হঠাৎ করেই উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে রাজধানীর বেশ কয়েকটি শিক্ষাঙ্গণ। শিক্ষার্থীদের দাবিও ভিন্ন ভিন্ন। এক দল শিক্ষার্থী চাচ্ছেন তাদের কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তর করা হোক। আরেক দল চান- তাদের নতুন ক্যাম্পাস ও আবাসিক হল নির্মাণ প্রকল্প সেনাবাহিনীকে দেয়া হোক। আবার তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে এক কলেজ শিক্ষার্থীরা আরেক কলেজের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মারামারিতে লিপ্ত হয়েছে। যে মারামারি রূপ নিচ্ছে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে। সাম্প্রতিককালে প্রায় প্রতিদিনই এমন ঘটনা ঘটছে। এসব ঘটনার পেছনে কারো ইন্ধন আছে কি না, তা অনুসন্ধান করা জরুরি হয়ে পড়েছে। কয়েক দিন আগে ঢাকা কলেজ ও সিটি কলেজের শিক্ষার্থীরা সংঘর্ষে জড়িয়েছে। তাদের মারামারির কারণে নিউ মার্কেট, সায়েন্স ল্যাব এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। যে কারণে দুই কলেজ বন্ধ ঘোষণা করা হয়।
গত রোববার রাতে বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব টেক্সটাইল (বুটেক্স) ও ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। গভীর রাত পর্যন্ত চলেছে তাদের সংঘর্ষ। পরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছেন। সবশেষ গতকাল সোমবার রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকায় শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ, কবি নজরুল কলেজ ও ড. মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। তিন কলেজের শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষে ডেমরা-যাত্রাবাড়ী এলাকা রণক্ষেত্র পরিণত হয়। অনেকে আহত হয়েছেন। এখানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বেগ পেতে হয় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে। পরে কয়েক প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়।
এই সংঘর্ষের ঘটনায় ৮ হাজার শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। ডিএমপির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষে কেউ নিহত হয়নি। শিক্ষার্থীদের কোনো ধরনের সংঘর্ষে না জড়িয়ে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছে সরকার। সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এ ধরনের সংঘাতের পেছনে কোনো ধরনের ইন্ধন থাকলে তা কঠোর হাতে দমন করা হবে। রাজধানীতে কয়েকটি কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় গতকাল সোমবার প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম এ কথা বলেন। অপপ্রচার থেকে বিরত থাকার অনুরোধ জানানো হয়েছে। সোহরাওয়ার্দীর পর কবি নজরুল কলেজও আজ থেকে বন্ধ থাকছে অনির্দিষ্টকালের জন্য।
গতকাল সোমবার বেলা ১২টা থেকে মোল্লা কলেজের সামনে প্রায় দুই ঘণ্টার এ সংঘর্ষে শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হয়েছে। ঢাকা মেডিকেল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. ফারুক জানান, বিকাল সোয়া ৪টা নাগাদ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ৩০ জনকে আহত অবস্থায় আনা হয়, যার মধ্যে দুই-তিনজন চালক ও পথচারী আছে। তাদের মধ্যে পরিচয় পাওয়া কয়েকজন হলেন- সোহরাওয়ার্দী কলেজের উচ্চ মাধ্যমিক প্রথম বর্ষের রাজীব (১৯) ও দ্বিতীয় বর্ষের শাহেদুল (২০); কবি নজরুল সরকারি কলেজের উচ্চ মাধ্যমিক প্রথম বর্ষের রানা (২০), মারুফ (১৯), রুমান (১৯), হাসিনুর (১৯), আরাফাত (১৯); একই কলেজের স্নাতক প্রথম বর্ষের অনুপম দাস (২৩) ও দ্বিতীয় বর্ষের সুমন (২২) এবং ইম্পেরিয়াল কলেজ হাতিরঝিল শাখার উচ্চ মাধ্যমিক প্রথম বর্ষের হুমায়ুন (২০)।
কবি নজরুল ইসলাম সরকারি কলেজের ইসলামের ইতিহাস বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী শরীফ হোসেন বলেন, তাদের কলেজের এবং সোহরাওয়ার্দী কলেজের অন্তত ৫০ জন আহত হয়েছে। রোববারের হামলার ঘটনার প্রতিবাদে আমরা মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজের সামনে শান্তিপূর্ণ অবস্থান নেওয়ার সময় ওই কলেজের পক্ষ হয়ে সন্ত্রাসীরা আমাদের ওপর হামলা চালিয়েছে। সংঘর্ষে আহত হয়ে ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গেছে সোহরাওয়ার্দী ও নজরুল কলেজের অন্তত ৩০ শিক্ষার্থী। তাদের মধ্যে পরিচয় পাওয়া কয়েকজন হলেন- নাইম (২০), সিয়াম (১৯), মোল্লা সোহাগ (১৮), রাজিম (১৭), শরিফুল (১৭), জাহিদ (২৫), মোস্তফা (২৩), রাতুল (২১), শফিকুল ইসলাম (২৬), মেহেদী হাসান (২৪), সজীব বেপারী (২৮), ফয়সাল (১৯), সাগর (২১), ইমন (২৪), সিয়াম (১৮)।
ন্যাশনাল মেডিকেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক মাহমুদ বিকাল সোয়া ৩টায় গণমাধ্যমকে বলেন, ‘এখন পর্যন্ত প্রায় ৩০ জন আহত এসেছে আমাদের কাছে। এদের মধ্যে ১০ জনের অবস্থা গুরুতর। তার মধ্যে কয়েকজনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজে যেতে বলেছি। তাদের সেখানে ভর্তি হতে হবে। আমাদের জরুরি বিভাগে ভর্তি আহতদের আমরা পর্যবেক্ষণে রেখে চিকিৎসা দিচ্ছি। সংঘর্ষের বর্ণনা দিতে গিয়ে মোল্লা কলেজের সামনে পুলিশের ওয়ারী বিভাগের উপকমিশনার ছালেহউদ্দিন বলেন, ‘২০-২৫ হাজার শিক্ষার্থী যাত্রাবাড়ী মোড় হয়ে মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজে হামলার জন্য এসেছে। তারা আমাদের ওভারটেক করে চলে এসেছে। আমরা তাদের পেছনে পেছনে এসে বারণের চেষ্টা করেছি। ‘তারা এসে ভাঙচুর করেছে, চড়াও হয়েছে। এর সাথে এলাকার জনগণও এসেছে।’ বেলা ২টার দিকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে এসেছে বলে জানান তিনি। এক প্রশ্নের জবাবে পুলিশ কর্মকর্তা ছালেহউদ্দিন বলেন, ‘সকাল থেকে আমরা যাত্রবাড়ী মোড়ে প্রস্তুত ছিলাম- যাতে মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজ আক্রান্ত না হয়। আমরা যাত্রাবাড়ী মোড়ে পর্যাপ্ত সংখ্যক পুলিশ এপিসিসহ প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছিলাম ডিএমপি কমিশনারের নির্দেশনায়।
৮ হাজার শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে মামলা : ভাঙচুর ও গুলিভর্তি ম্যাগাজিন চুরির অভিযোগে ড. মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজসহ বিভিন্ন কলেজের আট হাজার শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে মামলা করেছে পুলিশ। গতকাল সোমবার আদালতের সূত্রাপুর থানার সাধারণ নিবন্ধন শাখারুম সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। এর আগে, রোববার পুলিশের উপ-পরিদর্শক এ কে এম হাসান মাহমুদুল কবীর রাজধানীর সূত্রাপুর থানায় এই মামলা করেন। মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, গতকাল ২৪ নভেম্বর ড. মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজসহ বিভিন্ন কলেজের ৭-৮ হাজার শিক্ষার্থী বেআইনি জনতাবদ্ধে মারাত্মক অস্ত্র-শস্ত্রসহ দাঙ্গা সৃষ্টি করে সরকারি সম্পত্তি ভাঙচুর করে। সরকারি অস্ত্রের (পিস্তল) গুলিভর্তি ম্যাগাজিন চুরি, সরকারি ডিউটিতে ব্যবহৃত এপিসি গাড়ি ভাঙচুর করে ক্ষতিসাধন করে।
