ঢাকা ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ২৯ কার্তিক ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার

দল ও জোটের কাছে প্রস্তাব চেয়ে কমিশনের চিঠি

দল ও জোটের কাছে প্রস্তাব চেয়ে কমিশনের চিঠি

আনুষ্ঠানিক মতামত ও প্রস্তাব চেয়ে বিএনপি, জামায়াতসহ ২২টি রাজনৈতিক দল ও জোটের কাছে চিঠি দিয়েছে নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশন। তবে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ ও জাপাসহ নিবন্ধিত মোট ২৫টি দলকে কোনো চিঠি দেয়া হয়নি।

সংস্কার কমিশনের একাধিক সদস্য জানান, চিঠিতে আগামী ২৫ নভেম্বরের মধ্যে লিখিতভাবে প্রস্তাব দেয়ার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকার গত ৩ অক্টোবর ‘নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশন’ গঠন করে। ৯০ দিনের মধ্যে প্রধান উপদেষ্টার কাছে সুপারিশসহ প্রতিবেদন দেয়ার কথা রয়েছে আট সদস্যের এই কমিশনের। আগামী ১৫ নভেম্বরের মধ্যে নির্বাচনি ব্যবস্থার সংস্কার বিষয়ে সুনির্দিষ্ট মতামত পেয়েছে কমিশন। ই-মেইল অথবা ওয়েবসাইট অথবা কমিশনের ফেইসবুক পেইজে এই মতামত দেয়া যাবে।

গত সোমবার পর্যন্ত সংস্কার কমিশন ১৭টি বৈঠক করেছে এবং নিজেদের অগ্রগতিতে সন্তোষ প্রকাশ করে কমিশন প্রধান বদিউল আলম মজুমদার বলেন, আমরা আশা করছি যথা সময়ে রিপোর্ট পেশ করতে পারব। এরই মধ্যে দল ও জোটের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে চিঠি দেয়া হলো। সংস্কার কমিশনের সদস্য নির্বাচন বিশেষজ্ঞ আব্দুল আলীম বলেন, গত সোমবার দল ও জোটের কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছে। তবে সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স মনে করেন, লিখিতভাবে প্রস্তাব চাওয়ার কিছু নেই। তার চেয়ে সংলাপ বা মতবিনিময় হলে সেটা ভালো হতো। তিনি বলেন, সংস্কার কমিশনের চিঠি পাঠানোটাই খুব জরুরি বলে আমি মনে করি না। বিভিন্ন দল বিশেষ করে সিপিবি বা আমরা বামপন্থিরা নির্বাচন বিষয়ে আমাদের যে বক্তব্য তা ইসিতে দেয়া রয়েছে। ওনারা ফাইল দেখতে পারে। বরং আমরা চাই, ওনারা ডায়ালগ করার জন্য কথা বলতেন সেটাই ভালো হয়। কালক্ষেপণ করা নিয়ে তিনি বলেন, গণমাধ্যমে দেখলাম, ওনারা (সংস্কার কমিশন) ডিসেম্বর পর্যন্ত কথা বলবেন না। তাহলে এ চিঠি দেয়াকে অতটা গুরুত্ব হিসেবে দেখছি না। ওনারা আমাদের সাথে বৈঠকে বসলে বা মতবিনিময় করলে ভালো হতো। না হলে ডিসেম্বর পর্যন্ত এটা কালক্ষেপণ বলে মনে করছি।

এদিকে আগামী সংসদ নির্বাচনের জন্য নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠনে নাম প্রস্তাব করেছে নিবন্ধিত ৪৭টি দলের মধ্যে ১৭টি রাজনৈতিক দল। পাঁচ সদস্যের কমিশন গঠনে বিএনপিসহ কয়েকটি রাজনৈতিক দল পাঁচের বেশি নাম প্রস্তাব করেছে। তবে নাম প্রস্তাবের পাশাপাশি সিইসি নির্বাচনের ক্ষেত্রে গণতান্ত্রিক পদ্ধতি অবলম্বনের সুপারিশ করেছে দুটি রাজনৈতিক দল। গত বৃহস্পতিবার ছিল ইসি গঠনে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত অনুসন্ধান কমিটির কাছে নাম প্রস্তাবের শেষ দিন। বেশিরভাগ রাজনৈতিক দল বৃহস্পতিবার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব শেখ আবদুর রশিদের কাছে নিজেদের প্রস্তাব জমা দিয়েছে। পাঁচ সদস্যের কমিশনের জন্য প্রতিটি পদে দুজন করে মোট ১০ জনের নাম প্রস্তাব করেছে বিএনপি। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ এবং যুগ্ম আহ্বায়ক শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি মন্ত্রিপরিষদ সচিবের কাছে নাম জমা দেন।

বিএনপি সূত্রের বরাতে জানা গেছে, প্রধান নির্বাচন কমিশনার পদের জন্য দলটি সাবেক সচিব এএমএম নাসির উদ্দিন ও শফিকুল ইসলামের নাম প্রস্তাব করেছে। প্রস্তাবিত তালিকায় একজন নারীসহ সাবেক বিচারপতি, সাবেক আমলা ও সাবেক সেনা কর্মকর্তার নাম রয়েছে।

সার্চ কমিটির ছয় সদস্য : বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী, বিচারপতি একেএম আসাদুজ্জামান, মো. নূরুল ইসলাম, মোবাশ্বের মোনেম, চৌধুরী রফিকুল আবরার ও জিন্নাতুন নেছা তাহমিদা বেগম।

প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং অনান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ আইন, অনুযায়ী সার্চ কমিটি যোগ্যদের অনুসন্ধানের জন্য রাজনৈতিক দল এবং পেশাজীবী সংগঠনের কাছ থেকে নাম আহ্বান করতে পারবে। আইনে বেধে দেয়া যোগ্যতা, অযোগ্যতা অভিজ্ঞতা, দক্ষতা ও সুনাম বিবেচনা করে সিইসি ও নির্বাচন কমিশনার পদে নিয়োগের জন্য ১৫ দিনের মধ্যে রাষ্ট্রপতির কাছে ১০ জনের নাম জমা দেবে এই কমিটি। সেই তালিকা থেকে একজনকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং চারজনকে নির্বাচন কমিশনার হিসেবে নিয়োগ দেবেন রাষ্ট্রপতি।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত