ঢাকা ১৩ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ কার্তিক ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

৬ কোটি টাকা ঘুষ না পেয়ে ফাঁসানোর অভিযোগ

বেনজীরের বিরুদ্ধে মামলা

বেনজীরের বিরুদ্ধে মামলা

ছয় কোটি টাকা ঘুষ না পেয়ে কোকেন মামলায় ফাঁসানোর অভিযোগে সাবেক র‌্যাব মহাপরিচালক (পরে আইজিপি) বেনজীর আহমেদসহ তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। গত বুধবার চট্টগ্রাম মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ জাকির হোসেন গালিবের আদালতে মামলাটি করেন খান জাহান আলী লিমিটেডের চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদের ছেলে মুহাম্মদ নিবরাস। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) তদন্ত করে প্রতিবেদন দেওয়ার আদেশ দিয়েছেন।

মামলার বাকি দুই আসামি হলেন- র‌্যাব সদর দফতরের সাবেক এডিজি মেজর জিয়াউল আহসান ও চট্টগ্রাম র‌্যাব-৭-এর সাবেক এএসপি মহিউদ্দিন ফারুকী। বাদীপক্ষের আইনজীবী চট্টগ্রাম মহানগর আদালতের সাবেক স্পেশাল পিপি আবদুস সাত্তার এ তথ্য নিশ্চিত করেন। মামলার এজাহারে বলা হয়, বাদীর বাবা খান জাহান আলী লিমিটেডের চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদের কাছে বিবাদীরা বিভিন্ন সোর্সের মাধ্যমে ছয় কোটি টাকা ঘুষ দাবি করেন। ঘুষ না দেয়ায় পরিকল্পিতভাবে বেনজীর আহমদ ও সঙ্গীদের যোগসাজশে বন্দর থানায় করা মামলায় নূর মোহাম্মদের নাম অন্তর্ভুক্ত করেন। অথচ এর আগে ঘটনার সঙ্গে জড়িত না থাকায় এবং বাদীর বিরুদ্ধে কোনোরূপ অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বন্দর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) বদরুল মামুন ও সিএমপির সিনিয়র সহকারী পুলিশ কমিশনার ডিবি (দক্ষিণ) কামরুজ্জামান বাদীর বাবাকে এ মামলার দায় থেকে অব্যাহতি প্রদানের সুপারিশ করেন। বাকি আট আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। পরে মামলাটি অধিকতর তদন্তের জন্য প্রেরণ করা হলে তৎকালীন র‌্যাবের মহাপরিচালক বেনজীর আহমদের ইন্ধনে এবং নির্দেশে র‌্যাব-৭-এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মহিউদ্দিন ফারুকী মামলার তদন্তভার পান। ২০১৬ সালের ১৪ জানুয়ারি মহিউদ্দিন ফারুকী ফোন করে নূর মোহাম্মদকে মামলার বিষয়ে কথা বলার জন্য র‌্যাব কার্যালয়ে ডাকেন। দেখা করার জন্য ওই দিন পতেঙ্গা থানাধীন র‌্যাব কার্যালয়ে গেলে বাদীর বাবাকে তার অফিস কক্ষে নিয়ে যান। তখন কথার ফাঁকে বেনজীর আহমদের জন্য পাঁচ কোটি টাকা এবং তার জন্য এক কোটি টাকাসহ মোট ৬ কোটি টাকা ঘুষ দাবি করেন। র‌্যাব কার্যালয়ের মহিউদ্দিন ফারুকীর চাহিদা মোতাবেক ঘুষ না দেয়ায় সেদিন তার সঙ্গে অমানবিক আচরণ করেন। ছয় কোটি টাকা ঘুষ আদায়ের জন্য বন্দর থানার মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে গত ২০১৬ সালের ১৫ জানুয়ারি আদালতে সোপর্দ করেন। বারবার রিমান্ডে এনে ঘুষ দাবি করে মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন করেন। মামলার বাদী মুহাম্মদ নিবরাস দাবি করেন, আমার বাবা কোকেন আমদানির বিষয়ে কিছুই জানতেন না। এর সঙ্গে জড়িতও নন। শুধুমাত্র বেনজীর আহমেদসহ আসামিদের চাহিদা মতো ছয় কোটি টাকা ঘুষ না দেয়ার কারণে এ মামলায় ফাঁসানো হয়েছে। তাদের নির্যাতনের কারণে আমার বাবা শেষ পর্যন্ত দেশ ছেড়ে কানাডায় চলে যান।

২০১৫ সালের ৬ জুন পুলিশের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে কোকেন সন্দেহে চট্টগ্রাম বন্দরে সূর্যমুখী তেলের চালান জব্দ করে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতর। এরপর ২৭ জুন তেলের চালানের ১০৭টি ড্রামের মধ্যে একটি ড্রামের নমুনায় কোকেন শনাক্ত হয়। বলিভিয়া থেকে আসা চালানটির প্রতিটি ড্রামে ১৮৫ কেজি সূর্যমুখী তেল ছিল। পরে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি), মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের রাসায়নিক পরীক্ষাগারসহ চারটি পরীক্ষাগারে তেলের চালানের দুটি ড্রামের নমুনায় কোকেন শনাক্ত হয়। তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, এ চালান উরুগুয়ের মন্টেভিডিও থেকে জাহাজীকরণ হয়। পরে তা সিঙ্গাপুর হয়ে চট্টগ্রাম বন্দরে আসে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত