৬ লাখ টন চাল-গম আমদানির সিদ্ধান্ত

আনতে হবে ১৫ দিনের মধ্যে

প্রকাশ : ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  নিজস্ব প্রতিবেদক

চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য জি টু জি (সরকারের টু সরকার) পদ্ধতির মাধ্যমে দুই লাখ মেট্রিক টন চাল এবং চার লাখ টন গম আমদানি করবে সরকার। এ চাল ও গম আমদানির সময় ৪২ দিন থেকে কমিয়ে ১৫ দিন করা হয়েছে। এ বিষয়ে নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে অর্থনৈতিকবিষয়ক সংক্রান্ত উপদেষ্টা কমিটি। গতকাল বুধবার সচিবালয়ে অর্থ ও বাণিজ্য উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত অর্থনৈতিকবিষয়ক সংক্রান্ত উপদেষ্টা কমিটির বৈঠকে এ অনুমোদন দেয়া হয়েছে।

বৈঠক শেষে সালেহউদ্দিন আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, চাল ও গম আমদানির অনুমোদন দেয়া হয়েছে। আমরা চাই না কোনো ক্রমেই খাদ্য ঘাটতি পড়ুক। ইমেডিয়েট দরকার নেই। কিন্তু আমাদের স্টকে রাখার জন্য ২ লাখ টন চাল ও ৪ লাখ টন গম আমদানি করার জন্য অ্যাপ্রোজ করেছি।

বৈঠক সূত্রে জানা যায়, বৈঠকে খাদ্য-নিরাপত্তা নিশ্চিতে আন্তর্জাতিক দরপত্রের মাধ্যমে চাল ও গম আমদানির সময়সীমা ১৫ দিন নির্ধারণ করার প্রস্তাবে নীতিগত অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এর আগে এ সময়সীমা ছিল ৪২ দিন। অর্থাৎ দরপত্রের বিজ্ঞাপন প্রকাশের তারিখ থেকে ৪২ দিনের মধ্যে চাল বা গম সরবরাহ করার বাধ্যবাধকতা ছিল। সে সময় কমিয়ে ১৫ দিন করা হলো।

এজন্য জি টু জি ভিত্তিতে চাল ক্রয়ের নীতিগত অনুমোদন এবং পিপিআর ২০০৮-এর বিধি ৮৩ মোতাবেক আন্তর্জাতিক দরপত্রের ক্রয় প্রক্রিয়ায় সময় হ্রাস করার প্রস্তাবে নীতিগত অনুমোদন দেয়া হয়েছে। সরকারি বিতরণব্যবস্থা সচল রাখাসহ খাদ্য নিরাপত্তা বলয় সুসংহত রাখার লক্ষ্যে জি টু জি ভিত্তিতে এবং আন্তর্জাতিক উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে চাল আমদানি করা হয়। রাষ্ট্রীয় জরুরি প্রয়োজনে পিপিএ ২০০৬-এর ধারা ৬৮(১) এবং পিপিআর, ২০০৮-এর বিধি ৭৬(২) অনুসরণে প্রয়োজনের সময়ে রপ্তানিকারক দেশ থেকে জি টু জি ভিত্তিতে সর্বোচ্চ ৩ লাখ মেট্রিক টন চাল ক্রয় এবং আন্তর্জাতিক উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে প্রয়োজনের সময়ে সর্বোচ্চ ২ লাখ মেট্রিক টন চাল আমদানির লক্ষ্যে পিপিআর ২০০৮ এর বিধি ৮৩-এর (১)(ক) অনুযায়ী দরপত্র দাখিলের সময়সীমা পত্রিকা বিজ্ঞাপন প্রকাশের তারিখ থেকে ৪২ দিনের পরিবর্তে ১৫ দিন নির্ধারণ করার জন্য প্রস্তাব উপস্থাপন করা হলে কমিটি তাতে অনুমোদন দিয়েছে।

২০২৪-২৫ অর্থবছরে আন্তর্জাতিক উৎস থেকে সাড়ে ৩ লাখ মেট্রিক টন এবং অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে ১৯ দশমিক ২৩ লাখ মেট্রিক টন চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।

সভায় জি টু জি ভিত্তিতে গম কেনার নীতিগত অনুমোদন এবং পিপিআর ২০০৮-এর বিধি ৮৩ মোতাবেক আন্তর্জাতিক দরপত্রে ক্রয় প্রক্রিয়ায় সময় হ্রাস করার প্রস্তাবেও নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। সরকারি বিতরণ ব্যবস্থা সচল রাখাসহ খাদ্য নিরাপত্তা বলয় সুসংহত রাখার লক্ষ্যে জি টু জি ভিত্তিতে এবং আন্তর্জাতিক উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে গম আমদানি করা হয়।

রাষ্ট্রীয় জরুরি প্রয়োজনে পিপিএ ২০০৬-এর ধারা ৬৮(১) এবং পিপিআর, ২০০৮-এর বিধি ৭৬(২) অনুসরণে রপ্তানিকারক দেশ থেকে জি টু জি ভিত্তিতে ৪ লাখ মেট্রিক টন গম ক্রয় এবং আন্তর্জাতিক উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে ৪ লাখ মেট্রিক টন গম আমদানির লক্ষ্যে পিপিআর ২০০৮-এর বিধি ৮৩-এর (১)(ক) অনুযায়ী দরপত্র দাখিলের সময়সীমা পত্রিকা বিজ্ঞাপন প্রকাশের তারিখ হতে ৪২ দিনের পরিবর্তে ১৫ দিন নির্ধারণ করার জন্য প্রস্তাব উপস্থাপন করা হলে কমিটি তাতে নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে আন্তর্জাতিক উৎস থেকে ৭ লাখ মেট্রিক টন এবং অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে ১০ হাজার মেট্রিক টন গম সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।

২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটের খাদ্য হিসাবের সংক্ষিপ্তসার পর্যালোচনা করে দেখা যায়, আন্তর্জাতিক উৎস থেকে সাড়ে ৩ লাখ মেট্রিক টন চাল ও ৭ লাখ মেট্রিক টন গম অর্থাৎ সাড়ে ১০ লাখ টন চাল-গম আমদানির জন্য ব্যয় ধরা হয়েছে ৫ হাজার ৮০৬ কোটি টাকা। ২০২৩-২৪ অর্থ বছরে মোট আমদানির পরিমাণ ছিল ১১ লাখ মেট্রিক টন, এতে মোট ব্যয় হয়েছিল ৪ হাজার ২১৫ কোটি টাকা। আমদানির বিপরীতে চলতি অর্থবছরে অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে ১৯ লাখ ২৩ হাজার চাল সংগ্রহ করা হবে। এর পাশাপাশি গম সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১০ হাজার মেট্রিক টন। অভ্যন্তরীণ এ সংগ্রহে সরকারের খরচ হবে ৮ হাজার ৯০৭ কোটি টাকা, যা ২০২৩-২৪ অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটে ছিল ৯ হাজার ৩৭৪ কোটি টাকা।