ঢাকা ১৮ অক্টোবর ২০২৪, ৩ কার্তিক ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

দুবাই থেকে ফিরে গেলেন

দেশে ফেরা হলো না সাকিবের

দেশে ফেরা হলো না সাকিবের

টেস্ট ক্যারিয়ারের শেষ ম্যাচটি প্রিয় আঙিনা মিরপুরে খেলতে চেয়েছিলেন সাকিব আল হাসান। দেশের সর্বকালের সেরা ক্রিকেটারের চাওয়া পূরণ হতে যাচ্ছিল। এই অলরাউন্ডারকে নিয়েই দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ঢাকা টেস্টের স্কোয়াড ঘোষণা করেছিল বিসিবি। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে দেশে ফেরার কথা ছিল সাকিব আল হাসানের। কিন্তু গত কয়েক দিনের পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে সবকিছু জটিল হয়ে ওঠায় আপাতত নিরাপত্তার স্বার্থে সাকিবকে আপাতত দেশে আসতে নিষেধ করা হয়েছে। ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বিসিবি প্রতিনিধিদের এক মিটিং শেষে সাকিবকে এ সিদ্ধান্ত জানানো হয়েছে।

তাই সম্ভাবনা জাগলেও মিরপুর টেস্টে সাকিবের খেলা হচ্ছে না বলেই ধরা যায়। গত কিছুদিন ধরে সাকিব বিরোধী একটি পক্ষ তাকে মিরপুর টেস্টে খেলতে না দেয়ার হুমকি দিচ্ছিল। সেই হুমকির কারণেই সাকিবের দেশে ফেরা আটকে গেছে। তাহলে বলাই যায়, দেশের মাঠে খেলে সাকিবের বিদায় নেয়া হচ্ছে না।

গত মধ্যরাত থেকেই সাকিবের দেশে ফেরা নিয়ে তৈরি হয় সংশয়। তার দেশে ফেরার খবরে গত কয়েকদিন ধরে শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামের আশপাশে আন্দোলন করছেন ছাত্র-জনতা। সাকিবের বিরোধিতা করে নানা স্লোগান দিয়েছেন। বাঁহাতি এই ক্রিকেটারকে যেন দেশে আসতে না দেয়া হয়, সে দাবিও জানিয়েছেন তারা। এদিকে সাকিবকে স্বৈরাচারের দোসর বলে উল্লেখ করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। গতকাল বুধবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা সাকিবের কুশপুতুল দাহ করেছেন। রাজু ভাস্কর্যে ‘ক্রিকেটপ্রেমী জনতা’ ব্যানারে এই কর্মসূচি পালন করেন শিক্ষার্থীরা। গতকাল বৃহস্পতিবার সাকিবের বিরুদ্ধে স্লোগান-ফেস্টুনে উত্তাল হয়ে উঠেছে মিরপুর শেরে বাংলা। তাকে মিরপুর টেস্টের স্কোয়াড থেকে সাকিবকে বাদ দেয়ার দাবি উঠেছে। এই অবস্থায় সাকিব নিজের দেশে ফেরার ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কিত। ক্রিকেট বিষয়ক ওয়েবসাইট ‘ক্রিকইনফো’কে সাকিব জানিয়েছেন সেই অনিশ্চয়তার কথা। সাকিব বলেন, ‘পরবর্তী সময়ে কোথায় যাব, জানি না। তবে এটা প্রায় নিশ্চিত যে, আমি দেশে ফিরছি না।’

দুবাই থেকে বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ সময় বিকাল ৫টার ঢাকামুখী ফ্লাইট ছিলো সাকিবের। অপেক্ষায় ছিলেন তিনিও। পরে সেই ফ্লাইট বাতিল করে দিয়েছেন তিনি। ক্রিকেটবিষয়ক ওয়েবসাইট ‘ক্রিকইনফো’কে সাকিব বলেন, ‘পরবর্তী সময়ে কোথায় যাব, জানি না। তবে এটা প্রায় নিশ্চিত যে, আমি দেশে ফিরছি না।’ দেশে না ফিরে এখন যুক্তরাষ্ট্রে ফিরে যাবেন দেশের ক্রিকেটের সর্বকালের সেরা তারকা।

সাকিবের দেশে ফেরা নিয়ে জল্পনার শুরু আগস্টে। ক্ষমতাচ্যুত বাংলাদেশ আওয়ামী লিগের একজন সংসদ সদস্য ছিলেন সাকিব। জুলাই-আগস্টে সংগঠিত গণ-অভ্যুত্থানে দেশের উত্তাল পরিস্থিতিতে জাতীয় তারকা হিসেবে সাকিবের সমর্থন আশা করছিল দেশবাসী। তবে জাতীয় দলের এই তারকা ক্রিকেটার ছিলেন নীরব।

সারা দেশের উত্তাল পরিস্থিতিতে চারিদিকে যখন রক্তাক্ত, সাকিব তখন কানাডায় পরিবার নিয়ে ঘুরতে বের হয়েছিলেন। সাফারিতে গিয়ে মাই ডে-তে একটি পোস্টে সাকিব লিখেছিলেন, টরেন্টোতে একটি চমৎকার দিন কাটালাম। এই পোস্টের সূত্র ধরে তার উপর ক্ষোভ জমতে থাকে দেশবাসীর। সাকিবের নামে হয়েছে মামলাও। মোহাম্মদপুরে একজন গার্মেন্টস কর্মী হত্যা মামলায় আসামি করা হয় সাকিবকে। মামলার ঝামেলা মাথায় নিয়েই ভারতের বিপক্ষে খেলেছেন সাকিব। সিরিজের মাঝপথেই বিদায় জানিয়েছেন টি-টোয়েন্টিকে। সেই সঙ্গে দেশের মাটিতে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টেস্ট খেলে নিতে চেয়েছেন অবসর।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত