অসহায় বন্যার্তদের আর্তনাদ

প্রকাশ : ২৫ আগস্ট ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  নিজস্ব প্রতিবেদক

ভারি বৃষ্টির প্রবণতা কমায় দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় এলাকায় বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে। চট্টগ্রাম, খাগড়াছড়ি, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, কুমিল্লা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও ফেনী জেলার ভারতীয় ত্রিপুরা সীমান্তবর্তী অঞ্চলে এবং ত্রিপুরা প্রদেশের অভ্যন্তরীণ অববাহিকায় তেমন বৃষ্টি হয়নি। আগামী ২৪ ঘণ্টায় ভারি বৃষ্টি না হলে নদ-নদীগুলোর পানিও বিপৎসীমার নিচে নেমে আসবে বলে আশা করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। পানি কমলেও অর্ধকোটি বানভাসি মানুষ মানবেতর জীবনযাপন করছেন। বন্যাকবলিত এলাকার গবাদিপশু হারিয়ে অনেক পরিবার নিঃস্ব হয়েছেন। ভয়াবহতায় মানুষ দুর্বিষহ দিন পার করছেন। থমকে গেছে তাদের জীবনযাত্রা। বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ হয়ে অন্ধকারে কাটছে সময়। ডুবে গেছে রান্নার চুলা, ফলে রান্নাবান্নাও বন্ধ হয়ে গেছে অনেকের। খাবার ও পানির সংকটে পড়েছেন বন্যাকবলিত এলাকার মানুষ।

জানা গেছে, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের ত্রাণ ও বিভিন্ন ধরনের পণ্যসামগ্রী দিয়ে সহযোগিতা করছে সরকারি, বেসরকারি সংস্থা ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলো। পানিবন্দি লোকজনকে উদ্ধার করে নিরাপদ স্থানে নিতে একযোগে নৌবাহিনী, সেনাবাহিনী, ফায়ার সার্ভিস, কোস্ট গার্ড, ছাত্র প্রতিনিধি, বিজিবি ও জেলা প্রশাসন কাজ করছেন।

ভারতীয় পানির ঢল ও টানা বৃষ্টিতে গত কয়েক দিন ধরে পানিবন্দি মানুষেরা দুর্ভোগে দিনাতিপাত করছেন। দেখা দিয়েছে খাদ্য ও বিশুদ্ধ খাবার পানির তীব্র সংকট। রাস্তা-ঘাট তলিয়ে থাকায় ভেঙে পড়েছে যোগাযোগব্যবস্থা। বন্যাদুর্গত এলাকার অনেকে গবাদিপশু নিয়ে উঁচু বাঁধ ও পাকা সড়কে আশ্রয় নিয়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, স্মরণকালে এমন বন্যা দেখেনি ফেনী ও কুমিল্লার বাসিন্দারা। অনেক গ্রামে বাড়িঘর খালি পড়ে আছে। বেশিরভাগ ভবনের নিচতলায় পানি ঢুকেছে। কেউ কেউ দোতলা ও তিন তলায় আশ্রয় নিয়েছে। ভেসে গেছে বেশিরভাগ পুকুর ও জলাশয়ের মাছ। ঢাকা-চট্টগ্রাম-ফেনীর বিভিন্ন অংশে কোথাও হাঁটু সমান আবার কোথাও বুক সমান পানি। বিশুদ্ধ পানি ও খাবারের অভাবে অনাহারে দিন কাটছে অনেকের। ত্রাণের অপেক্ষায় দিন কাটছে কারো কারো। ভারত থেকে আসা পানি ও কয়েক দিনের টানা বর্ষণে বাঁধ ভেঙে লোকালয় প্লাবিত হয়েছে। দেশের চলমান বন্যা পরিস্থিতি ১১ জেলায় সীমাবদ্ধ আছে বলে জানিয়েছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়। তবে বেড়েছে বানভাসির সংখ্যা, মৃতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১৮। এর মধ্যে কুমিল্লায় চারজন, ফেনীতে একজন, নোয়াখালীতে তিনজন, চট্টগ্রামে পাঁচজন, ব্রাহ্মণবাড়িয়াতে একজন, লক্ষ্মীপুরে একজন ও কক্সবাজারে তিনজন। গতকাল শনিবার সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব কেএম আলী রেজা বলেন, বন্যায় মোট ক্ষতিগ্রস্ত লোকসংখ্যা ৪৯ লাখ ৩৮ হাজার ১৫৯ জন। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার ৯ লাখ ৪৪ হাজার ৫৪৮টি। উজানের ঢল আর ভারি বর্ষণে গত কয়েকদিন ধরে ভাসছে ফেনী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, খাগড়াছড়ি, নোয়াখালী, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, সিলেট, লক্ষ্মীপুর ও কক্সবাজার। আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাসের বরাতে আলী রেজা বলেন, আগামী ২৪ ঘণ্টায় দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চল এবং তৎসংলগ্ন উজানে ভারি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা নেই। এই সময়ে এই অঞ্চলের ফেনী, কুমিল্লা এবং চট্টগ্রাম অঞ্চলের ফেনী, গোমতী, হালদা- এই নদীগুলোর বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হবে বলে আশা করা যায়।

বন্যার্তদের জন্য ফেনীতে ফিল্ড হাসপাতাল তৈরি করা হয়েছে জানিয়ে অতিরিক্ত সচিব রেজা বলেন, সেটি সেনাবাহিনী ও সিভিল সার্জন কার্যালয় সমন্বিতভাবে পরিচালনা করবে। যারা বন্যাপীড়িত- তাদের চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। মোট ৩৫২৭টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে, আশ্রিত লোক ২ লাখ ৮৪ হাজার ৮৮৮ জন। আশ্রয় কেন্দ্রে ২১ হাজার ৬৯৫টি গবাদি পশু নিয়ে আসা হয়েছে।

অতিরিক্ত সচিব রেজা জানান, বন্যাদুর্গত ১১ জেলায় মোট ৩ কোটি ৫২ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। ত্রাণের চাল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে ২০ হাজার ১৫০ টন। এছাড়া ১৫ হাজার প্যাকেট শুকনা খাবার দেয়া হয়েছে। শিশুদের খাবারের জন্য ৩৫ লাখ টাকা এবং গোখাদ্য কেনার জন্য ৩৫ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।

দেশের ছয়টি নদীর পানি ৯টি পয়েন্টে বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। বন্যা পূর্বাভাস কেন্দ্রের ১১৬টি স্টেশনের মধ্যে ২২টি পয়েন্টে পানি বাড়ার প্রবণতা দেখা গেলও কমছিল ৮৪ পয়েন্টে আর অপরিবর্তিত ছিল ৪ পয়েন্টে। কুমিল্লায় গোমতী নদীর পানি বিপৎসীমার ৯৬ সেন্টিমিটার, খোয়াই নদীর পানি বিপৎসীমার ৪৪ সেন্টিমিটার, মৌলভীবাজার মনু নদীর পানি বিপৎসীমার ৯১ সেন্টিমিটার, চট্টগ্রামের রামগড় স্টেশনে ফেনী নদীর পানি বিপৎসীমার ৫৩ সেন্টিমিটার, সিলেটের অমরশীদ পয়েন্টে বিপৎসীমার ১৪ সেন্টিমিটার, শেওলা পয়েন্টে ১ সেন্টিমিটার এবং শেরপুর-সিলেট পয়েন্টে বিপৎসীমার ৯ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হয়। সুনামগঞ্জের মারকুলী পয়েন্টে এই নদীর পানি বিপৎসীমার ৪ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে বইছিল। ফেনীর পরশুরাম স্টেশনের সঙ্গে ‘যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন’ হওয়ায় সেখানকার মুহুরী নদীর বিষয়ে তথ্য দিতে পারেনি পানি উন্নয়ন বোর্ড।

কৃষি মন্ত্রণালয়ের ১০ সিদ্ধান্ত : গতকাল শনিবার সচিবালয়ে কৃষি মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে স্বরাষ্ট্র ও কৃষি উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন দপ্তর-সংস্থার প্রধান ও মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে সভা অনুষ্ঠিত হয়। কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মোহাম্মদ এমদাদ উল্লাহ মিয়া এসময় উপস্থিত ছিলেন। সভায় দেশের বিভিন্ন এলাকায় চলমান বন্যায় ক্ষয়ক্ষতি মোকাবিলায় করণীয় প্রস্তুতি বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। ১. বন্যাকবলিত এলাকার কৃষি ফসলের প্রকৃত ক্ষয়ক্ষতি বিশেষ করে বন্যার পানি নেমে যাওয়ার অব্যবহিত পরে রোপা আমনের বীজতলা, রোপিত আমন এবং দণ্ডায়মান আউশ ধানসহ অন্যান্য ফসলের ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ করতে হবে। এক্ষেত্রে বাংলাদেশের প্রধান ফসল ধান চাষকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। ধান পুনর্বাসন কর্মসূচি দেয়ার পর প্রয়োজনীয়তার নিরিখে পুনর্বাসনের জন্য আগাম শীতকালীন সবজি কর্মসূচিও দেয়া হবে। ২. বিভিন্ন দপ্তর, সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানের আওতাভুক্ত নিজস্ব উঁচু জমিতে রোপা আমন ধানের বীজতলা দ্রুত সময়ের মধ্যে প্রস্তুত করার ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। ৩. বন্যায় কৃষির ক্ষয়ক্ষতির তথ্য সংগ্রহের জন্য কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কন্ট্রোল রুমের কার্যক্রমের অব্যাহত রাখতে হবে। ৪. কৃষি মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন দপ্তর বা সংস্থার কাছে রোপা আমন ধানের বীজের স্টক সংক্রান্ত তথ্যাবলি সংগ্রহ করতে হবে এবং মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সমন্বয় করে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কৃষি পুনর্বাসন বা সহায়তা কার্যক্রমের তথ্যাবলি সংগ্রহ করতে হবে। ৫. বিএডিসি, বিনাসহ অন্যান্য সব সরকারি বা বেসরকারি প্রতিষ্ঠান আমন বীজ সংগ্রহ করে বীজতলা প্রস্তুত করার জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত দপ্তর ও সংস্থার কাছে অবিলম্বে সরবরাহ করবে। ৬. যথাসম্ভব বন্যাকবলিত এলাকার নিকটতম এলাকায় বীজতলা প্রস্তুত করতে হবে। ৭. মাঠ পর্যায়ে কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা ও উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের বন্যাত্তোর কৃষি পুনর্বাসনের কার্যক্রম দ্রুততার সঙ্গে শুরু করার জন্য এখন থেকে সক্রিয় রাখতে হবে। ৮. বন্যাকবলিত এলাকায় ব্লক এবং উপজেলা ভিত্তিক পুনর্বাসন পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে। ৯. বন্যায় কৃষির ক্ষয়ক্ষতির তথ্যাদি এবং মাঠপর্যায়ের কৃষকদের সচেতন করার জন্য কৃষি তথ্য সার্ভিসকে সামগ্রিক কৃষি পুনর্বাসন কার্যক্রমের বিষয়ে তথ্য চিত্র প্রস্তুত করতে হবে এবং ১০. সামগ্রিক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (সম্প্রসারণ অনুবিভাগ) সমন্বয়কের দায়িত্ব পালন করবেন।

বিদ্যুৎহীন গ্রাহক : পল্লী বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (আরইবি) জানায়, বন্যায় তাদের অধীন ১২টি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির গ্রাহকরা আক্রান্ত হয়েছেন। তাদের হিসেবে জানা যায়, দেশের ১০ লাখ ৯৭ হাজার ৯৬ জন গ্রাহক বিদ্যুৎবিহীন অবস্থায় আছে। পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিগুলোর মধ্যে চাঁদপুরে ১-এ ৫ হাজার ৩৫০ জন, নোয়াখালীতে ২ লাখ ৫৫ হাজার ৭০০ জন, ফেনীতে ৪ লাখ ৪১ হাজার ৫৪৬ জন, লক্ষ্মীপুরে ২০ হাজার জন, কুমিল্লা ২-এ ৭৫ হাজার জন, কুমিল্লা ৪-এ ১ লাখ ৯০ হাজার জন, চট্টগ্রাম ১-এ ২ হাজার জন, চট্টগ্রাম ৩-এ ৫০ হাজার জন, কক্সবাজারে ৫০০ জন, মৌলভীবাজারে ৪২ হাজার জন এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ১৫ হাজার জন গ্রাহক বিদ্যুৎবিহীন অবস্থায় আছে। মোট ১৭৪টি উপকেন্দ্রের মধ্যে ২১ হাজার ৯০৮টি ১১ কেভি ফিডারের মধ্যে বন্ধ আছে ২০৮টি। ক্ষয়ক্ষতির প্রাথমিক হিসেবে জানানো হয়, মোট ২৮৭ লাখ ৬ হাজার টাকার ৭১৯টি বৈদ্যুতিক খুঁটি, ২৪৬ লাখ টাকার ৩২৮টি ট্রান্সফরমার, ১৬৯ দশমিক ১১ লাখ টাকার ২ হাজার ২২৫টি স্প্যান ছিঁড়েছে, ২ দশমিক ১৯ লাখ টাকার ৩১৯টি ইন্সুলেটর, ৯০ লাখ টাকার ৭ হাজার ৪৯৯টি বিদ্যুতের মিটার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সবমিলিয়ে এখন পর্যন্ত ক্ষতি হয়েছে ৭ কোটি ৯৫ লাখ ৯০ হাজার টাকা। ক্ষয়ক্ষতির মধ্যে ফেনীর হিসাব নেওয়া সম্ভব হয়নি। কারণ সেখানকার পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির অফিসই বন্ধ আছে।

এদিকে পিডিবি জানায়, বন্যায় তাদের অধীনে চৌদ্দগ্রামের ৩৩/১২ কেভি উপকেন্দ্রটি বন্ধ আছে। এক কেন্দ্রের ৩৩ কেভি ফিডার ১টি এবং ১৭টি ১১ কেভি ফিডার বন্ধ আছে।

চৌদ্দগ্রাম ছাড়া কুমিল্লা, ফেনী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও চৌমুহনীর বিদ্যুৎ অফিসের অধীনের ৯৭ হাজার গ্রাহক এখন বিদ্যুৎহীন অবস্থায় রয়েছে। এরমধ্যে ৯টি ট্রান্সফরমার এবং ৪৪টি মিটার পোল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়া ৩ কিলোমিটার ৩৩ কেভি লাইন, ১৫ কিলোমিটার ১১ কেভি লাইন, ১৮ কিলোমিটার ১১/০.৪ কেভি লাইন, ১৭ কিলোমিটার ০.৪ কেভি লাইনের ক্ষতি হয়েছে। সব মিলিয়ে পিডিবি জানায়, তাদের মোট ক্ষতি প্রাথমিক হিসেবে ৬০ লাখ টাকা। বন্যার পানি নেমে গেলে লাইন চেক না করে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা সম্ভব হবে না। নিরাপত্তাজনিত কারণেই বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রাখা হয়েছে বলে জানান পিডিবির চেয়ারম্যান রেজাউল করিম।

সড়কের ক্ষতি : বন্যায় ফেনী, কুমিল্লা, হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজারসহ ১২ জেলার ৪৬২ কিলোমিটার সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। গত ২০ আগস্ট থেকে শুরু হওয়া এ বন্যায় কুমিল্লা, সিলেট ও চট্টগ্রাম জোনের সড়ক নেটওয়ার্কের প্রাথমিক ক্ষতির এ চিত্র উঠে এসেছে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের প্রতিবেদনে।

অধিদপ্তরের রক্ষণাবেক্ষণ সার্কেলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী জিকরুল হাসান বলেন, এখন পর্যন্ত যেটা পাওয়া গেছে, সেগুলো প্রাথমিক তথ্য। পানি সরে গেলে ক্ষয়ক্ষতির পুরো চিত্র পাওয়া যাবে।

সাম্প্রতিক বন্যায় সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের বিভিন্ন সড়ক বিভাগের ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক, সেতু, কালভার্টের তথ্য সড়ক ভবনে স্থাপিত বন্যা তথ্যকেন্দ্রের মাধ্যমে সংগ্রহ করা হয়েছে। আর তা প্রতিবেদন আকারে পাঠানো হয়েছে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ে। এতে বলা হয়েছে, তিনটি জোনের মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, কুমিল্লা, ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, বান্দরবান, রাঙামাটি ও খাগড়াছড়ি সড়ক বিভাগের ১১১টি সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত সড়কের দৈর্ঘ্য ৪৬২ দশমিক ২১ কিলোমিটার। সড়ক ও জনপথ জানিয়েছে, ক্ষতিগ্রস্ত সড়কের মধ্যে ৯০ দশমিক ৬৩ কিলোমিটার জাতীয় মহাসড়ক, ৫২ দশমিক ৮৮ কিলোমিটার আঞ্চলিক মহাসড়ক এবং ৩১৮ দশমিক ৭০ কিলোমিটার জেলা মহাসড়ক।