ঢাকা ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

একই হত্যা মামলার আসামি হাসিনা-সাকিব-ফেরদৌস

সাভারে হাসিনা-কাদেরসহ ১২৬ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা

সাভারে হাসিনা-কাদেরসহ ১২৬ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা

জাতীয় দলের ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান ও চিত্রনায়ক ফেরদৌস আহমেদের বিরুদ্ধে ঢাকার আদাবর থানায় একটি হত্যা মামলা করা হয়েছে। তারা দুজনেই আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য। পোশাককর্মী মো. রুবেলকে হত্যার নির্দেশদাতা হিসেবে এই মামলা করা হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার নিহত রুবেলের বাবা রফিকুল ইসলাম বাদী হয়ে মামলাটি করেছেন। কোটা সংস্কার আন্দোলন ও পরে সরকার পতনের দাবিতে সংঘর্ষ চলাকালে ৫ আগস্ট পোশাক কারখানার কর্মী রুবেল গুলিবিদ্ধ হন। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। পুলিশ সূত্র জানায়, মামলায় মাগুরা-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য সাকিব আল হাসানকে ২৮ নম্বর আসামি করা হয়েছে। আর ঢাকা-১০ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ফেরদৌস আহমেদকে ৫৫ নম্বর আসামি করা হয়েছে।

এ মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরসহ ১৫৬ জনকে আসামি করা হয়েছে। এতে অজ্ঞাত আরো ৪০০-৫০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।

আদাবর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. নজরুল ইসলাম মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

মামলার এজাহারে বাদীর অভিযোগ, গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতন হয়। ওই দিন রুবেল আদাবরের রিংরোডে মিছিলে অংশ নেন। এ সময় আসামিদের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ নির্দেশ, প্ররোচনা, সাহায্য, সহযোগিতা ও মদদে মিছিলে গুলি ছোড়া হয়। বুকে ও পেটে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় রুবেলকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি ৭ আগস্ট মারা যান।

এদিকে ঢাকার সাভারে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন করতে গিয়ে গুলিতে আব্দুল আহাদ সৈকত (১৭) নামে এক শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনায় মামলা হয়েছে। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরসহ মোট ১২৬ জনের নাম উল্লেখ করে সাভার মডেল থানায় মামলাটি করা হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার রাতে নিহত শিক্ষার্থীর বাবা নজরুল ইসলাম বাদী হয়ে মামলাটি করেন।

নিহত আব্দুল আহাদ সৈকত বগুড়া জেলার সোনাতলা থানার উত্তর দিগলকান্দি গ্রামের নজরুল ইসলামের ছেলে। তিনি ঢাকা কমার্স কলেজে একাদশ শ্রেণিতে লেখাপড়া করতেন।

শেখ হাসিনা ও ওবায়দুল কাদের ছাড়াও মামলার উল্লেখযোগ্য আসামিরা হলেন- সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ এ আরাফাত, সাবেক দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান, সাবেক সাভার উপজেলা চেয়ারম্যান মঞ্জুরুল আলম রাজিব, সাভার পৌরসভার সাবেক মেয়র হাজী আব্দুল গণি, কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম মানিক মোল্লা, তেঁতুলজোড়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ফখরুল আলম সমর, আশুলিয়া থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফারুক হাসান তুহিন, মাজহারুল ইসলাম রুবেল, সাইদুর রহমান সুজন, সাবেক দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমানের এপিএস শামীম আহমেদ মিঠুন সরকার, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মঞ্জুরুল আলম রাজীবের পিএস রাজু আহমেদ, সাভার উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আতিকুর রহমান আতিক, মোবারক হোসেন খান পলক, মো. আব্দুল কুদ্দুস, বিরুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান সেলিম মন্ডল, সাভার পৌরসভার মেয়র আব্দুল গণির ছেলে কামরুল হাসান শাহীন ও তার ভাই মেহেদী হাসান তুষার, ঢাকা জেলা উত্তর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক সায়েম মোল্লা, আব্দুর রব, রাজু মোল্লা, জাকির হোসেন ওরফে মামা জাকির, সাংবাদিক আপেল মাহমুদ, সাভার পৌর ছাত্রলীগের সভাপতি মাসুম দেওয়ান, সাভার সদর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান সোহেল রানা, আহমেদ ফয়সাল নাঈম তুর্য্য, পাভেল ওরফে তোতলা পাভেল, প্রবাল, হাজী মো. আব্বাস আলী, মো. হাবিজ উদ্দিন। মামলায় ১২৬ জনের নাম উল্লেখ ছাড়াও অজ্ঞাতনামা আরো ২৫০/৩০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, গত ৫ আগস্ট সন্ধ্যা ৬টার দিকে সৈকত সাভারের থানা রোডের মুক্তিরমোড় (আক্কেল আলী মোড়) এলাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন যোগ দেয়। ১নং-১০নং ‘ক্রমিকের আসামিদের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ হুকুমে এবং প্ররোচণায় উল্লেখিত আসামিরা এবং আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরাসহ দলটির অঙ্গ সংগঠনের অজ্ঞাতনামা আরও আসামিরা হামলা চালায়। তাদের হাতে থাকা আগ্নেয়াস্ত্র ও দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রসহ ধাওয়া করে যাকে পায় তাকেই এলোপাতাড়ি পেটায় এবং আগ্নেয়াস্ত্র দিয়া উপর্যুপরি গুলিবর্ষণ করে। এ সময় মো. আব্দুল আহাদ সৈকতের মাথার বিভিন্ন অংশে গুলিবিদ্ধ হলে সে রাস্তায় লুটিয়ে পড়ে। আন্দোলনে অংশ নেয়া অন্য ছাত্ররা তাকে গুরুতর অবস্থায় উদ্ধার করে সাভারের এনাম মেডিকেলে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

সাভার মডেল থানার ওসি আতিকুর রহমান বলেন, নিহত সৈকতের বাবা বাদী হয়ে আমাদের থানায় একটি হত্যা মামলা করেছেন। মামলায় ১২৬ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরো ২৫০/৩০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত