জাতীয় ঐক্যের ডাক দিতে যাচ্ছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। সেজন্য বৈষম্যবিরোধী ছাত্রনেতাদের সঙ্গে সংলাপ করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। গতকাল জাতীয় ঐক্য ঘোষণা নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে ছাত্রনেতাদের সঙ্গে সংলাপ হয়। জাতীয় ঐক্য ঘোষণা নিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্রনেতাদের পাশাপাশি দেশের রাজনৈতিক দল ও ধর্মীয় নেতাদের সঙ্গে সংলাপে বসতে যাচ্ছেন প্রধান উপদেষ্টা। গতকাল প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম ফরেন সার্ভিস অ্যাকাডেমিতে এক ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান। তিনি আরো বলেন, আজ প্রধান রাজনৈতিক দলগুলো এবং কাল ধর্মীয় নেতাদের সঙ্গে আলোচনায় বসবেন প্রধান উপদেষ্টা।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের চাপে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটলেও স্বৈরশাসক শেখ হাসিনা ভারতে আশ্রয় নিয়ে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধরনের ষড়যন্ত্র করছেন। বাংলাদেশের ভেতরে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টির লক্ষ্যে উসকানিমূলক বক্তব্য দিচ্ছেন। সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্মীরা দাবি-দাওয়া নিয়ে আন্দোলন-ঘেরাও কর্মসূচি করে আসছেন। এমনকি প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন ও সচিবালয় ঘেরাওয়ের মতো ঘটনাও ঘটেছে। সর্বশেষ বাংলাদেশে হিন্দু সন্ন্যাসী চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে গ্রেপ্তারের পর সৃষ্ট উত্তেজনার রেশ ভারতেও দেখা গেছে।
বাংলাদেশে হিন্দুদের ওপর নির্যাতনের ভিত্তিহীন তথ্য প্রচার করছে ভারতীয় বিভিন্ন মিডিয়া। এতে ভারতে অবস্থিত বাংলাদেশি মিশনগুলো টার্গেট করে হামলা করেছে উগ্রবাদী হিন্দু সম্প্রদায়। গতকাল ত্রিপুরায় বাংলাদেশ মিশনে হামলার প্রতিবাদে ভারতের রাষ্ট্রদূত প্রণয় ভার্মাকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তলব করে প্রতিবাদপত্র হস্তান্তর করা হয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব বলেন, জাতীয় ঐক্য ঘোষণা নিয়ে গতকাল প্রধান উপদেষ্টা ছাত্রনেতাদের সঙ্গে সংলাপ। আজকে বাংলাদেশের প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ করবেন প্রধান উপদেষ্টা। বৃহস্পতিবার তিনি ধর্মীয় নেতাদের একটি ডায়ালগের আহ্বান করেছেন। এসব বৈঠকের উদ্দেশ্য হচ্ছে তিনি ন্যাশনাল ইউনিটির ডাক দেবেন।
আজ বিকেল ৪টায় ফরেন সার্ভিস অ্যাকাডেমিতে রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বৈঠক হবে। কোন কোন দল অংশ নেবে সেটি স্পষ্ট করে বলা হয়নি। এ সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে প্রেস সচিব বলেন, কোন কোন রাজনীতি দল অংশ নেবে তা আজকে জানা যাবে। ধর্মীয় নেতাদের সঙ্গে কখন কোথায় বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে তা চূড়ান্ত হয়নি।
উল্লেখ্য, অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব গ্রহণের পর কর্মযাত্রার প্রথম পর্যায়ে রাষ্ট্র সংস্কারের কাজে সমর্থন পেয়েছে। মানুষের প্রত্যাশা পূরণে ধাপে ধাপে এগিয়ে যাচ্ছে ইউনূস সরকার। যদিও দীর্ঘদিনের গণতন্ত্রহীনতা, ১৫ বছরের ফ্যাসিবাদী শাসনব্যবস্থা প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রেই পর্বতসম চ্যালেঞ্জ রেখে গিয়েছে। সেই চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করে প্রতিটি ক্ষেত্রে শৃঙ্খলা ফেরানোর চেষ্টা করছে অন্তর্বর্তী সরকার।