ঢাকা ০৩ জানুয়ারি ২০২৫, ১৯ পৌষ ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

সিংহাসন থেকে আন্ডারগ্রাউন্ডে আওয়ামী লীগ

সিংহাসন থেকে আন্ডারগ্রাউন্ডে আওয়ামী লীগ

বিগত সাড়ে ১৫ বছরে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের নেতাকর্মী ও আশির্বাদপুষ্ট লোকজন দেশজুড়ে বিনাবিচারে হত্যা, গুম, নির্যাতন, দুর্নীতি, লুটপাট ও বিদেশে অর্থপাচারের মহোৎসবে মেতে উঠেছিল। প্রধানমন্ত্রীর চেয়ারে বসে শেখ হাসিনা নিজে ও আত্মীয়-স্বজনের নামে অবৈধভাবে সরকারি প্লট হাতিয়ে নেয়ার পাশাপাশি বিপুল পরিমাণ অর্থ বিদেশে পাচার করেছেন। আওয়ামী লীগের রাজনীতি অন্যায়ের চরম সীমায় পৌঁছালে দেশের জনগণ অতিষ্ঠ হয়ে ওঠেন।

বিগত নির্বাচনগুলার মতোই ২০২৪ সালের শুরুতে ৭ জানুয়ারি এক তরফা জাতীয় নির্বাচনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ চতুর্থবারের মতো ক্ষমতায় আসে, কিন্তু ক্ষমতা দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। গত জুলাই-আগস্টের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে ক্ষমতায়নে ভয়াবহ পতনও নিশ্চিত হয় দেশটির প্রাচীন দল আওয়ামী লীগের। ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে থাকল ২০২৪ সালে জঘন্য ক্ষমতাচ্যুতি। আন্ডারগ্রাউন্ড দলের মতোই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কর্মসূচি ঘোষণা করছে।

২০২৪ সালের নির্বাচনের পর আওয়ামী লীগ ক্ষমতার দম্ভে ধরাকে সরাজ্ঞান করেছে। ডামি নির্বাচনে ২৯৯টি আসনের মধ্যে ২২৩টি আসন পায় আওয়ামী লীগ। মিত্র জাতীয় পার্টি ও বেশ কয়েকজন স্বতন্ত্র প্রার্থীও নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ তোলেন। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জনগণের অংশগ্রহণ না থাকলেও ‘ডামি’ প্রার্থী দিয়ে নিজেরা নিজেরাই নির্বাচন করেন টানা চতুর্থ মেয়াদে ক্ষমতা আসে আওয়ামী লীগ। এতে বহির্বিশ্বের অব্যাহত চাপ, নিজেদের অর্থপাচারের প্রভাব, পরিবারতন্ত্র, পেশিশক্তি ও অর্থের প্রভাবে জনসমর্থন তলানিতে গেলেও প্রশাসন নির্ভর হয়ে পড়ে আওয়ামী লীগ। প্রশাসনের প্রাণকেন্দ্র সচিবালয়ে শূন্যপদ ছাড়াই কর্মকর্তাদের পদোন্নতির হিড়িক পড়ে। সেখানেও যোগ্য কর্মকর্তাদের বঞ্চিত করা হয়।

২০২৪ সালের শুরুতেই দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে মানুষের জীবনে নাভিশ্বাস উঠেছে। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি কমানো তো দূরে থাক মানুষের সঙ্গে তামাশা করে শেখ হাসিনা। বেগুনের দাম বাড়লে ‘মিষ্টি কুমড়া দিয়েও ‘বেগুনি’ খাওয়া, আবার মরিচের দাম বাড়লে ‘কাঁচা মরিচ শুকিয়ে বর্ষাকালে খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন শেখ হাসিনা। জনগণের জীবনযাত্রার হাঁসফাঁস অবস্থার মধ্যেও বিভিন্ন ধরনের হাস্যকর বক্তব্য দিয়েছিলেন।

গত ৮-১০ জুলাই শেখ হাসিনার চীন সফর উপলক্ষে ১৪ জুলাই গণভবনে এক সংবাদ সম্মেলন করেন। সংবাদ সম্মেলনে আন্দোলনের সরকারি চাকরি প্রাপ্তি নিয়ে সাংবাদিক প্রভাষ আমিন শেখ হাসিনাকে প্রশ্ন করেন ‘আমাদের তরুণপ্রজন্মকে ভুল বুঝিয়ে মুক্তিযুদ্ধের মুখোমুখি করা হয়েছে, সেটা খুবই দুর্ভাগ্যজনক। আরেকটা খুবই ভুল ধারনা তৈরি করা হয়েছে যে, কোটা এবং মেধা মনে হতে পারে যে যারা কোটায় চাকরি করে তাদের কোন মেধা নেই কিন্তু আবেদন করার ক্ষেত্রে কোটা লাগে না, প্রিলিমিনারিতে কোটা লাগে না, লিখিততে কোটা লাগে না, একদম শেষ মুহূর্তে গিয়ে কোটা অ্যাপ্লাই হয়। তখন আসলে মেধায় সবাই সমান। এখন আমার সামনে যদি দুটা অপশন থাকে যে দুজনই সমান মেধাবী, একজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান একজন রাজাকারের সন্তান, আমি অবশ্যই মুক্তিযোদ্ধার সন্তানকে চাকরি দিবো, ফলে মেধা এবং কোটা খুব সহজেই মানুষকে বিভ্রান্ত করা যাচ্ছে। চাকরি না পেয়ে যারা আন্দোলন করছে, তাদের ক্ষোভের সঙ্গে আমি খুবই একমত এ প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে এত ক্ষোভ কেন? তাদের নাতিপুতিরা পাবে না, তাহলে কি রাজাকারের নাতিপুতিরা পাবে? তার মানে কি মুক্তিযোদ্ধার সন্তান-নাতিপুতিরা মেধাবী না, যত রাকাজারের বাচ্চারা-নাতিপুতিরা মেধাবী তাই না? শেখ হাসিনার এমন দাম্ভিক বক্তব্যে আন্দোলনে ফুঁসে ওঠে পুরো দেশের ছাত্র সমাজ। রাতেই দেশজুড়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা স্লোগান তোলে- ‘তুমি কে, আমি কে, রাজাকার রাজাকার; কে বলেছে, কে বলেছে, স্বৈরাচার স্বৈরাচার।’ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়সহ প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা রাজপথে নেমে আসেন। এরপর একের পর এক কর্মসূচি দেন শিক্ষার্থীরা। কিন্তু আওয়ামী লীগ সরকার এটিকে পেশিশক্তি দিয়ে মোকাবিলা করতে গিয়ে আরো সংকট তৈরি করে। ১৬ জুলাই সারা দেশের বিশ্ববিদ্যালয়ে অপারেশনের নামে শিক্ষার্থীদের ওপর হিংস্র পশুর মতো পূর্ণ শক্তি নিয়ে ঝাপিয়ে পড়ে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ও বিপদগামী পুলিশ। রংপুরে পুলিশের গুলিতে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ শহীদ হন। চট্টগ্রামে ছাত্রদল ও শিবির নেতাকর্মীসহ তিনজনসহ সারাদেশে ছয়জন নিহত হয়। ১৭ জুলাই গায়েবানা জানাজা কর্মসূচি দেয়া হয়। সেদিনও শিক্ষার্থীদের ওপর নগ্ন হামলা চালায় পুলিশ, ছাত্রলীগ ও যুবলীগ। অস্ত্রের মুখে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলন দমাতে পারলেও পরে নেমে পড়ে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো। আন্দোলন দমাতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মানুষ হত্যায় মেতে ওঠে। তাদের হেলিকপ্টার থেকেও গুলি ছোড়া হয়। ঘরের ভেতরে মায়ের কোলের শিশু সন্তান, ছাদে খেলতে থাকা কিশোর কেউ রেহাই পায়নি তাদের মারণঘাতী গুলি থেকে। এসব ঘটনায় দেশবাসী ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। আন্দোলনে সংযুক্ত হয় বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সাধারণ মানুষ।

