বাংলাদেশে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের কর্মকাণ্ড নিয়ে প্রশ্ন না করার বিধান রেখে একটি নতুন অধ্যাদেশ জারির প্রক্রিয়া শেষ পর্যায়ে রয়েছে। ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন উপদেষ্টা পরিষদ সম্প্রতি ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকার অধ্যাদেশ, ২০২৪’ শিরোনামের এই খসড়ায় অনুমোদন দিয়েছে। খসড়াটি এখন গেজেট আকারে প্রকাশের অপেক্ষায় রয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। তবে ঠিক কত দিনের মধ্যে অধ্যাদেশটি জারি হতে পারে, সেটি এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। প্রয়োজনীয় সবদিক মাথায় রেখেই খসড়াটি প্রস্তুত করা হয়েছে। যতটুকু জানি, খুব শিগগিরই সেটি গেজেট আকারে প্রকাশ করা হতে পারে, গণমাধ্যমকে বলেছেন সরকারের ঊর্ধ্বতন একজন কর্মকর্তা। সরকারের পক্ষ থেকে এই অধ্যাদেশটি নিয়ে স্পষ্ট করে কিছু বলা না হলেও সিনিয়র আইনজীবীরা বলছেন সরকারের একটি ‘আইনি বৈধতা’ দেয়ার জন্যেই এই অধ্যাদেশটি করা হচ্ছে। অধ্যাদেশে উপদেষ্টা নিয়োগের কিছু শর্তও যুক্ত করা হয়েছে।
উপদেষ্টা হতে পারবেন না যারা : প্রস্তাবিত অধ্যাদেশে বলা হয়েছে যে, বাংলাদেশের নাগরিক না হলে এবং বয়স ২৫ বছর পূর্ণ না হলে তিনি উপদেষ্টা হতে পারবেন না। কোনো বিদেশি রাষ্ট্রের নাগরিকত্ব অর্জন কিংবা কোনো বিদেশি রাষ্ট্রের প্রতি আনুগত্য ঘোষণা বা স্বীকার করলেও তিনি শপথ নিতে পারবেন না। একই ভাবে, ব্যক্তি যদি কোনো আদালত কর্তৃক অপ্রকৃতিস্থ বলে ঘোষিত হন বা দেউলিয়া ঘোষিত হওয়ার পর দায় থেকে অব্যাহতি না পেয়ে থাকেন, তাহলেও তিনি উপদেষ্টার পদে বসতে পারবেন না। আর নৈতিক স্খলনজনিত কোনো ফৌজদারি অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হয়ে অন্তত দুই বছর কারাদণ্ডে দণ্ডিত হলে এবং মুক্তি পাওয়ার পর পাঁচ বছর পার না হলে উপদেষ্টা ও প্রধান উপদেষ্টার পদে যেতে পারবেন না। বাংলাদেশ কোলাবোরেটরস (স্পেশাল ট্রাইব্যুনাল) অর্ডার, ১৯৭২ এর অধীন কোনো অপরাধের জন্য দণ্ডিত হলেও তিনি উপদেষ্টা হতে পারবেন না। অর্থাৎ রাজাকার বা যুদ্ধাপরাধের দায়ে দণ্ডপ্রাপ্ত কেউ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারে থাকতে পারবেন না। পাশাপাশি উপদেষ্টার পদে বসতে হলে ব্যক্তিকে ‘ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন এবং স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের জনপ্রতিনিধি নির্বাচনে প্রার্থী হবেন না’- মর্মে সম্মতি দিতে হবে। সূত্র : বিবিসি বাংলা