কর্তব্যরত পুলিশ সদস্যদের ওপর আক্রমণ করা, জীবননাশের হুমকি দেয়া এবং ত্রাস সৃষ্টির মাধ্যমে অন্তর্ঘাতমূলক কাজ করে। এছাড়া পুলিশের আর্মড পুলিশ কার (এপিসি) ও ডিউটিরত পুলিশের মোটরসাইকেল ভাঙচুর করে মোট ২ লাখ ৭০ হাজার টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে। এতে পেনাল কোড ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনের ১৫(৩) ধারার অপরাধ আনা হয়েছে।
শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষে কেউ নিহত হয়নি, অপপ্রচার থেকে বিরত থাকার অনুরোধ ডিএমপির : সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ, কবি নজরুল কলেজ ও ড. মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে হওয়া সংঘর্ষে কেউ নিহত হয়নি বলে জানিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। অপপ্রচার থেকে সবাইকে বিরত থাকার অনুরোধ জানিয়েছে তারা। গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, গত ১৬ নভেম্বর ডেমরার ড. মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজের শিক্ষার্থী অভিজিৎ হাওলাদার ডেঙ্গু জ্বর নিয়ে ঢাকা ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে ভর্তি হয়। পরে গত ১৮ নভেম্বর তার মৃত্যু হয়। ওইদিন রাতে তার পরিবার ও কলেজের কিছু শিক্ষার্থী ভুল চিকিৎসায় তার মৃত্যু হয়েছে অভিযোগ করে হাসপাতালে ভাঙচুর চালায়। ২০ নভেম্বর পুনরায় ড. মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজের ৫০০ থেকে ৬০০ শিক্ষার্থী ওই হাসপাতালে এসে ভাঙচুর চালায়। এক পর্যায়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। এ সময় প্রতিবাদকারীদের চাপে হাসপাতালের পরিচালক ৪ জন ডাক্তার ও ২ জন শিক্ষার্থীসহ অভিজিতের চিকিৎসা সংক্রান্ত একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।
সোহরাওয়ার্দীর পর কবি নজরুল কলেজও বন্ধ ঘোষণা : রাজধানীর সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজের পর বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে কবি নজরুল সরকারি কলেজ। গতকাল সোমবার কলেজের ওয়েবসাইটে দেয়া এক বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানানো হয়েছে। কবি নজরুল সরকারি কলেজের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘অনিবার্য কারণবশত আজ কবি নজরুল সরকারি কলেজের শ্রেণি পাঠদান বন্ধ থাকবে।’ এর আগে সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ বন্ধ ঘোষণা করা হয়। গত রোববার কলেজের অধ্যক্ষ স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, অনিবার্য কারণবশত ২৫ ও ২৬ নভেম্বর কলেজের সব শ্রেণি কার্যক্রম বন্ধ থাকবে।
সংঘর্ষের দায়ভার স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা-পুলিশ প্রধানের, পদত্যাগ দাবি : ড. মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজের সঙ্গে কবি নজরুল ও সোহরাওয়ার্দী কলেজের শিক্ষার্থীদের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ ও হতাহতের ঘটনায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ও পুলিশ প্রধানের পদত্যাগের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় শিক্ষার্থী ও সাধারণ প্রত্যক্ষদর্শীরা। তাদের দাবি, একদিন আগে ঘোষণা দিয়ে একদল শিক্ষার্থী এসে ভাঙচুর করল, অথচ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী শুধু চেয়ে চেয়ে দেখল! পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না নিতে পারার সব দায় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ও পুলিশ প্রধানের। অবিলম্বে এই দায় নিয়ে তাদেরকে পদত্যাগ করতে হবে। গতকাল সোমবার বিকেলে সংঘর্ষের কারণ এবং প্রশাসনের ভূমিকা সম্পর্কে জানতে চাইলে স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শীরা এসব কথা বলেন।
হামিমুল কবির নামে ড. মোল্লা কলেজের এক শিক্ষার্থী বলেন, সকাল থেকে আমরা আমাদের কলেজের সামনে অবস্থান নিয়েছিলাম। তখন আমরা ছিলাম ২০০ জনের মতো, কিন্তু হঠাৎ করেই তারা হাজার হাজার শিক্ষার্থী এসে একসঙ্গে অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়। কারো হাতে রামদা, কারও হাতে বিদেশি অস্ত্র এমনকি বোমাও ছিল। তিনি বলেন, এমন পরিস্থিতিতে তাদের সঙ্গে টিকতে না পেরে আমরা পিছু হটি। এ সময় আমাদের বেশকিছু বন্ধু-বান্ধব মারাত্মকভাবে আহত হয়। এই সুযোগে তারা কলেজ ক্যাম্পাসের ভেতরে ঢুকে পড়ে এবং ব্যাপক ভাঙচুর করে। এ সময় ভেতরে থাকা বেশকিছু শিক্ষার্থী এবং কর্মচারীকে তারা বেধড়ক মারপিট করে। আমরা শুনতে পাচ্ছি কবি নজরুল ও সোহরাওয়ার্দী কলেজের শিক্ষার্থীদের এই সন্ত্রাসী হামলায় আমাদের কয়েকজন শিক্ষার্থী মারাও গেছে।
সংঘর্ষের মূল সূত্রপাত সম্পর্কে জানতে চাইলে আব্দুল হাকিম নামে এক শিক্ষার্থী বলেন, এই ঘটনার মূল সূত্রপাত হয় ঢাকা ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে। সেখানে ড. মোল্লা কলেজের এক শিক্ষার্থী ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিতে গিয়ে মৃত্যু হয়। এর প্রতিবাদে মোল্লা কলেজসহ ২৫টি কলেজ একত্রে আমরা আন্দোলন করতে গিয়েছিলাম। সেদিন সোহরাওয়ার্দী কলেজও আমাদের সঙ্গে ছিল। তিনি বলেন, আমাদের আন্দোলন চলাকালীন সময় সোহরাওয়ার্দী কলেজের কিছু শিক্ষার্থী টাকা খেয়ে আমাদের বিরুদ্ধে চলে যায়। এমনকি সেদিন তারা আমাদের কিছু ছেলেকে মেরে মাথা ফাটিয়ে দেয়। এভাবে তারা দুইদিন আমাদের পিটিয়েছে, তারপরও আমরা কিছু বলিনি। এরপর আমরা সোহরাওয়ার্দী কলেজের দিকে এগিয়ে গেলে ভেতর থেকে ককটেল এবং গুলি ছোড়া হয়। তখন আমাদের স্টুডেন্টরা ক্ষিপ্ত হয়ে ভেতরে ঢুকে যায় এবং ভাঙচুর চালায়। এরপর তারা আজ সাতটি কলেজ মিলে আমাদের মারতে এসেছে।
কামরুজ্জামান নামে স্থানীয় এক ব্যবসায়ী বলেন, মোল্লা কলেজের প্রতিটি ডিপার্টমেন্ট, প্রতিটি ল্যাব সোহরাওয়ার্দী কলেজ ও কবি নজরুলের শিক্ষার্থীরা এসে তছনছ করে ফেলেছে। কলেজের ভেতরে এমন একটা জিনিস নেই যা অক্ষত অবস্থায় আছে। তিনি বলেন, প্রশাসন যদি সময়মতো আসত এবং যথাযথ ব্যবস্থা নিত তাহলে আজকের এ অবস্থা হতো না। তাদের হামলায় আমাদের অসংখ্য শিক্ষার্থী আহত হয়েছে। শুনেছি বেশ কয়েকজনের মৃত্যুও হয়েছে। আজকের এই পরিস্থিতির জন্য পুরোপুরি দায়ী আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। তারা কোনো ব্যবস্থা না নিয়ে বরং তামাশা দেখেছে।
মুক্তার আলী নামে আরেক স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, একদিন আগেই ঘোষণা দিয়ে এসে ভাঙচুর করেছে। এ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাষ্ট্রের কি কিছুই করার ছিল না? নাকি তারা দুই পক্ষের মারামারি দেখে মজা নিয়েছে? আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাজ কী? তারা চাইলেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে পারত। এই যে আজ বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থীর প্রাণ গেল, তার দায় কি রাষ্ট্র নেবে? তিনি আরো বলেন, আমি মনে করি এই ব্যর্থতার দায়ভার নিয়ে পুলিশ প্রধানসহ স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগ করা উচিত। তাদের নিষ্ক্রিয়তার কারণেই আজ সারা দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির বেহাল দশা।