গণ-আন্দোলনের অবস্থা টের পেয়ে প্রধানমন্ত্রী জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিলে শিক্ষার্থীরা আরো ক্ষুব্ধ হন। সরকারপ্রধানের কথায় নমনীয়তা না থাকলেও চেহারা ও পোশাক ছিল বিধ্বস্ত। যার কারণে আন্দোলন আরো বেগবান হয়। সরকারও পুলিশ, র‌্যাব ও বিজিবি দিয়ে নির্বিচারে গুলি চালিয়ে আন্দোলন দমানোর ব্যর্থ চেষ্টা করে। ইন্টারনেট বন্ধ করে দিয়ে গণহত্যা চালিয়েও দমাতে পারেনি। ‘শেখ হাসিনা পালায় না’, ‘আমি পালাবো না’ নানা সময়ে এমন দম্ভোক্তি করলেও গণ-আন্দোলনের মুখে বাধ্য হয়ে ৫ আগস্ট দেশ ত্যাগ করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আওয়ামী লীগ নেতারাও যে যার মতো পালিয়ে যান বা আত্মগোপনে চলে যান। বেশ কয়েকজন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে গ্রেপ্তার হন। এরমধ্যে নানা কারণে অন্তর্বর্তী সরকার আওয়ামী লীগের ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করে।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে ৫ আগস্ট ক্ষমতার মসনদ ছেড়ে পালাতে বাধ্য হোন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি ভারতে পালিয়ে গেলে আওয়ামী লীগের টানা সাড়ে ১৫ বছরের শাসনের অবসান ঘটে। এরপর পরই ঢাকায় ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু জাদুঘর, ঢাকায় আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়সহ কয়েকটি কার্যালয়ে ব্যাপক হামলা ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। দেশের বহু জায়গায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের বাড়িঘর, দোকানপাটেও হামলার ঘটনা ঘটেছে। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের দিকে নজর না রেখে শেখ হাসিনা নিজে ও পরিবারের চিন্তা করে দেশ ছাড়েন। এরপরই দলের নেতারা আত্মগোপনে চলে যান। দলটির কোনো স্তরের কোনো নেতাই আর প্রকাশ্যে নেই। বহু মামলা দায়ের হয়েছে শেখ হাসিনাসহ দলের সব নেতার বিরুদ্ধে। পালাতে না পারায় সাবেক দাপুটে কয়েকজন মন্ত্রীসহ অনেকের ঠাঁই হয়েছে কারাগারে।

গত জুলাই-আগস্টে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গণহত্যা চালায় আওয়ামী লীগ। নির্দয়ভাবে গুলি করে বিপ্লবী ছাত্র-জনতাকে হত্যা করে আওয়ামী শাসকগোষ্ঠী। আওয়ামী লীগের সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের হামলায় প্রাণ হারায় শিক্ষার্থীসহ নানা পেশার ১ হাজারের বেশি মানুষ। হাজার হাজার মানুষ আহত হয়। শিশু, কিশোর, নারী থেকে শুরু করে বৃদ্ধের শরীর ভেদ করে বেরিয়ে গেছে গুলি। হাসিনা সরকারের দমন পীড়নের সামনে রাজপথে বুক চিতিয়ে দাঁড়িয়েছিলেন স্কুল থেকে বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা। তরুণ যুবা গৃহিণী, অভিভাবক সবাই স্বৈরাচরের রাহুমুক্ত হতে একজোট হয়েছিলেন রাজপথে। দেশব্যাপী ছড়িয়ে পড়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের চূড়ান্ত পর্বে উঠে আসে শেখ হাসিনা সরকারের পদত্যাগের এক দফা। এই গণদাবি স্বৈরশাসকের ভিত নাড়িয়ে দেয়। দলীয় পেটোয়া বাহিনীর গুলি, হত্যার বীভৎসতায় ছাত্র-জনতার আন্দোলন রূপ নেয় গণঅভ্যুত্থানে। প্রবল জনরোষের মুখে গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেন স্বৈরশাসক শেখ হাসিনা। ছোট বোন শেখ রেহানাকে নিয়ে দেশ থেকে পালিয়ে ভারতের নয়াদিল্লিতে গিয়ে আশ্রয় নেন। রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশে স্বৈরাচারী শাসক শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে এরইমধ্যে শতাধিক হত্যা মামলা হয়েছে। শেখ হাসিনার পরিবারের অনেক সদস্যের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগের অনুসন্ধান চলছে। এর মধ্যেই স্বৈরাচারী সরকারের মন্ত্রী, এমপিসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বেশ কয়েকজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা গ্রেপ্তার হয়েছেন। রিমান্ডে বেরিয়ে আসছে আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে ক্ষমতাধর এসব ব্যক্তিদের দমন, পীড়ন, লুটপাট, দুর্নীতির চাঞ্চল্যকর তথ্য।

ইউনিয়ন থেকে সংসদ পর্যন্ত পারিবারিক দাপট : কারচুপি, অনিয়ম, দুর্নীতি করে টানা কয়েকবার আওয়ামী লীগ সরকারের থাকায় পরিবারতন্ত্রের মধ্যে ডুবে যায়। ইউনিয়ন থেকে শুরু করে সংসদ ভবন পর্যন্ত শেখ হাসিনা নিজের পরিবারের সদস্যদের বসিয়েছিলেন। ২০২৪ সালের নির্বাচনে আত্মীয় খোঁজে, আত্মীয়তোষণ ছিল আওয়ামী লীগের একমাত্র ভরসা। এর প্রভাব পড়ে ইউনিয়ন ও উপজেলা পর্যায় থেকে কেন্দ্র পর্যন্ত। এমনও দেখা গেছে, পরিবারের মধ্যে মন্ত্রী, মেয়র, সংসদ সদস্য, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ভাগাভাগিতেই শুধু থাকেননি; এর পর পরিবারের কেউ কেউ ভাগ বসিয়েছে গুরুত্বপূর্ণ পদায়ন এবং পেশাজীবী নানা সংগঠনের নেতৃত্ব দখলে। তবে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের সময়ে গেল কয়েকটি নির্বাচনের মতো তামাশার নির্বাচন যে আগামীতে হচ্ছে না, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। কিন্তু আওয়ামী লীগ শাসন আমলে জনগণের ওপর চরম অন্যায় করায় অন্তর্বর্তী সরকার নির্বাচনের পথে গেলেও আওয়ামী লীগ নির্বাচনমুখী হয়নি। কারণ গত সাড়ে ১৫ বছরে শেখ হাসিনা দেশের সর্বনাশ করেছে। নিজের সর্বনাশ করেছে। তার বাবা শেখ মুজিবুর রহমানকে ডুবিয়েছে। তার দলকে ডুবিয়েছে। ২০১৮ সালের জাতীয় নির্বাচনে ভোটের দিনের আগের রাতেই ব্যালট বাক্সে কারসাজি হয়। এই ভোট গণতন্ত্রমনস্ক মানুষকে হতভম্ভ করে তোলে।

শেখ হাসিনা-রেহানাসহ ছয়জনের নামে প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধানে দুদক: পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে সরকারি প্লট বেআইনিভাবে নিজেদের নামে করে নেয়ার অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার ছোট বোন শেখ রেহানাসহ শেখ পরিবারের ছয়জনের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। দুদকের মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন সাংবাদিকদের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। আক্তার হোসেন বলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার, বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে রাজউকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের যোগসাজশে নিজ নামেসহ পরিবারের ছয় সদস্যের নামে বরাদ্দের অভিযোগে অনুসন্ধান শুরু করেছে দুদক।

অন্যরা হলেন তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ (পুতুল), ছোট বোন শেখ রেহানা, ছোট বোনের ছেলে রেদোয়ান মুজিব সিদ্দিকী ববি এবং ছোট বোনের মেয়ে আজমিনা সিদ্দিকী। তিনি আরো বলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী তার পরিবারের ছয় সদস্যর নামে পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পের ২৭ সেক্টরের কূটনৈতিক জোনের ২০৩ নম্বর রোড থেকে ১০ কাঠা করে মোট ৬০ কাঠার ছয়টি প্লট বরাদ্দ নিয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এ ক্ষেত্রে রাজনৈতিক বিবেচনায় সরকারের ১৩/এ ধারার ক্ষমতাবলে প্লটগুলো বরাদ্দ নেন। দুদক মহাপরিচালক বলেন, পত্রিকার ক্লিপিংয়ে বর্ণিত অভিযোগসমূহ সুনির্দিষ্ট, তথ্যভিত্তিক এবং কমিশনের তফসিলভুক্ত অপরাধ মর্মে প্রতীয়মান হওয়ায় বিষয়টি কমিশনের বিশেষ তদন্ত শাখা হতে অনুসন্ধান করা সমীচীন মর্মে প্রতীয়মান হয়। এর আগে, ২৪ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার, প্রতারণা, অনিয়ম-দুর্নীতি মাধ্যমে আশ্রয়ণ প্রকল্প, বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা) ও বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা কর্তৃপক্ষের (বেপজা) প্রকল্প বাস্তবায়নে আড়ালে ২১ হাজার কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে অনুসন্ধান শুরু করে দুদক। ওই দিন ওই আট প্রকল্পের তথ্য চেয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে চিঠি পাঠায় দুদক। এর আগে, ২২ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের বিরুদ্ধে ৩০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বিদেশে পাচারের অভিযোগ অনুসন্ধান শুরু হয়। ১৭ ডিসেম্বর প্রকল্পে ৮০ হাজার কোটি টাকা অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগে শেখ হাসিনা, তার বোন শেখ রেহানা, ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় ও টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করে দুদক।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত