বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময় বিপুল পরিমাণ টাকা বিদেশে পাচার হওয়ার কথা উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, প্রবাসীরা কষ্ট করে টাকা রোজগার করে আনেন, দুর্ভাগ্য হলো দেশের এই টাকা তারা পাচার করেছে। গতকাল সোমবার সকালে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অভিবাসী শ্রমিকদের জন্য একটি বিশেষ লাউঞ্জ উদ্বোধনকালে তিনি এ কথা বলেন।
ড. ইউনূস বলেন, আপনাদের দিয়ে তো দেশ চলে। আপনাদের মাথায় করে রাখা উচিত। অপরাধী করে রাখবে কেন? এরকম ভাবখানা যে, তোমরা টাকা রোজগার করতেছ আমাদের কী? তোমাদের ব্যাপার, আমাদের কী? প্রবাসীরা টাকা যেটা রোজগার করছে, সেটা তো বাংলাদেশের জন্য রোজগার করছে। প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আপনারা কষ্ট করে টাকাটাও রোজগার করে আনেন, দুর্ভাগ্য হলো দেশের এই টাকা একজন পাচার করছে। এটাই হলো আমাদের দুর্ভাগ্য। সেখান থেকে তো আমাদের ফিরে আসতে হবে, আমাদের দেশের টাকা যেন দেশের কাজে লাগে। এর আগে প্রবাসী শ্রমিকদের জন্য শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে একটি বিশেষ লাউঞ্জ উদ্বোধন করেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। উদ্বোধন শেষে তিনি বলেন, আমাদের প্রবাসী শ্রমিকরা দেশ গড়ার কারিগর। জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে তারা বড় ভূমিকা পালন করেছিলেন। আমরা তাদের কাছে সবসময় কৃতজ্ঞ। আমরা বিশ্বাস করি, এই লাউঞ্জ তাদের ভ্রমণকে সহজ করবে। ড. ইউনূস আরও বলেন, বহুদিন পরে আমরা নতুন যাত্রা শুরু করলাম। তিন মাস হয়ে গেছে আমাদের। আমাদের দুজনের মধ্যে প্রতিযোগিতা হচ্ছিল, আসিফ নজরুল ও আমার মধ্যে। কে এটা তাড়াতাড়ি করতে পারে। দুজন তাড়াতাড়ি করার জন্য আজকে এটা আমরা উদ্বোধন করতে পারলাম। এটার প্রধান কারণ, আমরা দুজনেই আসা-যাওয়ার পথে এটা অনুভব করেছি। বিমানবন্দর আমাদের সবাইকে ব্যবহার করতে হয়। আমাকেও প্রায় আসা-যাওয়া করতে হয়। খুব মনে কষ্ট হয় যখন দেখি প্রবাসীদের যাওয়া-আসা। প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আপনাদের যে প্রাপ্য, যে সম্মান, সেই সম্মান যেন জাতি দিতে পারে। সেই সম্মান দেয়ার জন্য আজকের প্রথম পদক্ষেপ হচ্ছে এটা। আমি আশা করি, আরও বহু রকমের পদক্ষেপ নেয়া হবে, যাতে করে আপনারা এখানে এসে মনে করেন যে, আপনারা শান্তিতে আছেন, বাড়িতেই আছেন। পাসপোর্ট বিষয়ে তিনি বলেন, পাসপোর্ট ছাপানোর কথা বলছেন, পাসপোর্ট ছাপাতে হবে কেন? এখন ই-পাসপোর্ট হবে। ছাপার দরকার নেই। পাসপোর্ট আপনার টেলিফোনে চলে আসবে। অফিসে যেতে হবে না। আমরা এখন সরকারি অফিসে যেতে চাই না। আমাদের বাড়িতে এসে দিয়ে যাবে। সরকারি অফিস মানে হলো যন্ত্রণা। এই যন্ত্রণার মধ্যে আমি কেন যাব।