ঢাকা ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে অর্থনৈতিক আলোচনায় যাচ্ছে বাংলাদেশ

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে অর্থনৈতিক আলোচনায় যাচ্ছে বাংলাদেশ

বাংলাদেশ এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে অর্থনৈতিক সহযোগিতা নিয়ে উচ্চ পর্যায়ের আলোচনার সূত্রপাত হতে যাচ্ছে, যা উভয় দেশের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। ফাইন্যান্সিয়াল টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক দুর্বলতা কাটিয়ে প্রবৃদ্ধি ও সমৃদ্ধির একটি শক্তিশালী ভিত্তি তৈরি করতে পারবে বলে যুক্তরাষ্ট্র আশাবাদী।

আগামী ১৪ ও ১৫ সেপ্টেম্বর ঢাকায় অনুষ্ঠিতব্য বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্রের অ্যাসিসট্যান্ট ট্রেজারি সেক্রেটারি ব্রেন্ট নেইম্যান এবং বাংলাদেশের সরকারের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা অংশ নেবেন। বিশেষত, এই বৈঠকটি বাংলাদেশের নতুন অন্তর্বর্তী সরকার এবং নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে প্রথম উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক হিসেবে অনেকের নজর কেড়েছে। মুহাম্মদ ইউনূস একজন বিখ্যাত অর্থনীতিবিদ ও সামাজিক উদ্যোক্তা, যার নেতৃত্বের মাধ্যমে দেশটি অর্থনৈতিক সংকট মোকাবিলায় নতুন দিকনির্দেশনা পাবে বলে আশা করা হচ্ছে।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিত্বকারী দলটিতে ট্রেজারি ডিপার্টমেন্টের কর্মকর্তাদের পাশাপাশি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, ইউএসএআইডি এবং বাণিজ্য প্রতিনিধির কার্যালয়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত থাকবেন। বৈঠকের আলোচনায় রাজস্ব, মুদ্রানীতি এবং অর্থনৈতিক সংস্কারের বিষয়গুলো স্থান পাবে বলে আশা করা হচ্ছে। মূলত বাংলাদেশ বর্তমানে যে অর্থনৈতিক সংকটের মুখোমুখি, তা কাটিয়ে উঠার জন্য এ আলোচনা এক বিশেষ ভূমিকা রাখতে পারে।

বিশ্ব অর্থনীতির সাম্প্রতিক ঘটনাবলি, যেমন করোনাভাইরাস মহামারি এবং ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ, বাংলাদেশের অর্থনীতির ওপর একটি মারাত্মক প্রভাব ফেলেছে। বিশেষ করে, জ্বালানি ও খাদ্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির কারণে দেশটি কঠিন চাপে রয়েছে। এই পরিস্থিতির মধ্যে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) থেকে ৪.৫ বিলিয়ন ডলার ঋণ নিতে বাধ্য হয়েছে বাংলাদেশ। যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সংস্কার প্রক্রিয়ায় আরো মনোযোগ দেয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে, যা বৈঠকের অন্যতম প্রধান বিষয় হিসেবে আলোচিত হতে পারে। বিশেষত, বৈঠকে মার্কিন কর্মকর্তারা বাংলাদেশের বেসরকারি খাতের প্রতিনিধিদের সঙ্গেও আলোচনা করবেন। এতে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাতের প্রতিনিধিরা থাকবেন বলে আশা করা হচ্ছে, যেহেতু এই খাতটি সাম্প্রতিক সময়ে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

বাংলাদেশের অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে তৈরি পোশাক খাত যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক আরও দৃঢ় করতে পারে, কারণ যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের অন্যতম বৃহৎ ক্রেতা। তবে, এই খাতে বর্তমান সংকট এবং পণ্যের চাহিদার ঘাটতি অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। এই আলোচনার মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সম্পর্ক আরও গভীর হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বিশেষত, যুক্তরাষ্ট্র আশা করে যে, বাংলাদেশ অর্থনৈতিক সংস্কারের মাধ্যমে নতুন পথে অগ্রসর হবে, যা দেশের দীর্ঘমেয়াদি প্রবৃদ্ধি ও উন্নয়নের জন্য সহায়ক হবে। এই বৈঠক বাংলাদেশের অর্থনীতি এবং রাজনীতির ভবিষ্যৎ নির্ধারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে, বিশেষ করে মুহাম্মদ ইউনূসের মতো একজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির উপস্থিতিতে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত