বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, পতিত স্বৈরাচার পরিকল্পিতভাবে দেশটাকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে গেছে। মানুষের ভবিষ্যৎ তারা নষ্ট করে দিতে চেয়েছিল। দেশ রক্ষায় মানুষ এখন বিএনপির দিকেই তাকিয়ে আছে। বিএনপির কর্মী হিসেবে আসুন আমরা মানুষের প্রত্যাশা পূরণ করার লক্ষ্যে নিজেরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে চেষ্টা চালিয়ে যাই। বিএনপি নেতাকর্মীদের আগে অঙ্গীকার করতে হবে। আগামী দিনে দেশ পরিচালনার দায়িত্ব পেলে তারা যেন দুর্নীতি থেকে নিজেদের দূরে রাখে। ‘রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের ৩১ দফা ও জনসম্পৃক্তি’ শীর্ষক কুমিল্লা বিভাগীয় বিএনপির প্রশিক্ষণ কর্মশালায় গতকাল মঙ্গলবার বিকালে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তারেক রহমান আরো বলেন, গত ১৫ বছরে পলাতক স্বৈরাচার দেশের শিক্ষা ব্যবস্থাকে ধ্বংস করেছে। দেশকে দুর্নীতিতে ডুবিয়ে দেয়া হয়েছে। অর্থ লুটপাট করে বিদেশে পাচার করেছে। তারা দুর্নীতির উপর টিকে থাকতে চেয়েছিল এবং সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে দুর্নীতি ঢুকিয়ে দেয়ার চেষ্টা করেছে। এই দুর্নীতি থেকে যদি দেশকে রক্ষা করতে হয় তাহলে তা প্রাইমারি স্কুল থেকেই শিক্ষার্থীদেরকে সচেতন করে গড়ে তুলতে হবে। তিনি বলেন, রাষ্ট্র সংস্কারের বিষয়টি আমরা আরো দুই বছর আগেই প্রস্তাব করেছি। আমরা জানি একটা সময় স্বৈরাচারের পতন হবে। সেই উপলব্ধি থেকেই আমরা রাষ্ট্র সংস্কারের বিষয়টি প্রস্তুত করেছি। এই ভঙ্গুর ব্যবস্থাকে সংস্কার করার জন্য অনেক আগে থেকেই প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছি। ৩১ দফার মাধ্যমেই রাষ্ট্রের প্রতিটি রন্দ্রে রন্ধ্রে সংস্কার করা হবে। তৃণমূলের মানুষের কাছে বিএনপির ৩১ দফার বিষয়গুলো তুলে ধরতে হবে। আমাদের আদর্শ দিয়ে দেশের মানুষের মন জয় করতে হবে। বিএনপি দেশে একটি জবাবদিহিতার সরকার প্রতিষ্ঠা করতে চায়। জনগণের কাছে জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে।
এর আগে বেলা ১১টায় বিএনপির কুমিল্লা বিভাগীয় প্রশিক্ষণ কর্মশালার উদ্বোধন করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন। এসময় তিনি বলেন, একটি মহল চেষ্টা করছে সংস্কারের নামে নির্বাচন বিলম্ব করতে। তবে নির্বাচন যত বিলম্বে হবে, বাংলাদেশ নিয়ে ততই ষড়যন্ত্র হবে। সংস্কারের কথা বলে নির্বাচন পেছানো বুদ্ধিমানের কাজ হবে না। অতিদ্রুত সংস্কার করে নির্বাচনী রোডম্যাপ দিতে হবে। তিনি আরো বলেন, আমরা চাই না এই সরকার ব্যর্থ হোক। এই সরকারকে আমাদের মতো বৃহৎ একটি রাজনৈতিক দল সমর্থন করেছে, তারা ব্যর্থ হলে কিন্তু আমরাও ব্যর্থ হব। বিএনপির এ প্রশিক্ষণ কর্মশালা পরিচালনা করেন বিএনপির প্রশিক্ষণবিষয়ক সম্পাদক এবিএম মোশাররফ হোসেন। দলের কুমিল্লা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক সেলিম ভূঁইয়ার সভাপতিত্বে প্রশিক্ষণ কর্মশালায় আলোচক ছিলেন বিএনপির মিডিয়া ছেলের আহ্বায়ক ডা. মওদুদ আলমগীর পাভেল, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের উপদেষ্টা ড. মাহাদী আমিন, সহ প্রশিক্ষণ সম্পাদক রেহানা আক্তার বানু, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মনিরুল হক চৌধুরী, শিল্প বিষয়ক সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ, ত্রাণ ও পুনর্বাসন বিষয়ক সম্পাদক হাজী আমিনুর রশীদ ইয়াছিন, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মো. মোস্তাক মিয়া, বিএনপি নির্বাহী কমিটির সদস্য আব্দুর সাত্তার পাটোয়ারী ও কৃষক দলের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সম্পাদক মাহবুবা হাবিব। কুমিল্লা মহানগর বিএনপির আহবায়ক উৎবাতুল বারী আবু, সদস্য সচিব ইউসুফ মোল্লা টিপু। কুমিল্লা উত্তর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মো. আক্তারুজ্জামান, সদস্য সচিব এএফএম তারেক মুন্সি প্রমুখ।