবার ৩ হাজার প্যাকেট বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।

কুমিল্লা : বন্যায় কুমিল্লা জেলার ১২টি উপজেলার ১২৪টি ইউনিয়ন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, পানিবন্দি পরিবার সংখ্যা ১ লাখ ৫৪ হাজার ৬৬১টি, দুর্যোগকবলিত জনসংখ্যা ১ লাখ ৮৯ হাজার ৬০০ জন, আশ্রয় কেন্দ্রের সংখ্যা ৫৮৭টি, আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় গ্রহণকারী লোকসংখ্যা ৪ হাজার ৩০২ জন এবং গবাদিপশুর সংখ্যা ৬৬৭টি, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় হতে নগদ ২৫ লাখ টাকা এবং ত্রাণ কার্য (চাল) ১ হাজার ৬০০ টন বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।

নোয়াখালী : নোয়াখালী জেলার ৮টি উপজেলার ৮৬টি ইউনিয়ন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, পানিবন্দি পরিবার সংখ্যা ১ লাখ ৮৪ হাজার ৯০০ এবং ক্ষতিগ্রস্ত লোকসংখ্যা ১৯ লাখ ৮০ হাজার জন, আশ্রয়কেন্দ্র খোলার সংখ্যা ৩৮৮টি, আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয়গ্রহণকারী লোকসংখ্যা ৩৬ হাজার ১১৫ জন ও আশ্রিত গবাদিপশুর সংখ্যা ৪ হাজার ৭১৪টি, মেডিকেল টিম চালু ৮৮টি, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় হতে নগদ ২৫ লাখ টাকা এবং ত্রাণ কার্য (চাল) ১ হাজার ৬০০ টন বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।

চট্টগ্রাম : বন্যায় চট্টগ্রাম জেলার ৩টি উপজেলার ৩৮টি ইউনিয়ন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, পানিবন্দি পরিবার সংখ্যা ৩৫ হাজার ৭৫০ এবং ক্ষতিগ্রস্ত লোকসংখ্যা ১ লাখ ৬৩ হাজার ৫০০ জন, আশ্রয়কেন্দ্র খোলার সংখ্যা ২৩৯টি, আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয়গ্রহণকারীর সংখ্যা ১ হাজার ৭২৫ জন এবং ৬২টি গবাদিপশুকে আশ্রয় দেয়া হয়েছে, মেডিকেল টিম চালু ১৩৭টি, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় হতে নগদ ১৫ লাখ টাকা এবং ত্রাণ কার্য (চাল) ১ লাখ ৬০০ টন বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।

মৌলভীবাজার : মৌলভীবাজার জেলার ৬টি উপজেলার ৩৭টি ইউনিয়ন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, পানিবন্দি পরিবার সংখ্যা ২২ হাজার ৫৭৭ এবং ক্ষতিগ্রস্ত লোকসংখ্যা ১ লাখ ১২ হাজার ৬৬৭ জন, আশ্রয়কেন্দ্র খোলার সংখ্যা ১৬টি, আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয়গ্রহণকারীর সংখ্যা ৪ হাজার ৩২৫ জন এবং আশ্রিত গবাদিপশুর সংখ্যা ১৮২টি, মেডিকেল টিম চালু আছে ৩১টি, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় হতে নগদ ১০ লাখ টাকা এবং ত্রাণ কার্য (চাল) ১ হাজার ৮৫০ টন ও শুকনা খাবার ১ হাজার প্যাকেট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

খাগড়াছড়ি : বন্যায় খাগড়াছড়ি জেলার ৮টি উপজেলার ২৭টি ইউনিয়ন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, পানিবন্দি পরিবার সংখ্যা ৩৩ হাজার ৫২২ এবং ক্ষতিগ্রস্ত লোকসংখ্যা ১ লাখ ১০ হাজার ৭১ জন, আশ্রয়কেন্দ্র খোলার সংখ্যা ৯৯টি, আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় গ্রহণকারীর সংখ্যা ৯ হাজার ০১৩ জন এবং আশ্রিত গবাদিপশুর সংখ্যা ১ হাজার ৮৩৪টি, মেডিকেল টিম চালু ১৮টি, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় হতে ত্রাণ কার্য (চাল) ৮০০ টন বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।

হবিগঞ্জ : বন্যায় হবিগঞ্জ জেলার ৫টি উপজেলার ২২টি ইউনিয়ন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, পানিবন্দি পরিবার সংখ্যা ৮ হাজার ২৪০ এবং ক্ষতিগ্রস্ত লোকসংখ্যা ৩৩.৪৬৮ জন, আশ্রয়কেন্দ্র খোলার সংখ্যা ১১৬টি, আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় গ্রহণকারীর সংখ্যা ১৪০ জন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় হতে নগদ ২৫ লাখ টাকা এবং ত্রাণ কার্য (চাল) ১ হাজার ৯০০ টন ও শুকনা খাবার ৩ হাজার প্যাকেট বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া : জেলার ২টি উপজেলার ৮টি ইউনিয়ন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, পানিবন্দি পরিবার সংখ্যা ১১৯০ এবং ক্ষতিগ্রস্ত লোকসংখ্যা ৪ হাজার ৯৯১ জন, মৃত লোক সংখ্যা ১ জন, আশ্রয়কেন্দ্র খোলার সংখ্যা ১১টি, আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় গ্রহণকারীর সংখ্যা ৪৮ জন, মেডিকেল টিম চালু আছে ৬টি, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় হতে নগদ ১৫ লাখ টাকা এবং ত্রাণ কার্য (চাল) ১ হাজার ৬০০ টন বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।

নোয়াখালী : নোয়াখালীতে ফেনীর মহুরী নদীর পানি ঢুকছে। এতে নোয়াখালীর নয়টি উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতি অবনতি হয়েছে। নতুন করে জেলার অনেক এলাকা বন্যার পানিতে প্লাবিত হচ্ছে। এদিকে নোয়াখালীতে গত ২৪ ঘণ্টায় ৭১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত জেলা আবহওয়া অফিস রেকর্ড করেছে। এর মধ্যে নয়টি উপজেলার ২০ লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। গ্রামীণ সব সড়ক, ফসলি মাঠ এখনো পানিতে তলিয়ে আছে। ভেসে গেছে পুকুর ও খামারের মাছ।

মৌলভীবাজারে জামায়াতের হেল্পলাইন চালু : টানা বৃষ্টি ও ভারত থেকে আসা উজানের পানির ঢলে মৌলভীবাজারে ভয়াবহ বন্যায় পানিবন্দি মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য হেল্পলাইন চালু করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী মৌলভীবাজার জেলা।

জেলা জামায়াত প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানায়, যে সব এলাকায় পানি বিপৎসীমায় আছে, সে সব এলাকায় আরো অধিক সতর্ক থাকা ও রাত জেগে পাহারা দেওয়া, বিশেষ করে জেলার প্রাণকেন্দ্র মৌলভীবাজার পৌরসভার এম সাইফুর রহমান রোডে জনগণকে সাথে নিয়ে জামায়াত ও ছাত্রশিবিরে সারারাত পাহারা দেওয়ার জন্য আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী মৌলভীবাজার জেলা। জেলা জামায়াত নেতারা মহান আল্লাহর দরবারে এই আশঙ্কাজনক পরিস্থিতি থেকে সহজে উত্তোরণের জন্য দোয়া করেন।

তিতাসে পানিবন্দি দুই ইউনিয়নের অধিকাংশ গ্রাম : কুমিল্লার তিতাসের গোমতীর নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় ডুবন্ত বাঁধ ডুবে গেছে। গত বুধবার গভীর রাত থেকে উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হচ্ছে। বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছে গ্রাম থেকে গ্রাম।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত