আমনের ফসলহানী কাটাতে বিদেশ থেকে চাল আমদানি

খাদ্য উপদেষ্টা

প্রকাশ : ১২ নভেম্বর ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  নিজস্ব প্রতিবেদক

আমনের ফসলহানী কাটাতেই বিদেশ থেকে চাল আমদানির কথা জানিয়ে নতুন খাদ্য উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার বলেছেন, নতুন করে যেন কোনো প্রকৃতিক দুর্যোগ না হয়, সেই আশাই তিনি করছেন। খাদ্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নেয়ার পর গতকাল সোমবার সচিবালয়ে প্রথম অফিসে এসে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ কথা বলেন উপদেষ্টা।

জুলাই-অগাস্টে বন্যার ক্ষতির কথা তুলে ধরে আলী ইমাম মজুমদার বলেন, আমনে কিছুটা ফসলহানী হয়েছে। সেটা মোকাবিলায় কী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে, আমি সেটা অবগত হলাম। আমার মনে হয় সঠিক পথেই আছি। সেই গতি আরো বাড়বে ইনশাআল্লাহ। গতকাল সোমবার নতুন তিন উপদেষ্টার শপথগ্রহণের পর দপ্তর পুনর্বণ্টনে আলী ইমাম মজুমদারকে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেয়া হয়। তার আগে খাদ্য মন্ত্রণালয় প্রধান উপদেষ্টার অধীনে ছিল। আর আলী ইমাম মজুমদার প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে সংযুক্ত ছিলেন। খাদ্য উপদেষ্টা বলেন, আমাদের ফসল প্রকৃতিনির্ভর। ১৯৭০ সালের ১২ নভেম্বর, আবার ২০০৭ সালের নভেম্বরে সিডর হয়েছিল, আমরা দোয়া করি, বড় ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হয়। তাহলে আশা করছি, আমনে ফসলহানী হয়েছে, সেটা কাটিয়ে উঠতে পারব। এটা পূরণের জন্য বিদেশ থেকেও আমদানির ব্যবস্থা করা হয়েছে। সেগুলো পাইপলাইনে আছে। বন্যা, আন্দোলন ও ক্ষমতার পালাবদলে সরবরাহ ঘাটতিতে চালের দাম ক্রমাগত চড়তে থাকার প্রেক্ষাপটে নভেম্বরের শুরুতে চাল আমদানিতে ২ শতাংশ অগ্রিম আয়কর রেখে বাকি আমদানি শুল্ক ও নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক প্রত্যাহার করা হয়। তাতে প্রতি কেজি চাল আমদানির খরচ ৯ টাকা ৬০ পয়সা কমবে এবং বাজারে চালের সরবরাহ বৃদ্ধি পাবে; সেই সঙ্গে ভোক্তা পর্যায়ে চালের দাম সহনীয় পর্যায়ে থাকবে এবং সাধারণ ক্রেতার জন্য তা সহজলভ্য হবে বলে আশা প্রকাশ করে এনবিআর। খাদ্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে কোন কাজে অগ্রাধিকার থাকবে জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, আপনার পকেটে ১০ হাজার টাকা থাকতে পারে; কিন্তু খাদ্য না থাকলে আপনি দুই দিনও বাঁচবেন না, মরে যাবেন। কৃষক ফসল ফলায়, তাদের সবচেয়ে বড় অবদান। বেসরকারি খাত খাদ্যশস্য আমদানি করে, এটাকেও আমরা উৎসাহিত করি। কিছু ঘাটতি মোকাবিলায় সরকারিভাবে আমদানি করে মজুদ রাখা হয়। পরে যেন আমরা মার্কেটে ইনজেক্ট করতে পারি। বেসরকারিভাবে খাদ্য আমদানি সকল ট্যাক্স উঠিয়ে দেয়া হয়েছে। সরকারিভাবেও আমদানি বেশ কিছু পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।

এক প্রশ্নের উত্তরে আলী ইমাম মজুমদার বলেন, আমরা খাদ্য মজুত করে মার্কেটে ইনজেক্ট করি যেন প্রাইস ঠিক থাকে। ওএমএসের মাধ্যমে আমরা যখন বিক্রি করছি, তখন মার্কেটের ওপর চাপ কমছে। মজুতদারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ হচ্ছে। এগুলো চলমান আছে এবং জোরদার করা হবে। গত দুই তিন দিনে চালের দাম আর বাড়েনি দাবি করে খাদ্য উপদেষ্টা বলেন, এর আগে কিছুটা বেড়েছিল। আমন ধান কাটা শুরু হয়ে গেছে। উত্তরাঞ্চল আমাদের ফুড বাস্কেট। উত্তরাঞ্চলে আমন ধান নিরাপদে তুলতে পারলে, খাদ্য সংকট হবে না। রাজনৈতিক দলগুলো প্রতিদিনই নির্বাচনের কথা বলছে, অন্তর্বর্তী সরকার তাতে চাপ অনুভব করছে কি না, জানতে চাওয়া হয়েছিল সাবেক আমলা আলী ইমাম মজুমদারের কাছে। জবাবে তিনি বলেন, এ বিষয়ে আমাদের মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন। রাজনৈতিক দলগুলোর কনফিডেন্স আছে, তারা সরকারের সঙ্গে আলোচনায় রয়েছেন। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সরকারের যোগাযোগ আছে, ডায়ালগ আছে।