ঢাকা ১৭ জানুয়ারি ২০২৫, ৩ মাঘ ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

সংস্কারের জন্য নির্বাচন বন্ধ হয়ে থাকতে পারে না

সংস্কারের জন্য নির্বাচন বন্ধ হয়ে থাকতে পারে না

সংস্কারের জন্য নির্বাচন বন্ধ হয়ে থাকতে পারে না মন্তব্য করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল আলমগীর বলেন, আর সংস্কারের কারণে একটা অনির্বাচিত সরকারের হাতে দিনের পর দিন দেশ চালাতে দিতে পারি না। গতকাল শনিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন তিনি। ‘চব্বিশের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের চেতনায় সবাইকে ঐক্যবদ্ধ করে ষড়যন্ত্র প্রতিহত করা’ শীর্ষক সভার আয়োজন করে জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির (জাগপা) একাংশ।

কেউ যদি বলে আমরা সংস্কারের দাবি নিয়ে এসেছি, সেটা ভুল উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, সংস্কার কোনো নতুন ধারণা নয়। আর সংস্কার একটি চলমান প্রক্রিয়া। প্রতি মুহূর্তে সংস্কার হচ্ছে, সেই ধারা চলতে থাকবে। সেই জন্য নির্বাচন বন্ধ হয়ে থাকতে পারে না। সেই পর্যন্ত আমরা একটি অনির্বাচিত সরকারের হাতে দিনের পর দিন দেশ চালাতে দিতে পারি না। সেই কারণে আমরা যখন বলি, নির্বাচন তাড়াতাড়ি চায়, তখন আমাদের সম্পর্কে একটা ভুল ব্যাখা দেয়া হয় যে, বিএনপি তাড়াতাড়ি নির্বাচন চাচ্ছে ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য। ক্ষমতায় তো আমরা আগেও ছিলাম। আল্লাহ চাইলে আমরা আবারও ক্ষমতায় যাব।

বিএনপি ক্ষমতার জন্য রাজনীতি করেনি বলে উল্লেখ করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, আমি বলতে চাই এই সংস্কার প্রক্রিয়া শুরু করেছেন জিয়াউর রহমান। একদলীয় শাসন ব্যবস্থা বাকশাল করেছিল আওয়ামী লীগ। সেখান থেকে তিনি বের করে বহুদলীয় গণতন্ত্র এনেছিল। সংস্কারের জন্য গঠিত কমিশনের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে তাদের (সদস্যদের) জনগণের কাছে যাওয়ার আহ্বান রাখেন মির্জা ফখরুল।

আজকে বাংলাদেশে অস্থিরতা ও স্থিতিশীলতার সমস্যা আছে মন্তব্য করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, একটা নির্বাচিত সরকার এলে এই সমস্যাগুলো অনেক কমে যাবে। কারণ নির্বাচিত সরকারের শক্তি অন্য, কারণ তার পেছনে জনগণের শক্তি থাকে। সে জন্য আমরা বারবার নির্বাচনের কথা বলছি। সংস্কার সবচেয়ে বেশি বিএনপি চায়। একইসঙ্গে অনির্বাচিত সরকারের ক্ষমতা বেশিদিন থাকা উচিত নয়।

চালের দাম এমনভাবে বেড়েছে যে সাধারণ মানুষের পক্ষে কেনা অসম্ভব হয়ে পড়ছে উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, চাল, ডাল, তেল, ডিম, মাছ ও মুরগি প্রত্যেক জিনিসের দাম বেড়ে গেছে। সাধারণ মানুষের জীবন এখন অতিষ্ঠ হয়ে গেছে। এটার দিকে তাদের (অন্তর্বর্তী সরকারের) কোনো খেয়াল নেই। কমানোর দিকে তারা কাজ করছে না। কিছু বললে বলে, আরে তাড়াতাড়ি সব সম্ভব না। আরে আমরা তো কি, কি ব্যবস্থা নিচ্ছেন সেটা দেখতে চাই। সেটা না করে অন্তর্বর্তী সরকারের বড়-বড় উপদেষ্টা আবার রাজনীতির মধ্যে জড়িয়ে পড়ছেন। বিভিন্ন রাজনৈতিক উক্তি করেন, এমন কি রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি কমেন্ট করেন তারা। এটা হওয়া উচিত নয়। তিনি বলেন, আপনাদের মনে রাখতে হবে যে, এটা অন্তর্বর্তী সরকার। সংস্কার করার সঙ্গে-সঙ্গে একটা নির্বাচন করতে হবে। যেটা সবার কাছে গ্রহণযোগ্য হয়। এটা হচ্ছে প্রধান কাজ, নির্বাচিত হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে। রাজনীতি দলগুলোকে আক্রমণ করে কথা বলে সমস্যার সমাধান করা সম্ভব না।

২০১২ সাল থেকে বিএনপি সক্রিয় আন্দোলন করছে বলে দাবি করেন মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, ড. ইউনূসের সরকারের প্রতি আমাদের পূর্ণ সমর্থন থাকবে। তাদের সহযোগিতা করতে চাই। আমরা চাই তারা সফল হোক।

জাগপার একাংশের সভাপতি খন্দকার লৎফুর রহমানের সভাপতিত্বে সভায় আরো বক্তব্য রাখেন- জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর) মোস্তাফা জামাল হায়দার, এনপিপির চেয়ারম্যান কাজী আবু তাহের, বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমানউল্লাহ আমান প্রমুখ।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত