সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বাণিজ্য উপদেষ্টা ড. হোসেন জিল্লুর রহমান বলেছেন, অন্তর্বর্তী সরকারের শোনার আগ্রহ কম। শোনার মাধ্যমে উদ্যোক্তারা তথা ব্যবসায়ীরা আগ্রহ দেখাবে। কারণ তারাই তো বিনিয়োগ করবে। অন্তর্বর্তী সরকার ঢাকায় বসে আছে, মাঠে যেতে দেখলাম না। মাঠে যাওয়া খুব দরকার। সদিচ্ছা নিয়ে বলছি না কিন্তু তাদের কার্যক্রম নিয়ে বলছি। গতকাল সোমবার রাজধানীর একটি অভিজাত হোটেলে বণিক বার্তা আয়োজিত তৃতীয় বাংলাদেশ অর্থনৈতিক সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। আয়োজনের বিষয় ছিল বৈষম্য, আর্থিক অপরাধ ও বাংলাদেশের অর্থনীতির নিরাময়। হোসেন জিল্লুর রহমান বলেন, বৈষম্য বহুমাত্রিক। অর্থনৈতিক ও সামাজিক পর্যায়ে। গত ১৫ বছরে বাংলাদেশ একটি অধ্যায়ের মধ্য দিয়ে গেছে। শুধু রাজনৈতিক নয়, অর্থনীতি থেকেও প্রতিযোগিতা হারিয়ে গেছে। চারটি বিষয় এখানে গুরুত্বপূর্ণ। সেগুলো হলো সামষ্টিক অর্থনীতির ভারসাম্য, বিনিয়োগবান্ধব, সাম্প্রতিক আন্দোলনে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারসহ সবার কর্মসংস্থান ও মুদ্রাস্ফীতি কমানো। বর্তমান গভর্নর সেই চেষ্টা করে যাচ্ছেন। তিনি বলেন, মেগা প্রজেক্টকে মেগা বলা ঠিক নয়, এটাকে ভ্যানিটি প্রজেক্ট বলা উচিত। কারণ দেশের জন্য মেগা প্রজেক্ট অবশ্যই দরকার আছে। পলিসি দরকার। কিন্তু পলিসি হচ্ছে প্রথম স্তর ও বাস্তবায়ন হলো পরবর্তী পদক্ষেপ। এটা না হলে পলিসি কাগজে থেকে যায়। হয়রানি দুর্নীতির চেয়ে ভয়াবহ উল্লেখ করে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের এ উপদেষ্টা বলেন, দৃশ্যমান দুর্নীতি কমেছে, তবে কাজের গতি কমে গেছে। লাল ফিতার সংস্কৃতি ভাঙতে হবে। হয়রানি দুর্নীতির চেয়ে ভয়াবহ। উপদেশ দিয়ে ঠিক করা যাবে না। সেটা কার্যকর করে দেখাতে হবে। তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের শোনার আগ্রহ কম। শোনার মাধ্যমে উদ্যোক্তারা তথা ব্যবসায়ীরা আগ্রহ দেখাবে। কারণ তারাই তো বিনিয়োগ করবে। অন্তর্বর্তী সরকার ঢাকায় বসে আছে, মাঠে যেতে দেখলাম না। মাঠে যাওয়া খুব দরকার। সদিচ্ছা নিয়ে বলছি না কিন্তু কার্যক্রম নিয়ে বলছি। দৈনন্দিন জীবনে বাজার নিয়ন্ত্রণের জায়গায় মনিটরিং কমে গেছে। মনিটরিং মানে সাজা দেয়া নয়। মনিটরিং মানে আগাম তথ্য ও ব্যবস্থা নেয়া। সেটা দেখা যায় না। অর্থনৈতিক সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন অন্তর্বর্তী সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। এছাড়া বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুরসহ দেশের বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সচিব, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি, সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন ব্যাংকের চেয়ারম্যান, এমডিসহ শতাধিক অতিথি উপস্থিত ছিলেন।