মাহে রমজান উপলক্ষে স্থানীয় চাহিদা মেটাতে এলএনজি, সার, সয়াবিন তেল, চিনি ও ছোলা আমদানি করার কয়েকটি প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে সরকার। গতকাল বুধবার অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আম্মেদের সভাপতিত্বে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির (এসিসিজিপি) সভায় এই অনুমোদন দেয়া হয়। বৈঠক শেষে ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ সাংবাদিকদের জানান, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের কোনো ঘাটতি হতে দেবে না। তিনি বলেন, বাজারে কোনো ঘাটতি না থাকায় আমরা চারটি পণ্য আমদানির প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছি। বিশেষ করে রমজানকে সামনে রেখে ছোলা আমদানির অনুমোদন দেয়া হয়েছে। শিগগিরই আমরা একই কারণে আমদানির দিকে যাব, যোগ করেন তিনি। তিনি আরও জানান, আর্থিক সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও সরকার এসব নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের পর্যাপ্ত সরবরাহ নিশ্চিত করতে চেষ্টা করবে, যাতে জনগণের ভোগান্তি না হয়। জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের দুটি পৃথক প্রস্তাব অনুযায়ী, রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন পেট্রোবাংলা লিমিটেড টেন্ডারের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক স্পট মার্কেট থেকে দুটি কার্গো এলএনজি (তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস) আমদানি করবে। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক এক্সিলারেট এনার্জি এলপি ৬৮৬ কোটি ৩৮ লাখ টাকায় ৩৩ লাখ ৬৬ হাজার এমএমবিটিইউ (মিলিয়ন ব্রিটিশ থার্মাল ইউনিট) সমন্বিত একটি এলএনজি কার্গো সরবরাহ করবে। একই কোম্পানি ৬৬৯ কোটি ৫০ লাখ টাকায় আরেকটি কার্গো সরবরাহ করবে, যেখানে প্রতি এমএমবিটিইর মূল্য হবে ১৪ টাকা ৬৫ পয়সা। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের তিনটি পৃথক প্রস্তাবে অনুমোদন দেয়া হয়েছে। ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) ১০১ কোটি ৯৯ লাখ টাকায় ১০ হাজার মেট্রিক টন ছোলা আমদানি করবে। এর মধ্যে অস্ট্রেলিয়ার ডিএসএল প্যাসিফিক প্রাইভেট লিমিটেড থেকে ৪ হাজার মেট্রিক টন এবং অস্ট-গ্রান্ট পিটিওয়াই লিমিটেড ৬ হাজার মেট্রিক টন ছোলা সরবরাহ করবে।
টিসিবি স্থানীয় বসুন্ধরা মাল্টি ফুড প্রোডাক্টস লিমিটেড থেকে ৫৩ কোটি ১৮ লাখ টাকায় ৩২ লাখ ৬০ হাজার লিটার সয়াবিন তেল কিনবে। একইভাবে, সিটি সুগার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের কাছ থেকে ৬০ কোটি ৪৬ লাখ টাকায় ৫ হাজার মেট্রিক টন চিনি কিনবে, যেখানে প্রতি কেজি চিনির দাম হবে ১২০ টাকা ৯২ পয়সা।
শিল্প মন্ত্রণালয়ের দুটি পৃথক প্রস্তাবেও অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ কর্পোরেশন (বিসিআইসি) কাতারের মুনতাজার থেকে ১৩১ কোটি ৭৬ লাখ টাকায় ৩০ হাজার মেট্রিক টন বাল্ক দানাদার ইউরিয়া সার আমদানি করবে, যার প্রতি টনের মূল্য ৩৬৬ মার্কিন ডলার। এছাড়া, বিআইসিআই সৌদি আরবের সাবিক এগ্রি-নিউট্রিয়েন্টস কোম্পানি থেকে ১৩৭ কোটি ৭৬ লাখ টাকায় আরও ৩০ হাজার মেট্রিক টন বাল্ক দানাদার ইউরিয়া আমদানি করবে, যার প্রতি মেট্রিক টনের দাম হবে ৩৮২ দশমিক ৬৭ মার্কিন ডলার।
