বৈষম্যবিরোধী ছাত্র জনতার আন্দোলনের মুখে স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেন শান্তিতে নোবেলজয়ী অধ্যাপক ড. অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। শপথ নেয়ার ১৯ দিনের মাথায় গতকাল মঙ্গলবার কয়েকটি দেশের রাষ্ট্রদূত তার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন। এর মধ্যে বাংলাদেশে নিযুক্ত রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত আলেক্সান্ডার ম্যানটিটস্কি, পাকিস্তানের রাষ্ট্রদূত সৈয়দ আহমদ মারুফ এবং সৌদি আরবের রাষ্ট্রদূত এসা ইউসুফ এসা আল দুহাইলান রয়েছেন। পৃথক পৃথক বৈঠকে বাংলাদেশ থেকে আমদানি বাড়াতে রাশিয়াকে আহ্বান করেছেন প্রধান উপদেষ্টা।
রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় রাষ্ট্রদূতদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতের সময়ে বাংলাদেশ থেকে আমদানি বাড়ানোর জন্য রাশিয়ার প্রতি আহ্বান জানান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা। একইসঙ্গে বাংলাদেশের গৌরবময় স্বাধীনতা যুদ্ধে রাশিয়ার ভূমিকা এবং চট্টগ্রাম বন্দরের গুরুত্বপূর্ণ মাইন পরিষ্কার কার্যক্রমের কথা স্মরণ করেন। তিনি রাশিয়ার দূতকে বাংলাদেশ থেকে আমদানি বাড়ানোর আহ্বান জানান, যার মধ্যে তৈরি পোশাক ছাড়া অন্যান্য পণ্য রয়েছে। তিনি বলেন, আমাদের রপ্তানিতে বৈচিত্র্য আনতে হবে।
রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত বলেন, রাশিয়া আন্তর্জাতিক মঞ্চে বাংলাদেশকে সমর্থন অব্যাহত রাখবে। বৈঠকে তিনি রাশিয়ার কারিগরি ও আর্থিক সহায়তায় বাংলাদেশ যে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করছে এবং খাদ্য নিরাপত্তা, জ্বালানি অনুসন্ধান এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ে সহযোগিতা বৃদ্ধির বিষয়ে আলোচনা করেন।
রাষ্ট্রদূত ম্যানটিটস্কি বলেন, রাশিয়া বাংলাদেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক অংশীদার। কারণ এটি দেশে গুরুত্বপূর্ণ খাদ্যশস্য ও সার রপ্তানি করে। গত বছর রাশিয়া বাংলাদেশে ২.৩ মিলিয়ন টনের বেশি গম রপ্তানি করেছিল এবং এ বছর চালান দুই মিলিয়ন টন ছাড়িয়েছে।
রাষ্ট্র পরিচালিত রাশিয়ান জ্বালানি কোম্পানি গ্যাজপ্রম ভোলা দ্বীপে আরো পাঁচটি গ্যাস কূপ এবং অভ্যন্তরীণ আরো কূপ অনুসন্ধানের আগ্রহ প্রকাশ করেছে। রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের নির্মাণ কাজ শেষ পর্যায়ে রয়েছে এবং আগামী বছর এটি চালু হবে বলে আশা করা হচ্ছে। রাশিয়াও বাংলাদেশে এলএনজি রপ্তানি করতে আগ্রহী। প্রধান উপদেষ্টা দুই দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক ও শিক্ষা সহযোগিতা এবং জনগণের জনগণের সম্পর্কের প্রসারের উপরও জোর দেন। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
