ঢাকা ০৩ জানুয়ারি ২০২৫, ১৯ পৌষ ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

ই-সিগারেট নিষিদ্ধ করতে প্রধান উপদেষ্টাকে চিঠি

ই-সিগারেট নিষিদ্ধ করতে প্রধান উপদেষ্টাকে চিঠি

তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের প্রস্তাবিত সংশোধনী দ্রুত পাসের মাধ্যমে আরো শক্তিশালী করে, ই-সিগারেট (ভেপ) নিষিদ্ধ করতে প্রধান উপদেষ্টাকে চিঠি দিয়েছে ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ই-ক্যাব)। সংগঠনের নির্বাহী পরিচালক জাহাঙ্গীর আলম শোভনের সই করা ওই চিঠি গত সোমবার সকালে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে পাঠানো হয়। এতে বলা হয়, সিগারেটের মতো ই-সিগারেট বা ভেপের প্রতি আকৃষ্ট হচ্ছে বর্তমান তরুণ সমাজ। সিগারেট কোম্পানিগুলো বিভিন্ন কৌশল বিশেষ করে সিগারেট ছাড়ার বিকল্প বলে, ক্ষতিকর পণ্যটিকে আমাদের মতো কিশোর ও তরুণদের মধ্যে ছড়িয়ে দিচ্ছে, যা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক বিপদজ্জনক এমনকি ক্যান্সারের অন্যতম কারণ। চিঠির মাধ্যমে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনে প্রস্তাবিত সংশোধনীগুলো তুলে ধরা হয়। বিদ্যমান তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনকে এফসিটিসির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ করার লক্ষ্যে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রণীত খসড়ায় যে বিষয়গুলো প্রস্তাব করা হয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য প্রস্তাবগুলো হলো- সকল পাবলিক প্লেস ও গণপরিবহনে ধূমপানের জন্য নির্ধারিত স্থান নিষিদ্ধ করা, তামাকজাতদ্রব্যের বিক্রয়স্থলে তামাকজাত পণ্য প্রদর্শন নিষিদ্ধ করা, তামাক কোম্পানির সিএসআর কর্মসূচি পুরোপুরি নিষিদ্ধ করা; তামাকজাত দ্রব্যের প্যাকেট/কৌটায় সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবার্তার আকার ৫০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৯০ শতাংশ করা, বিড়ি-সিগারেটের খুচরা শলাকা, মোড়কবিহীন ও খোলা ধোঁয়াবিহীন তামাকজাতদ্রব্য বিক্রি নিষিদ্ধ করা এবং ই-সিগারেটসহ সব ইমার্জিং টোব্যাকো প্রোডাক্টস্ পুরোপুরি নিষিদ্ধ করা। প্রস্তাবিত এই সংশোধনীগুলো দ্রুত পাস হলে বছরে ১ লাখ ৬১ হাজার অর্থাৎ দৈনিক ৪৪২ জন মানুষের প্রাণ রক্ষা হবে। বাংলাদেশ বিশ্বের ১ম দেশ হিসেবে ২০০৩ সালে তামাক নিয়ন্ত্রণের আন্তর্জাতিক চুক্তি ডব্লিওএইচও ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশন অন টোব্যাকো কন্ট্রোল (ডব্লিউএইচও এফসিটিসি) স্বাক্ষর করে। ২০০৫ সালে এফসিটিসির বাধ্যবাধকতায় তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন প্রণয়ন করা হয়। বিশেষত ধূমপানমুক্ত পরিবেশ নিশ্চিতকরণ এবং তামাকপণ্যের বিজ্ঞাপন ও প্রচারণা নিষিদ্ধকরণের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ যথাক্রমে ‘খারাপ’ ও ‘মধ্যম’ স্তরে রয়েছে। এ ছাড়া সিগারেট ব্যবসায়ীদের নানা রকম অপপ্রচারের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার আহ্বানও জানায় ই-ক্যাব। তামাক কোম্পানিগুলো তাদের সুবিধার্থে প্রচারণা চালায় যে, সংশোধিত তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন পাস হলে রাজস্ব কমে যাবে। কিন্তু সঠিক চিত্রটি সম্পূর্ণ বিপরীত। এমন অপপ্রচার জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের তথ্য মতে মোটেও সমর্থন করে না। বাংলাদেশে ২০০৫ সালে যখন তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন পাস হয়, সে বছর তামাক হতে রাজস্ব ছিল দুই হাজার ৮৮৮ কোটি টাকা। পরবর্তী অর্থবছর ২০০৫-৬ এ রাজস্ব আদায় হয় তিন হাজার ৩৫১ কোটি টাকা। ২০১৩ সালে যখন আইনটি সংশোধন হয়, সে বছর তামাক থেকে সরকারের রাজস্ব আয় ছিল ১০ হাজার ১৭০ কোটি টাকা। এ ছাড়া তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের প্রস্তাবিত খসড়া আইন পাস হলে তরুণদের সুরক্ষার পাশাপাশি অধূমপায়ীদের সুরক্ষা প্রদান ও নতুনদের ধূমপান ও ই-সিগারেট থেকে নিবৃত্ত করা সহজ হবে। তাই তামাকমুক্ত সুস্থ জাতি গঠনে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ কর্তৃক প্রণীত তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের প্রস্তাবিত সংশোধনী দ্রুত পাশের দাবি জানায় ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ই-ক্যাব)।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত