আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সাবেক বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক এবং দিনাজপুর-৬ (হাকিমপুর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শিবলী সাদিকের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ করা হয়েছে। একই সঙ্গে তাদের স্ত্রী-সন্তানদের ব্যক্তিগত এবং স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাব ও লেনদেন স্থগিত রাখা হয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক গোয়েন্দা সংস্থা বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) দেশের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কাছে এ সংক্রান্ত নির্দেশনা পাঠিয়ে অ্যাকাউন্ট জব্দ করতে বলেছে। হিসাব জব্দ করাদের ব্যক্তিগত ও ব্যবসায়িক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে সব লেনদেন বন্ধ থাকবে। আগামী ৩০ দিন এসব হিসাবে কেউ কোনো ধরনের লেনদেন করতে পারবেন না।
লেনদেন স্থগিতের নির্দেশটি মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ বিধিমালা সংশ্লিষ্ট ধারা প্রযোজ্য হবে বলে বিএফআইইউর চিঠিতে বলা হয়েছে। এছাড়া চিঠিতে উল্লেখিত ব্যক্তিদের স্ত্রী-সন্তানদের নাম, জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্য দেয়া হয়েছে।
বিএফআইইউর নির্দেশনায় আরো বলা হয়েছে, কোনো হিসাব স্থগিত করা হলে হিসাবসংশ্লিষ্ট তথ্য বা দলিল যেমন- হিসাব খোলার ফরম, কেওয়াইসি ও লেনদেন বিবরণী ইত্যাদি চিঠি দেয়ার তারিখ থেকে ৫ কার্যদিবসের মধ্যে তাদের কাছে পাঠাতে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে বলা হয়েছে।
এদিকে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ সহকারী ও আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া ও তার ভাই বিদ্যুৎ বড়ুয়াসহ চারজনের ব্যাংক হিসাব স্থগিত করা হয়েছে। এই তালিকায় থাকা অন্য দুজন হলেন বিদ্যুৎ বড়ুর স্ত্রী অগ্নি বড়ু ও এইচএম জামাল উদ্দিন। আর্থিক গোয়েন্দা ইউনিট বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) গত বৃহস্পতিবার ব্যাংক হিসাব স্থগিতের এ নির্দেশনা দেশের বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কাছে পাঠিয়েছে।
চিঠিতে আরো বলা হয়েছে, উল্লিখিত ব্যক্তি ও তাদের ব্যক্তিমালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের নামে কোনো হিসাব পরিচালিত হয়ে থাকলে সেই হিসাবের লেনদেন মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২-এর ২৩ (১) (গ) ধারার আওতায় ৩০ দিনের জন্য স্থগিত রাখা এবং তাদের নামে কোনো লকার থাকলে তার ব্যবহার ৩০ দিনের জন্য বন্ধ করার নির্দেশনা দেয়া হলো।
বিপ্লব বড়ুয়াসহ চারজনের ব্যাংক হিসাব স্থগিতের চিঠিতে তার মা-বাবার নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়া বাকি তিনজনের ক্ষেত্রে মা-বাবা ও স্বামীর নামের পাশাপাশি তাদের জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বর ও জন্ম তারিখও উল্লেখ করা হয়েছে। লেনদেন স্থগিতের পাশাপাশি সব ব্যাংক হিসাবের সংশ্লিষ্ট তথ্য বা দলিল, যেমন হিসাব খোলার ফরম, কেওয়াইসি ও লেনদেন বিবরণী প্রভৃতি তথ্য বিএফআইইউর কাছে পাঠাতে হবে। বিএফআইইউ বলেছে, আগামী ৩০ দিন এসব ব্যক্তির ব্যাংক হিসাবে কোনো লেনদেন করা যাবে না।
নাজমুল হাসান পাপনের ব্যাংক হিসাব জব্দ : বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সদ্য বিদায়ী সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনের ব্যাংক হিসাব জব্দ করা হয়েছে। একই সঙ্গে তার স্ত্রী রোকসানা হাসান এবং তাদের সন্তান ও তাদের মালিকানাধীন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাবও স্থগিত করা হয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) দেশের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে এ-সংক্রান্ত নির্দেশনা সংবলিত চিঠি পাঠিয়েছে।
চিঠিতে বলা হয়েছে, বিসিবির বিদায়ী সভাপতি নাজমুল হাসান, তার স্ত্রী রোকসানা হাসান এবং তাদের সন্তানদের নামে কোনো লকার-সুবিধা থাকলে সেগুলোও স্থগিত থাকবে। চিঠিতে আরো বলা হয়েছে, উল্লিখিত ব্যক্তিরা ও তাদের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের নামে কোনো হিসাব পরিচালিত হয়ে থাকলে সেই হিসাবের লেনদেন মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ২০১২-এর ২৩ (১) (গ) ধারার আওতায় ৩০ দিনের জন্য স্থগিত রাখা এবং তাদের নামে কোনো লকার থাকলে তার ব্যবহারও ৩০ দিনের জন্য বন্ধ করার নির্দেশনা দেয়া হলো।
সাবেক রাষ্ট্রপতি মো. জিল্লুর রহমানের সন্তান নাজমুল হাসান ২০১২ সালে সরকার মনোনীত সভাপতি হিসেবে বিসিবির দায়িত্ব নেন। ২০১৩ সালের অক্টোবরে হন নির্বাচিত সভাপতি। সেই থেকে নাজমুলই তিন মেয়াদে বিসিবি সভাপতির দায়িত্ব পালন করে আসছেন। আগামী বছরের অক্টোবরে শেষ হওয়ার কথা ছিল নাজমুল হাসানের পরিচালনা পর্ষদের মেয়াদ। দেশের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর গত বুধবার বিসিবির সভাপতির পদ থেকে তিনি সরে দাঁড়ান।
