দুদকের পুরোনো রাজনৈতিক মামলাগুলোও যেন বিবেচনা করা হয়

বললেন সারজিস আলম

প্রকাশ : ৩০ আগস্ট ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  নিজস্ব প্রতিবেদক

ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে রাজনৈতিক কারণে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে যেসব ‘মিথ্যা’ মামলা হয়েছে, সেগুলো নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক সারজিস আলম। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে বেরিয়ে এসে সাংবাদিকদের তিনি বলেছেন, দুদক যেন এসব মামলার বিষয়ে ‘বিবেচনা’ করে, সেই অনুরাধ তারা করেছেন। দুদক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহর সঙ্গে সাক্ষাতের সময় সারজিস আলমের সঙ্গে ছিলেন আরেক সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ। তারা বলেছেন, আন্দোলনের সমন্বয়কদের নামে কেউ চাঁদাবাজি করলে, অন্যায় সুবিধা নিলে বা পদত্যাগে বাধ্য করতে চাইলে তাদের যেন আইনের হাতে তুলে দেয়া হয়। সারজিস আলম ও হাসনাত আব্দুল্লাহর নেতৃত্বে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পাঁচ সদস্যের একটি দল এদিন দুদক চেয়ারম্যানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। সেখান থেকে বেরিয়ে এসে তারা সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন। সারজিস আলম বলেন, গত ১৬ বছরে দুদকের যে ইমেজ সংকট তৈরি হয়েছে, তা থেকে যেন তারা বের হয়ে আসতে পারে, সে বিষয়ে আমরা দুদকের চেয়ারম্যানের সাথে কথা বলেছি। দুদক যেন জনগণের আস্থার জায়গা ফিরে পেতে পারে। বিগত আওয়ামী লীগ সরকার ‘রাজনৈতিক কারণে’ দুদককে নিয়ে অনেক কাজ করেছে এবং সেসব কাজ এ প্রতিষ্ঠানকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে মন্তব্য করে এ সমন্বয়ক বলেন, এখন থেকে সে ধরনের কিছু যেন আর না হয়, সেটা তারা ‘স্পষ্ট করে’ জানিয়ে দিয়েছেন। একটি চাপ প্রয়োগের বিষয়, কিংবা একটি চাঁদাবাজির বিষয়, কিংবা একটি মিথ্যা মামলার বিষয়- এসব বিষয়গুলা শুনতে পাচ্ছি। দুদক দিয়ে এখন এই কাজটি আসলে করানো হবে। এটা আমরা দেখেছি, অতীতেও এ কাজগুলো করানো হয়েছে অন্য কোনো প্রতিষ্ঠান দিয়ে, তার মধ্যে দুদকও একটি। সারজিস বলেন, আমরা জাস্ট দুদককে স্পষ্ট ভাষায় জানাতে এসেছি আমাদের জায়গা থেকে যে, আমরা, ছাত্র জনতা ১৬ বছরের ফ্যাসিস্ট সরকারের বিরুদ্ধে গিয়ে যে একটি গণঅভ্যুত্থান ঘটিয়েছি, এই গণঅভ্যুত্থান এই স্পিরিট ধারণ করে না যে কাউকে আসলে মিথ্যা মামলা দেয়া হবে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত এরকম কোনো কারণে। কিংবা কোনো একটি চাঁদাবাজি করা হবে রাজনৈতিক পরিচয় দেখিয়ে। কিংবা চাঁদাবাজি করা হবে কোনো হুমকি দিয়ে। যে কাজগুলো গত ১৬ বছরে হয়েছে, সেই কাজগুলো যদি অন্য একটি গোষ্ঠী আবার রিপিটেশন ঘটায়, তাহলে দিনশেষে আমাদের যে স্পিরিট, সেই স্পিরিটের সাথে এই কাজগুলো সাংঘর্ষিক।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে দুদককে ‘স্পষ্ট বার্তা’ দেয়ার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘আমরা কখনো এই কাজগুলো করি না এবং সমর্থনও করি না। কেউ যদি আমাদের নাম ব্যবহার করে এই কাজগুলো করে, তাদের যেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে তুলে দেয়া হয়। এবং তাদের সাথে কম্প্রোমাইজের কোনো প্রশ্ন ওঠে না। পাশাপাশি পুরোনো মামলাগুলোর বিষয়ে সারজিস বলেন, ‘বিগত ১৬ বছরে এই ফ্যাসিস্ট সরকার রাজনৈতিক কারণে যাদের পছন্দ হয়নি মিথ্যা মামলা দিয়েছে; কারো পরিবার নিয়ে সমস্যায় পড়েছে- মিথ্যা মামলা দিয়েছে; কারো এলাকা নিয়ে সমস্যা হয়েছে- মিথ্যা মামলা দিয়ে দিয়েছে। এই যে রাজনৈতিক কারণে যে মামলাগুলো হয়েছে, যেগুলোর আসলে সত্যতা নেই, ভিত্তি নেই, এগুলো যেন বিবেচনা করা হয়।