ঢাকা ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

১৪ বছরে গুম হওয়া ৬৫ ব্যক্তির সন্ধান চায় পরিবার

১৪ বছরে গুম হওয়া ৬৫ ব্যক্তির সন্ধান চায় পরিবার

বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে গত ১৪ বছরে নিখোঁজ ও গুম হওয়া ৬৫ ব্যক্তির সন্ধান চেয়েছে পরিবারগুলো। সেই সঙ্গে তারা এসব ঘটনায় জড়িত র??্যাব, ডিবি ও পুলিশের জড়িত সদস্যদের শাস্তি দাবি করেছেন। পাশাপাশি ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে আয়নাঘর উন্মোচনের দাবিও জানিয়েছেন তারা। গতকাল সোমবার দুপুরে ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (ক্র্যাব) মিলনায়তনে ‘বাংলাদেশ গুম পরিবার’-এর ব্যানারে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি জানান সংগঠনটির প্রধান সমন্বয়ক ও লেক্সাস গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ বেল্লাল হোসেন।

অধিকাংশ গুম, অপহরণ ও খুনের সঙ্গে র??্যাবের সংশ্লিষ্টরা জড়িত দাবি করে তিনি বলেন, ২০১০ সাল থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত যতগুলো গুম, খুন, অপহরণ হয়েছে। তার শতকরা ৭০-৮০ শতাংশ লোক র‍্যাবের। ক্রসফায়ারের নামে নাটক সাজিয়ে বিচারবহির্ভূতভাবে মানুষ মারা হয়েছে। ২০১০ সাল থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত র‍্যাবে দায়িত্বে থাকা ডিজি, এডিশনাল ডিজি, ডিবির প্রধান ও ডিজিএফআই প্রধান, সকলকে আইনের আওতায় এনে শাস্তির দাবি জানাচ্ছি। মেজর (অব.) সাজ্জাদ আহম্মেদ র‍্যাবের সোর্স হিসেবে কাজ করতেন। প্রতিটি সোর্সের আমরা বিচার চাই। র??্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন- র??্যাবকে বিলুপ্তি ঘোষণা করে নতুন বাহিনী হিসেবে রুপান্তর করা হোক। বাংলার মানুষ র‍্যাবকে দেখতে চায় না। তারা একটি সন্ত্রাসী বাহিনী হিসেবে বিশ্বের দরবারে পরিচিত।

তিনি আরো বলেন, জল্লাদের আয়নাঘর কোথায় কোথায় বানানো হয়েছে, বাংলাদেশে কতটি আয়নাঘর আছে? তা আমরা জানতে পারিনি। বাংলাদেশে যদি আয়নাঘর থাকে তাহলে বিচার বিভাগ, আদালত ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী থাকার কোনো প্রয়োজন নেই। ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে এসব আয়নাঘর উন্মোচন না করা হলে ডিজিএফআই ও র??্যাবসহ সন্দেহভাজন সব আয়নাঘর ঘেরাও কর্মসূচি দেওয়া হবে এবং সব আয়নাঘর ভেঙ্গে গুড়ো গুড়ো করে দেওয়া হবে।

স্বজনহারা শারমিন আক্তার চাঁদনী বলেন, ২০১৪ সালের ২১ ডিসেম্বর রাজশাহী থেকে আমার ভাইকে র??্যাব-৫ এর সদস্যরা নিয়ে যায়। পরবর্তীতে আমরা থানায় থানায় ঘুরেও কোনো প্রতিকার পাই নাই। সবাই বলেছে, এটা অনেক ওপরের বিষয়। আর খোঁজাখুঁজি করে লাভ নাই।

অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে কিছু দাবি তুলে ধরে চাঁদনী আরো বলেন, অবিলম্বে গুম ও নিখোঁজ ব্যক্তিদের টর্চার সেল-আয়নাঘরের মতো বন্দিশালাগুলো থেকে নিঃশর্ত মুক্ত করা এবং নিজ নিজ পরিবারের কাছে ফেরত দিতে হবে।

ছেলের সন্ধান চেয়ে বৃদ্ধ বাবা মো. বাবুল হাওলাদার বলেন, আমি আমার ছেলেকে নিয়ে ঢাকার সদরঘাটে লেবারের কাজ করতাম। নৌ-পরিবহনমন্ত্রী শাজাহানের লোকদের সঙ্গে আমার ছেলে সাদি হাওলাদারের ঝগড়া হয়। সেটাকে কেন্দ্র করে ২০১৩ সালে পিরোজপুর থেকে র??্যাব আমার ছেলেকে তুলে নিয়ে যায়। অনেক খোঁজাখুঁজির পরও আমার সোনাদন (ছেলে) বাবাকে পেলাম না। কেউ আমার ছেলের সন্ধান দেয় না। যার কাছে গেছি, সবাই বলে আপনার এটা অনেক ওপর মহলের ঘটনা। খোঁজাখুঁজি করে লাভ নাই। আপনার ছেলেকে মেরে ফেলেছে। ঘটনার পর থেকে কতবার থানা পুলিশ ও র??্যাবের কাছে গেছি। কেউ আমাগো দিকে তাকায় নাই। সবাই দূর দূর করে তারিয়ে দিছে। সরকার পতনের পর থেকে অনেকেই আয়নাঘর থেরে বেরিয়ে আসছে। আমার ছেলে কই। আমার বাবার খোঁজ দিবো কে? সংবাদ সম্মেলনে বিভিন্ন স্থান থেকে নিখোঁজ হওয়া পরিবারের সদস্যরাও উপস্থিত ছিলেন।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত