ঢাকা ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

আওয়ামী লীগ দল নিষিদ্ধ করার সুযোগ নেই

বললেন অ্যাটর্নি জেনারেল
আওয়ামী লীগ দল নিষিদ্ধ করার সুযোগ নেই

কোটা সংস্কার আন্দোলনে ছাত্র-জনতাকে ‘নির্বিচারে হত্যার’ অভিযোগে আওয়ামী লীগের নিবন্ধন বাতিল ও দল নিষিদ্ধ চেয়ে করা রিট জরিমানাসহ খারিজ চেয়েছেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান। গতকাল মঙ্গলবার বিচারপতি একেএম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি মুহাম্মদ মাহবুব-উল ইসলামের হাইকোর্ট বেঞ্চে এ রিটের শুনানিতে তিনি বলেন, দল নিষিদ্ধের সুযোগ নেই, সেই ইচ্ছাও নেই সরকারের। প্রাথমিক শুনানি নিয়ে রিটকারীর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আগামী ১ সেপ্টেম্বর শুনানির পরবর্তী দিন ধার্য করা হয়েছে। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ ও দলটির নিবন্ধন বাতিল চেয়ে গত ১৯ আগস্ট এ রিট করেন ‘সারডা সোসাইটি’ নামের একটি মানবাধিকার সংগঠনের নির্বাহী পরিচালক আরিফুর রহমান মুরাদ ভূঁইয়া। এর আগে গত রোববার আরিফুর রহমান মুরাদ ভূঁইয়া নিজে আবেদনের শুনানি করেন। তখন জ্যেষ্ঠ বিচারক তাকে একজন আইনজীবী নিয়োগ করার পরামর্শ দেন, যাতে ভালোভাবে শুনানি করা যায়। এরপর মঙ্গলবার শুনানির দিন রাখেন। গতকাল মঙ্গলবার সকালে প্রথমে শুনানি করতে উঠে মুরাদ ভূঁইয়া বলেন, তার আইনজীবী অন্য কোর্টে আছেন, সময় (পাস ওভার) চান। তখন আদালত সাড়ে ১২টায় শুনানির সময় ঠিক করে দেন। এরপর বেলা সাড়ে ১২টায় শুনানি করতে উঠে মুরাদ ভূঁইয়া আদালতকে বলেন, আমি একজন আইনজীবী নিয়োগ করেছি; তবে তিনি (আইনজীবী) বলেছেন যেন আমি শুনানি করি; সমস্যা হলে তিনি আসবেন। তিনি এখানে আছেন। এ সময় মুরাদ ভূঁইয়া পেছনে তাকিয়ে আইনজীবীকে দেখার চেষ্টা করেন। তখন জ্যেষ্ঠ বিচারক তাকে বলেন, যেন আইনজীবীকে খুঁজে আনেন, তিনি সময় দেবেন। তখন মুরাদ ভূঁইয়া বাইরে গিয়ে আইনজীবীকে খুঁজে আসেন এবং না পাওয়ার কথা জানান আদালতকে। তখন অ্যাটর্নি জেনারেল উঠে মো. আসাদুজ্জামান আদালতকে বলেন, আবেদনকারী যথেষ্ট ‘কম্পিটেন্ট’, তিনি শুনানি করতে পারবেন। এরপর মুরাদ ভূঁইয়া শুনানি করেন। তারপর শুনানিতে অংশ নিয়ে অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান বলেন, ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কোনো সিদ্ধান্ত নেই রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধের। সংবিধানে রাজনৈতিক দল পরিচালনার যে ক্ষমতা দেয়া হয়েছে তা খর্ব করবে না সরকার। বিগত কর্তৃত্ববাদী সরকারের অনেক অন্যায়-অবিচারের শিকার হয়েছে মানুষ। অনেক গুম-খুন হয়েছে। সেগুলোর বিচারের জন্য আইন ও আদালত রয়েছে। তবে আওয়ামী লীগের অনেক ভালো নেতাকর্মীও রয়েছেন, তারা দলের মতাদর্শ ধারণ করেন। এজন্য দল নিষিদ্ধ করার সুযোগ নেই। তাদের রাজনৈতিক অধিকার খর্ব করার ইচ্ছা এ সরকারের নেই। তিনি বলেন, যিনি রিট করেছেন তার রিট করার এখতিয়ার নেই। রিটে আওয়ামী লীগকে বিবাদী করা হয়নি। ‘সারডা’ নামের সংগঠন যে রিট করেছে তার গঠনতন্ত্রও এ ধরনের রিট করার অনুমোদন দেয় না। অ্যাটর্নি জেনারেল আরো বলেন, অতীতে অনেক রাজনৈতিক বিষয়কে কোর্টে টেনে আনা হয়েছে, যার মূল্য আমাদের দিতে হয়েছে। যে গণঅভ্যুত্থানটি হয়েছে তা বিচার বিভাগের উপরেও এসেছে। কোর্টে কোনো ঘটনা হলে আইনজীবী হিসেবে আমার ভেতরে রক্তক্ষরণ হয়। এজন্য মাঠের রাজনীতি মাঠেই থাকুক। এ রিট সরাসরি খারিজ করে আবেদনকারীর ওপর কস্ট (খরচ) আরোপ করা হোক। পরে রিটকারী আওয়ামী লীগকে নিসিদ্ধের জন্য সময় চাইলে কোর্ট আগামী ১ সেপ্টেম্বর নতুন দিন ধার্য করে দেন।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত