ঢাকা ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ অধিবেশন

ড. ইউনূস-মোদির বৈঠকের সম্ভাবনা

ড. ইউনূস-মোদির বৈঠকের সম্ভাবনা

জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশন চলাকালীন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সাক্ষাৎ হতে পারে। আগামী মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে জাতিসংঘের ৭৯তম সাধারণ অধিবেশন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এই অধিবেশনে অন্যান্য দেশের রাষ্ট্রপ্রধানের মতো বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী অংশ নেবেন। আর অধিবেশন চলাকালীন সাইডলাইনে ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও নরেন্দ্র মোদির বৈঠক হতে পারে। গত শুক্রবার ভারতের গণমাধ্যম পিটিআই এ প্রতিবেদন প্রকাশ করে। পিটিআইকে দেয়া সাক্ষাৎকারে ড. ইউনূস জানান, তিনি দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্থার (সার্ক) সব সদস্য রাষ্ট্রের সরকার প্রধানদের একত্র করে ছবি তোলার চেষ্টা চালাবেন। গত রোববার ঢাকায় ড. ইউনূসের সরকারি বাসভবনে সাক্ষাৎকার নিয়েছে পিটিআই।

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা বলেন, অবশ্যই আমরা (নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে) দেখা করার চেষ্টা করব। আমি সার্কভুক্ত দেশগুলোর সরকার প্রধানদের একসঙ্গে এনে একটি ছবি তোলার চেষ্টাও করব। মহৎ একটি উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে সার্ক জোট গঠন করা হয়েছিল। এখন এর অস্তিত্ব শুধু কাগজে-কলমে। সার্কের কোনো কার্যকারিতা নেই। আমরা সার্কের নামই ভুলতে বসেছি। আমি সার্কের চেতনাকে পুনরুজ্জীবিত করতে চাই। দীর্ঘদিন ধরে সার্ক সম্মেলন আয়োজিত হচ্ছে না। আমরা সবাই একত্র হলে, অনেক সমস্যার সমাধান হবে যোগ করেন শান্তিতে নোবেলজয়ী ড. ইউনূস।

জাতিসংঘের দেয়া বক্তাদের প্রাথমিক তালিকা অনুযায়ী, ২৬ সেপ্টেম্বর সাধারণ অধিবেশনে বক্তব্য রাখার কথা রয়েছে মোদির। সার্কের বর্তমান সদস্য আফগানিস্তান, বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত, মালদ্বীপ, নেপাল, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কা। সর্বশেষ ২০১৬ সালে ইসলামাবাদে সার্ক সম্মেলন আয়োজিত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু জম্মু-কাশ্মীরের উরি সেনা ক্যাম্পে জঙ্গি হামলার জেরে ভারত এতে যোগ দিতে অস্বীকার করে। পরবর্তীতে বাংলাদেশ, ভুটান ও আফগানিস্তানও এতে যোগ দিতে অস্বীকার করায় বাতিল হয় সম্মেলনটি।

প্রধান উপদেষ্টা উল্লেখ করেন, সার্কের মতো একই ধরনের উদ্দেশ্য নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) প্রতিষ্ঠিত হলেও ইউরোপের জোটটি পারস্পরিক সমঝোতার ভিত্তিতে অনেক বড় বড় লক্ষ্য অর্জন করেছে। সে তুলনায় সার্কের প্রাপ্তি প্রায় শূন্যের কোঠায়।

ড. ইউনূস পিটিআইকে বলেন, ইউরোপের দেশগুলো ইইউ থেকে অনেক কিছু অর্জন করেছে। আমাদের নিশ্চিত করতে হবে যাতে সার্ক কার্যকর থাকে। ইইউর দিকে তাকান, এটি অসাধারণ একটি জোট। পাকিস্তান নিয়ে সমস্যা থাকলে ভিন্নভাবে সমস্যার সমাধান হতে পারে। কিন্তু সার্কের কার্যক্রম বন্ধ থাকতে পারে না। রোহিঙ্গা প্রসঙ্গে ড. ইউনূস বলেন, মিয়ানমারকে তাদের নিজ দেশের জনগোষ্ঠীকে ফিরিয়ে নিতে হবে এবং এ বিষয়টি তাদের বোঝানোর জন্য ভারতের সহায়তা চাইবেন তিনি। তিনি আরো জানান, এই সংকটের মোকাবিলায় চীন-ভারত, উভয়েরই সাহায্য প্রয়োজন। এ বিষয়টির সুরাহা করতে আমাদের ভারত ও চীন, উভয়ের সহায়তা প্রয়োজন। প্রায় ১০ লাখ মানুষ (রোহিঙ্গা) বাংলাদেশে এসেছেন এবং তাদের সংখ্যা বাড়ছে। এতে বাংলাদেশের অর্থনীতির ওপর ভয়াবহ চাপ পড়ছে। কয়েকটি দেশ তাদের গ্রহণ করেছে, কিন্তু এটি সংখ্যায় খুবই কম। ভারতের সঙ্গে মিয়ানমারের সম্পর্ক ভালো। তাই মিয়ানমারকে বিষয়টি বোঝানোর জন্য ভারতের সহযোগিতা প্রয়োজন। ২০১৭ সালে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সহিংস সামরিক দমন-পীড়নের মুখে ১০ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে চলে আসে। জাতিসংঘ এই সহিংসতাকে জাতিগত নিধনের সঙ্গে তুলনা করেছে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত