বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, পলাতক স্বৈরাচার ও তার দোসরা যেন রাজনীতিতে পুনর্বাসিত হতে না পারে, সেই ব্যবস্থা নেয়া আমাদের কর্তব্য। এ জন্য যথাযথ আইনগত ও রাজনৈতিক পদক্ষেপ নেয়া প্রয়োজন। গতকাল সোমবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন ডিইউজের বার্ষিক সাধারণ সভায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। তারেক রহমান বলেন, পলাতক মাফিয়াদের ঠেকাতে একদিকে আদালতের মুখোমুখি করা প্রয়োজন, অপরদিকে তাদেরকে জনগণের আদালতে রাজনৈতিক বিচারে প্রত্যক্ষত হওয়ার পরিস্থিতিতেও ফেলতে হবে। এই দুইয়ের সমন্বয় ঘটাতে পারলে আমি বিশ্বাস করি গণবিরোধী বিতাড়িত শক্তি দেশের রাজনীতিতে মাথা তুলে দাঁড়াতে পারবে না।
জনগণ তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করে গণহত্যাকারী, খুনি ও তাদের দোসরদের রাজনৈতিক মাঠ থেকে বিদায় করে দিতে সক্ষম হবে বলে উল্লেখ করেন তারেক রহমান। তিনি বলেন, এই কারণে বিএনপি মনে করে সংস্কার কার্যক্রমের পাশাপাশি একটি যৌক্তিক সময়ের মধ্যে অবাধ, সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন অবশ্যই প্রয়োজন। বিএনপির শীর্ষ এই নেতা বলেন, একটি নির্বাচনের জন্য যেমন গণঅভ্যুত্থান হয়নি এটি যেমন বাস্তবতা, অপরদিকে নির্মম বাস্তবতা ছিল জনগণকে রাজনৈতিক ক্ষমতাহীন রেখে নির্বাচন ছাড়া বারবার দেশে ফ্যাসিবাদী শাসন কায়েম করতে সক্ষম হয়েছিল। সংস্কার আগে নাকি নির্বাচন আগে- এই ধরনের প্রশ্ন তুলে জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টির অপচেষ্টা চলছে বলে মন্তব্য করেন তারেক রহমান। তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার কার্যক্রম নিয়ে বিএনপির কোনো বিরোধ নেই। সংস্কার আগে নাকি নির্বাচন আগে- যারা এই ধরনের প্রশ্ন তুলে জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টির অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছেন তাদের উদ্দেশ্য কিন্তু ভিন্ন। তিনি আরো বলেন, বিএনপি মনে করে সংস্কার কার্যক্রম এটি কোনো শেষ হওয়ার বিষয় নয়। একজন সংস্কার কার্যক্রম শুরু করলে আরেকজন প্রয়োজনীয় সংস্কার এগিয়ে নিয়ে যায়। কারণ সংস্কার একটি চলমান প্রক্রিয়া। তবে, সরকারে কিংবা সরকারের বাইরে আমাদের প্রত্যেকের মনে রাখা দরকার গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক সংস্কৃতির গুণগত উত্তরণ ছাড়া পুঁথিগত সংস্কার অনেকটা অকার্যকর।
ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নে সভাপতি শফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য রাখেন- জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য অধ্যাপক এজেডএম জাহিদ হোসেন, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন-বিএফইউজের সাবেক সভাপতি এম আবদুল্লাহ, বর্তমান মহাসচিব কাদের গনি চৌধুরী, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি কামাল উদ্দিন সবুজ, বিএফইউজের সাবেক মহাসচিব এম এ আজিজ, ডিইউজের সাবেক সভাপতি আবদুল হাই শিকদার ও এলাহী নেওয়াজ খান সাজু, ডিইউজের সাধারণ সম্পাদক খুরশীদ আলম, ডিইউজের সাবেক সাধারণ সম্পাদক বাকের হোসাইন ও জাহাঙ্গীর আলম প্রধান।
এছাড়া অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান রিপন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অধ্যাপক ফরহাদ হালিম ডোনার, বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, বিএনপির স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু প্রমুখ।