সম্প্রতি চট্টগ্রামে নৃসংসভাবে খুন হওয়া আইনজীবী হত্যার প্রতিবাদে কর্মবিরতি পালন করছেন আইনজীবীরা। বাংলাদেশ সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতি ও চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম আলিফকে খুনের প্রতিবাদে এ কর্মবিরতি পালন করেন আইনজীবীরা। গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল থেকে দ্বিতীয় দিনের মতো বন্ধ রয়েছে চট্টগ্রামের ৭৪টি আদালতের কার্যক্রম। এদিন সকাল থেকে আইনজীবীরা আদালত প্রাঙ্গণে জড়ো হয়ে হত্যাকারীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে বিক্ষোভণ্ডসমাবেশ করেছেন। এ সময় বক্তব্য দেন, ইউনাইটেড ল’ ইয়ার্স ফ্রন্ট চট্টগ্রামের আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট আব্দুস সাত্তার, বাংলাদেশ ল’ ইয়ার্স কাউন্সিলের সাধারণ সম্পাদক ও ইউনাইটেড ল’ ইয়ার্স ফ্রন্ট চট্টগ্রামের কো-কনভেনার অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শামসুল আলম প্রমুখ।
দুপুর পৌনে ১টার দিকে বিক্ষোভ মিছিল নগরীর লালদিঘীর পাড়, কোতোয়ালী মোড় ঘুরে আদালত এলাকায় এসে আইনজীবীরা সমাবেশ করেন। এ সময় তারা অবিলম্বে হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার ও বিচার দাবি করেন। আলিফ হত্যায় জড়িত থাকার অভিযোগ তুলে ইসকন নিষিদ্ধ করতে স্লোগান দেন আইনজীবীরা। চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (প্রসিকিউশন) মফিজুর রহমান জানান, চট্টগ্রাম আদালতের সব কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। দ্বিতীয় দিনের মতো মামলার শুনানি হচ্ছে না। চট্টগ্রামের চতুর্থ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতের বেঞ্চ সহকারী ওমর ফুয়াদ জানান, আদালতে কোনো শুনানি হয়নি। এর আগে, মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে চট্টগ্রাম আদালতে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর জামিন নামঞ্জুর করার পর তাকে কারাগারে পাঠানোর জন্য প্রিজন ভ্যানে তোলা হয়।
এ সময় তার অনুসারীরা বিক্ষোভ করলে পুলিশ ও বিজিবি লাঠিপেটা এবং সাউন্ড গ্রেনেড ছুড়ে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষ চলাকালে এদিন বিকেলে রঙ্গম কমিউনিটি হল সংলগ্ন এলাকায় আইনজীবী সাইফুল ইসলামকে হত্যা করা হয়। ছাত্রজীবনে মেধাবী সাইফুল ইসলাম আলিফ লোহাগাড়ার আধুনগর ইসলামিয়া ফাজিল মাদরাসা থেকে জিপিএ ফাইভ পেয়ে দাখিল পাস করেছিলেন। পরে চট্টগ্রাম সরকারি কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। আন্তর্জাতিক ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রাম (আইআইইউসি) থেকে এলএলবি পাস করে আইন পেশায় নিযুক্ত হন তিনি।