গুম ও খুন হওয়া পরিবারকে রাষ্ট্রীয় ভাতা দেয়ার দাবি মির্জা ফখরুলের

প্রকাশ : ৩১ আগস্ট ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  নিজস্ব প্রতিবেদক

শেখ হাসিনা নেতৃত্বাধীন সরকারের আমলে যারা গুম ও খুন হয়েছে সেসব পরিবারের সদস্যদেরকে রাষ্ট্রীয়ভাবে ভাতা দেয়ার দাবি জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। গতকাল শুক্রবার বিকেলে নয়া পল্টনে দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে অনুষ্ঠিত এক সমাবেশে তিনি প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ দাবি জানান। আন্তর্জাতিক ঘুম দিবস উপলক্ষে এ সমাবেশের আয়োজন করা হয়। বিগত সরকারের আমলে গুম ও খুনের শিকার হওয়া পরিবারকে ভাতা দেয়া রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব বলে ও মন্তব্য করেন তিনি।

মির্জা ফখরুল বলেন, ছাত্র-জনতার আন্দোলন-এর মাধ্যমে ভয়াবহ দানবীয় সরকার এর পতন হয়েছে। তাই আমরা এখন প্রাণ ভরে নিঃশ্বাস নিতে পারছি। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রধান গতকাল জাতিসংঘের সঙ্গে গুমবিরোধী চুক্তির স্বাক্ষর করেন।

আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে প্রত্যেকটি হত্যার তদন্ত জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে তদন্ত করতে দাবি জানান বিএনপি মহাসচিব।

মির্জা ফখরুল বলেন, এখনো অনেক ষড়যন্ত্র হচ্ছে। স্বাধীনতাকামী মানুষের বিজয় নস্যাৎ করার জন্য। এজন্য বিএনপির নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে মাঠে থাকতে হবে। যারা বিভিন্ন বাহিনীর পরিচয়ে গুম ও খুনের সঙ্গে যুক্ত ছিল, তাদের খুঁজে বের করে দৃষ্টান্তমূলক বিচারের ব্যবস্থা করতে হবে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন আহমেদ বলেন, ২০১৫ সালের ১০ মার্চ রাত ৯টা সাড়ে ৯টার সময় উওরা একটি বাসা থেকে চোখ বেঁধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে আমাকে তুলে নিয়ে যায়। একটি আলোবিহীন রুমের ভেতর রাখা হয়। তিনি বলেন, গুম-খুন এর নামে আয়না ঘর এর প্রধান ছিল বেনজির, জিয়াউল হাসান। জিয়াউল হাসান কে কঠোর ভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করতে হবে। জিজ্ঞাসাবাদ এর মাধ্যমে যেন গুম ও খুনের সকল তথ্য বেরিয়ে আসে। পলাতক বেনজিরকে বিদেশ থেকে টেনেহিঁচড়ে নিয়ে এসে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সকল গুম খুন সব তথ্য বেরিয়ে আসবে। এ সময় তিনি দিল্লির সরকারের প্রতি দাবি জানান ‘খুনি হাসিনা’ কে ফেরত দেয়ার জন্য। জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে আন্তর্জাতিক আদালতে বিচারের মুখোমুখি করার জন্য দাবি জানান।

শেখ হাসিনার গুম খুনের দোসর অভিহিত করে সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল আজিজ, পুলিশ প্রধান চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুনকে গ্রেপ্তার করার দাবি জানান সালাউদ্দিন।

তিনি আরো বলেন, গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠার জন্য আমাদের রাস্তায় থাকতে হবে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে আমরা সহযোগিতা করব। বাংলাদেশের মিডিয়াগুলোকে খুনি হাসিনাসহ তার দোসরদের গুম খুনের সিরিজ নিউজ করার জন্য আহ্বান জানান। আর যদি না করা হয় আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে সকল মিডিয়াগুলোর অফিস বাংলার জণগণ ঘেরাও করবে মর্মে হুঁশিয়ারি দেন।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, শেখ হাসিনা সরকারের গুম, খুন, হত্যার আসল ঘটনা বের করতে হবে। এই গুম খুনের প্রকল্পের প্রধান ছিল শেখ হাসিনা। আর যারা এ গুম খুনের সঙ্গে জড়িতদের জনসম্মুখে আনতে হবে। জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে তদন্ত করে তাদের বিচার করতে হবে। জাতিসংঘের তত্ত্বাবধায়নে গুমবিরোধী চুক্তির সঙ্গে শেখ হাসিনা স্বাক্ষর করেননি। কারণ সে নিজেই এই গুম খুনের সাথে জড়িত।

তিনি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি ধন্যবাদ জানান জাতিসংঘের সঙ্গে গুম খুনের বিরোধী চুক্তি স্বাক্ষর করার জন্য। যারা এই ফ্যাসিবাদী সরকার এর পতনে সামনের সারিতে নেতৃত্বে দিয়েছে, গুম খুন হয়েছে তাদের জাতীয় স্বীকৃতির দাবি জানান আমির খসরু।