প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ রাষ্ট্রদূতদের

অর্থনৈতিক সংকট উত্তরণে বিনিয়োগের আহ্বান

প্রকাশ : ২৯ আগস্ট ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  নিজস্ব প্রতিবেদক

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূত মারি মাসদুপুই, কানাডার হাইকমিশনার লিলি নিকোলস এবং মালয়েশিয়ার হাইকমিশনার হাজনাহ মোহাম্মদ হাশিম।

গতকাল বুধবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় পৃথক বৈঠকে রাষ্ট্রদূতরা প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়ে আলোচনা করেন। বৈঠকে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদ উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সংকট থেকে দেশকে পুনর্গঠনে কানাডাকে বিনিয়োগের আহ্বান জানান প্রধান উপদেষ্টা। অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস কানাডার শীর্ষ রাজনীতিবিদ ও উন্নয়ন সংস্থাসহ দেশটির সঙ্গে তার দীর্ঘ সম্পর্কের কথা স্মরণ করে বলেন, ‘অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বাড়াতে তার সরকারের জন্য কানাডার সহায়তা প্রয়োজন।’ তিনি বলেন, ‘আমাদের বড় বিনিয়োগ দরকার। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার উত্তরাধিকার সূত্রে একটি অর্থনীতি পেয়েছে, যা বিপুল পরিমাণ ঋণের বোঝাসহ সম্পূর্ণ বিশৃঙ্খল অবস্থায় ছিল।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের প্রথম অগ্রাধিকার হচ্ছে অর্থনীতি ঠিক করা। সরকার পূর্ববর্তী সরকারের দ্বারা ভেঙেপড়া গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানগুলোও পুনরুদ্ধার করছে এবং প্রশাসনে শৃঙ্খলা ও স্বচ্ছতা আনছে।’ এসময় কানাডার হাইকমিশনার বলেন, ‘তার সরকার প্রধান উপদেষ্টা ও অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে সহায়তা দিতে প্রস্তুত রয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘কানাডা সার ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য সরবরাহের মাধ্যমে বাংলাদেশের খাদ্য নিরাপত্তা জোরদারে আগ্রহী। উত্তর আমেরিকার এই দেশটি থেকে বাণিজ্য সুবিধা অব্যাহত রাখতে বাংলাদেশকে অবশ্যই কারখানাগুলোতে শ্রম অধিকার নিশ্চিত করতে হবে।’ এসময় প্রফেসর ইউনূস বলেন, ‘যেসব ব্র্যান্ড বাংলাদেশ থেকে পোশাক কেনে এবং আন্তর্জাতিক বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে পোশাক কেনে তাদের উদ্বেগ নিরসনে তার সরকার আইএলও’র মানদ-ের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে শ্রম অধিকার সমুন্নত রাখবে।’ নিকোলস বলেন, ‘জুলাই ও আগস্টে সংঘটিত গণহত্যার ন্যায়বিচার ও জবাবদিহি প্রতিষ্ঠার পদক্ষেপে জাতিসংঘের ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং মিশনকে সমর্থন করতেও কানাডা আগ্রহী।’ অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘ছাত্রদের নেতৃত্বাধীন বিপ্লব দেশে নতুন আশার সূচনা করেছে। এগুলো ঐতিহাসিক সুযোগ। এই সুযোগ হয়তো আর কখনোই ফিরে আসবে না।’ তিনি বলেন, ‘দেশে ভোট অনুষ্ঠিত করার আগে গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচনি সংস্কার করা হবে। বিগত সরকারের আমলে নির্বাচন কমিশনকে নির্বাচনি কারচুপির কারখানায় পরিণত করা হয়েছিল।’ কানাডার হাইকমিশনার বাংলাদেশে রোহিঙ্গা শিবিরের নিরাপত্তা পরিস্থিতি এবং মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে বসবাসরত রোহিঙ্গাদের ওপর ক্রমবর্ধমান সহিংসতায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, কানাডা রোহিঙ্গাদের মানবিক সহায়তার জন্য ৬০০ মিলিয়ন ডলারের বেশি অনুদান দিয়েছে এবং রোহিঙ্গা জনগণের জীবন-জীবিকার সুযোগ সৃষ্টির আহ্বান জানান। প্রধান উপদেষ্টা কক্সবাজারের ক্যাম্প থেকে কিছু রোহিঙ্গাকে স্থানান্তর করে রোহিঙ্গা শিবিরে উপচেপড়া ভিড় কমিয়ে আনার আহ্বান জানান। তিনি আরো বলেন, তার সরকার রোহিঙ্গা তরুণদের মধ্যে আশার আলো দেখাতে যথাসাধ্য চেষ্টা করবে।