ঢাকা ০৫ অক্টোবর ২০২৪, ২১ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

‘আনুপাতিক নির্বাচন সমর্থন করব না’

‘আনুপাতিক নির্বাচন সমর্থন করব না’

নির্বাচন অনুষ্ঠানে যত বিলম্ব হবে সমস্যা ততই বাড়বে। নয়া দিগন্তকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে এমন অভিমত ব্যক্ত করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বিরাজমান নির্বাচন পদ্ধতির পরিবর্তে আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বভিত্তিক নির্বাচনের চর্চা বাংলাদেশে কখনো হয়নি। এটা এই দেশে কাজে দেবে না। এটা নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষার প্রয়োজন রয়েছে। আমরা এটাকে সমর্থন করব না। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর রাজনীতির অত্যন্ত পরিচিত ও জনপ্রিয় মুখ। বিএনপির সংকটকালীন এবং সংকট উত্তরণের মহাসচিব হিসেবে তাকে অনেকে বিবেচনা করে থাকেন। স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার আমলে তিনি একাধিকবার কারাগারে কাটিয়েছেন। প্রায় এক দশক ধরে মহাসচিবের দায়িত্ব পালন করছেন তিনি। এই দীর্ঘ সময়টা রাজনীতি তথা বিএনপির জন্য ছিল খুবই কণ্টকাকীর্ণ। কঠিন এই সময়ে তিনি অত্যন্ত বিশ্বস্ততা ও দক্ষতার সাথে দলের নেতৃত্ব দিয়েছেন। দীর্ঘ লড়াই-সংগ্রামের পর শেখ হাসিনার ফ্যাসিবাদী শাসনের অবসানে এখন নতুন বাংলাদেশ বিনির্মানে স্বপ্ন দেখছেন তিনি। তিনি আরো বলেন, সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে এত বেশি জঞ্জাল রাষ্ট্রের ভেতরে বিগত সরকার করে গেছে যে, জঞ্জালগুলো না সরিয়ে তো সুষ্ঠু নির্বাচন করা যাবে না। আমরা এখন ভেতরে ঢুকে ঢুকে দেখছি একেবারে সব জায়গায় জঞ্জাল। একটি ডিপ স্টেট তৈরি করে ফেলেছে সব জায়গায়। সব জায়গায় বিষাক্ত অবস্থা তৈরি করে ফেলেছে।

এখন সংস্কারগুলো ঘোষণা করেছে এই সরকার। আমরাও দু’বছর আগে ৩১ দফা দিয়ে এই সংস্কারগুলো চেয়েছি। সংস্কারগুলো করতে যাদের দেয়া হয়েছে, তারাও যোগ্য মানুষ। একই সাথে জনগণ কি চায়, পলিটিক্যাল পার্টিগুলো কী চায়, তাদের কী প্রস্তাব, সেগুলো জানতে হবে। একটি ঐকমত্য তৈরি করতে হবে। ঐকমত্যের ভিত্তিতে আমরা সংস্কার গুলো চাই, সবাই চায়। সংস্কারগুলো আবার পরে সংবিধানে আনতে হবে। পরিবর্তিত বিষয়গুলো সংবিধানে আনতে হবে। আর সংবিধানে আনতে হলে একটা নির্বাচন দরকার হবে, সংসদ দরকার হবে। সে জন্য দ্রুত নির্বাচন দিতে হবে। আমরা যৌক্তিক সময়ের কথা বলেছি। যৌক্তিক সময়টা অস্পষ্ট রেখেছি। কারণ নির্বাচন যত দ্রুত করবেন তত সমস্যা কম হবে। নির্বাচন যত বিলম্বিত করবেন তত সমস্যা আরো বাড়বে। যারা বিপ্লবের বিরুদ্ধে, পরিবর্তনের বিরুদ্ধে, ফ্যাসিবাদের পক্ষে তারা কিন্তু সুযোগটা ব্যবহার করতে চাইবে।

রাষ্ট্র সংস্কার প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, নির্বাচন প্রক্রিয়া, প্রশাসন ও বিচার বিভাগ- এই তিনটাকে যদি আপনি সংস্কার করে ফেলতে পারেন, নির্বাচনের অনুকূল পরিবেশ তৈরি করতে পারেন, যাকে আমরা লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড বলছি, উপযুক্ত পরিবেশ বলছি- সেটি করে ফেলতে পারলে ইলেকশনটা খুব সুন্দরভাবে করা যাবে। নির্বাচন হয়ে গেলে পার্লামেন্ট হয়ে গেলে সেখানে সরকারের বাকি যে বিষয়গুলো থাকবে সেখানে প্রস্তাব এলে, যদি আমরা সংসদে থাকি তবে সেই প্রস্তাব নিয়ে আস। নির্বাচন নিয়ে বিএনপির প্রস্তুতি সম্পর্কে মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা কিন্তু সব সময় নির্বাচন করার জন্য প্রস্তুত থাকা একটা দল। কারণ এই দল ক্ষমতায় যাওয়ার দল, ক্ষমতায় যাবে। আমরা রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব নিতে চাই। এক একটা আসনে আমাদের প্রার্থী সব সময় থাকে পাঁচজন-দশজন, সে ক্ষেত্রে আমাদের সমস্যা হয় না। বিএনপি তো এমন দল না যে নির্বাচনের জন্য গোছাতে হবে। আন্দোলন মানেই দল গোছানো। আন্দোলন-সংগঠন-নির্বাচন- তিনটি একসূত্রে গাথা।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত