ঢাকা ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

বাকশালী সংবিধানের অজুহাতে সংস্কারে দেরি কেন?

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে রিজভীর প্রশ্ন
বাকশালী সংবিধানের অজুহাতে সংস্কারে দেরি কেন?

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে প্রশ্ন রেখে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, বর্তমান সংবিধান তো বাকশালী সংবিধান, এই সংবিধান তো কর্তৃত্ববাদী সংবিধান। তাহলে এই সংবিধানের অজুহাত দিয়ে কেন আপনারা বিভিন্ন পদক্ষেপ নিতে, সংস্কার করতে দেরি করছেন? গতকাল শনিবার সকালে রাজধানীর ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার ইনস্টিটিউশনে জাতীয়তাবাদী কৃষক দলের প্রশিক্ষণ কর্মশালার উদ্বোধনকালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

রুহুল কবির রিজভী বলেন, আপনারা তো বিপ্লবের মাধ্যমে তৈরি হওয়া একটি সরকার। এই সরকারের সবকিছু যে সংবিধান অনুযায়ী হতে হবে সেটার তো কোনো দরকার নেই। কারণ বিপ্লবের মধ্য দিয়ে যে সরকার গঠিত হয় সেই সরকারকে নতুন করে সবকিছু করতে হয়; নতুন করে সব কিছু রাখতে হয়, যেন গণতন্ত্রের ইনস্টিটিউশনগুলো ডেভেলপ করে। সেই প্রচেষ্টার জন্য আপনাদের অনেক কাজ করতে হবে, যেটা বর্তমান সংবিধানের মধ্যে সংবিধিবদ্ধ নয়। এটা তো শেখ হাসিনার সংবিধান। শেখ হাসিনা এই সংবিধানকে কাটাছেড়া করে এমন একটি সংবিধান তৈরি করেছে; এই সংবিধান তো বাকশালী সংবিধান, এই সংবিধান তো কর্তৃত্ববাদী সংবিধান। তাহলে এই সংবিধানের অজুহাত দিয়ে কেন আপনারা বিভিন্ন পদক্ষেপ নিতে সংস্কার করতে দেরি করছেন?

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব বলেন, আপনারা তো নিজেরাও সংবিধানের আওতায় ক্ষমতায় আসেননি, কিন্তু জনসমর্থন আপনাদের প্রতি রয়েছে। আপনাদের সবকিছু দ্রুতগতিতে পদক্ষেপ নিতে হবে। আপনাদের কাজের গতির তীব্রতা যদি কমে যায় তাহলে একাউন্টটিবিলিটির ক্ষেত্রে জনগণ মনে করবে আপনারা সঠিক কাজ করছেন না। রিজভী বলেন, শেখ হাসিনা গায়ের জোরে তার প্রভুদেরকে সন্তুষ্ট করার জন্য একের পর এক কাজ করেছেন। শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান সংবিধানে আল্লাহর ওপর বিশ্বাস এবং আস্থা সংযুক্ত করেছিলেন। এটা কি কোনো মানুষ অস্বীকার করে? আর শেখ হাসিনা যা করেছেন সবকিছুই তো গায়ের জোরে করেছেন। জিয়াউর রহমান ছিলেন একজন আধুনিক সেনাপতি, একজন আধুনিক রাষ্ট্রনায়ক, একজন আধুনিক রাষ্ট্রপতি। তিনি দেশের মানুষের ন্যূনতম চেতনাকে সম্মান দেখিয়ে সংবিধানে সংযুক্ত করেছিলেন আল্লাহর ওপর আস্থা এবং বিশ্বাস।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উদ্দেশ্যে বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, আমাদের দেশকে যারা পছন্দ করে না, যারা শুধুমাত্র শেখ হাসিনাকে পছন্দ করেন, এই ধরনের কিছু বিদেশি শক্তি বাংলাদেশের সেনাবাহিনী শক্তিশালী হোক, বাংলাদেশের সামরিক বাহিনী বিশ্বের একটি আধুনিক চৌকস বাহিনীতে পরিণত হোক- এটা চায় না। বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে টিকিয়ে রাখার জন্য যেসব প্রতিষ্ঠান যেমন- বিচার বিভাগ, নির্বাচন কমিশন, পার্লামেন্ট, প্রশাসন ভালো হোক, প্রাণবন্ত হোক, এটা তারা চায় না। চায় না বলেই শেখ হাসিনা শুধুমাত্র তাদের খুশি করার জন্য একের পর এক দেশবিরোধী কাজগুলো করে গেছেন। রিজভী বলেন, শেখ হাসিনা তার মন্ত্রীদের এবং তার পছন্দের সরকারি কর্মকর্তাদের বলেছিলেন তোমরা খাও দাও ফূর্তি করো, আমি কি করছি এগুলো দেখার দরকার নেই। আর যারা আমার বিরুদ্ধে কিছু করবে তাদের তোমরা যেভাবে পার, দমন কর। তাদের আয়নাঘরে নিয়ে যাও, তাদের গুম করো, তাদের খুন করো, তাদের ক্রসফায়ার দাও। যেভাবেই হোক দমন করো। তোমাদের কেউ কিছুই বলবে না। এভাবেই তো তিনি দেশ চালিয়েছেন। এই ধরনের একজন নরঘাতক তাকে এদেশের ছাত্র-জনতা এবং গণতন্ত্রকারী মানুষ বিদায় করেছে। সেই পরিস্থিতির আবার পুনরাবৃত্তি হোক, এইটা তো এদেশের মানুষ আর চায় না। প্রশিক্ষণ কর্মশালায় কৃষকদলের সভাপতি কৃষিবিদ হাসান জাফির তুহিন, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মোশারফ হোসেনসহ কৃষকদলের কেন্দ্রীয় এবং তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত