ঢাকা ০৫ জানুয়ারি ২০২৫, ২১ পৌষ ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

খসড়া তালিকা প্রকাশ

যুক্ত হলো ১৮ লাখ ৩৩ হাজার ভোটার

যুক্ত হলো ১৮ লাখ ৩৩ হাজার ভোটার

নির্বাচন কমিশনের (ইসি) পক্ষ থেকে হালনাগাদ খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। এতে নতুন ভোটার যুক্ত হয়েছেন ১৮ লাখ ৩৩ হাজার ৩৫২ জন। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে নির্বাচন ভবনে এক ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ। তিনি বলেন, হালনাগাদের আগে ভোটার ছিল ১২ কোটি ১৮ লাখ ৫০ হাজার ১৬০ জন। নতুন করে তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন ১৮ লাখ ৩৩ হাজার ৩৫২ জন। এ হিসেবে মোট ভোটার সংখ্যা দাঁড়াচ্ছে ১২ কোটি ৩৬ লাখ ৮৩ হাজার ৫১২ জন। ভোটার বৃদ্ধির হার ১ দশমিক ৫০ শতাংশ। নির্বাচন কমিশনার বলেন, দাবি, আপত্তি, নিষ্পত্তি শেষে আগামী ২ মার্চ চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হবে। এই সময়ের মধ্যে কারো কোনো দাবি বা আপত্তি থাকলে তা জানাতে পারবেন। দাবি আপত্তি জানানোর শেষ সময় ১৭ জানুয়ারি। ইসি জানায়, আগামী ২০ জানুয়ারি থেকে বাড়ি বাড়ি হালনাগাদ কার্যক্রম শুরু হতে পারে। সর্বশেষ হালনাগাদ অনুযায়ী, দেশে ভোটার রয়েছে ১২ কোটি ১৮ লাখ ৫০ হাজার ১৬০ জন। ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের ইসি সানাউল্লাহ জানান, এ বছর যেটা হালনাগাদ হচ্ছে, সেটা যদি কেউ দেখতে চায় সেটাও দেখানো হবে এবং পূর্বেরটাও হবে। তবে পুরো ভোটার তালিকা থাকবে আমাদের হাতে। আর ১৮ লাখ ভোটারের তালিকা থাকবে প্রকাশিত। প্রত্যেকের তথ্য হালনাগাদ হবে নাকি শুধু নতুন যুক্ত হওয়াদের তথ্য হালনাগাদ হবে- প্রশ্নে তিনি বলেন, আপনারা বলেছেন অতীতে বিতর্কিত ভোটার তালিকা হয়েছে। এখন কোন বছরের তালিকায় বিতর্ক আছে এটা তো আমরা জানি না। আমরা যদি পুরো তালিকা যাচাই না করি তাহলে কি বের করতে পারবো? যাদের বয়স গতকাল ১৮ বছর হয়ে গেছে, তারা যদি তালিকাভুক্ত না হয়ে থাকেন কিন্তু আমাদের এই প্রক্রিয়ার মধ্যে তালিকাভুক্ত হন তারা ভোট দিতে পারবেন। এছাড়া এই বছর যাদের ১৮ বছর বয়স হয়ে যাবে, তারা ভোট দিতে পারবেন কি না এটা আইনি ব্যাপার। ভোটার তালিকা আইন ধারা-৩(জ) অনুযায়ী ভোটার হওয়ার যোগ্যতার তারিখ হচ্ছে ১ জানুয়ারি। এইটা যদি করতে হয়, তাহলে আইন পরিবর্তন করতে হবে।

ডিসেম্বরের শেষে যদি সংসদ নির্বাচন হয় তাহলে আপনারা যাদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটার করছেন তারা ভোট দিতে পারবে কি না এবং আইন সংশোধন করে তাদের বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেবেন কি না- এমন প্রশ্নে ইসি বলেন, আমাদের প্রধান উপদেষ্টা নির্বাচন নিয়ে কথা বলেছেন যে, ২০২৫ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০২৬ সালের জুনের মধ্যে নির্বাচন উনি আশা করছেন। আমাদের নির্বাচন করার জন্য প্রস্তুতি নিতে হবে। আমরা এর জন্য সবসময় প্রস্তুত। ভোটার তালিকা প্রণয়ন করাও এক ধরনের প্রস্তুতি। আমাদের এ ভোটার তালিকাকে সন্নিবেশ করতে আইনি কোনো জটিলতা নেই। তফসিল ঘোষণার আগে একটা তালিকা প্রকাশ হবে সেই তালিকায় আমরা তাদেরকে অন্তর্ভুক্ত করবো। ভোটারের সর্বনিম্ন বয়স ১৭ করার বিষয়ে কমিশন কী ভাবছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ১৭ বছর বয়সে ভোটার নিয়ে আমাদের প্রধান উপদেষ্টা ব্যক্তিগত মতামত দিয়েছেন। আমরা শুনেছি সেটা। এটা নিয়ে আলোচনা চলছে। যদি ভবিষ্যতে এটা নিয়ে রাজনৈতিক কোনো মতৈক্য হয়, কোনো সিদ্ধান্ত আসে, যদি সংবিধানে পরিবর্তন আসে- আমরা সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবো। বিভিন্ন টকশোতে বলা হচ্ছে ভোটার তালিকা সঠিক নয়, আজ যে খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ করলেন তা সঠিক কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিতর্কিত ভোটার তালিকা আমরা বিভিন্ন গণমাধ্যমে বিভিন্ন সময় দেখেছি। আপনারা আলোচনা করেছেন এবং আমাদের সাধারণ মানুষের মাঝেও এ ধরনের একটা পার্সেপশন আছে। আমাদের বাড়ি বাড়ি যাচাই করতে যাওয়ার অন্যতম প্রধান উদ্দেশ্য হলো এটি। এ কমিশন দায়িত্ব গ্রহণের পরে পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে একটা শুদ্ধ ভোটার তালিকা ছাড়া কনফিডেন্ট মনে করছি না। এজন্য বাড়ি বাড়ি গিয়ে যাচাই করা। আমাদের কাছে প্রতীয়মান হয়েছে যে ভোটার তালিকা যে বিতর্কিত বলছি, শুদ্ধতার অভাব বলছি, এটা মূলত তিনটি কারণে হচ্ছে। প্রথমত, মৃত ভোটারদের তালিকা থেকে বাদ না পড়া। দ্বিতীয়ত, দ্বৈত ভোটার তালিকাভুক্ত হওয়ার সম্ভাবনা আর তৃতীয়ত, বিদেশি নাগরিক প্রতারণার মাধ্যমে তালিকাভুক্ত হয়েছে কি না এটি নিশ্চিত করা। তিনি আরো বলেন, আমাদের মাঠপর্যায় থেকে অনেক সময় তথ্য পাই, যখন আমাদের তথ্য সংগ্রহকারী বাড়ি বাড়ি তথ্য সংগ্রহ করতে যায় সেখানে স্থানীয় কোনো ব্যক্তি আমাদের সহায়তা করেন না, সেখানে দেখা যায় নিজের ভোটার যারা আছে তাদের বয়স বাড়িয়ে ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে ফেলেন। আবার দেখা যায় অন্য কারো ১৮-১৯ বছর হলেও ভোটার তালিকাভুক্ত হতে দেয় না। এর বাইরেও আরো অনেক ধরনের কারণ আছে। তবে এগুলোই প্রধানত ঘটে থাকে। আমরা এবার সেইভাবে সেনসিটাইজ করছি। এরইমধ্যে আমাদের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেছি। আমাদের প্রধান নির্বাচন কমিশনার দুটো বিভাগ পরিদর্শন করেছে। আমরা কমিশনারও পরিদর্শনে বের হবো। আমাদের ডিজি এনআইডিসহ আমাদের সচিবালয়ে সংশ্লিষ্ট দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারাও মাঠ পর্যায়ে যাচ্ছেন সেনসিডাইস করছে। পাশাপাশি কমিশন প্রশিক্ষণের অন্তর্ভুক্ত করেছে। আমরা একটা সন্তুষ্ট জায়গায় পৌঁছাতে পারবো ভোটার তালিকার বিষয়টা নিয়ে। নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন সংস্কার প্রতিবেদন জমা দেওয়ার আগে বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রম সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবের সঙ্গে ওভারলেপিং হবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা তা মনে করছি না। কারণ সংস্কার কমিশন যে সংস্কার প্রস্তাব দেন না কেন ভোটার তালিকা তো একটা লাগবে। ভোটার তালিকা ছাড়া তো আর ভোট হবে না। আমরা মনে করি না যে ভোটার তালিকা রিলেটেড আমরা কোনও সমস্যা ফেস করবো। ২০ তারিখ থেকে বাড়ি বাড়ি গিয়ে হালনাগাদ করবেন এ কার্যক্রম কতদিন চলবে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা যদি ভালোভাবে কাজ করতে পারি তাহলে ৩০ জুনের মধ্যে আমরা এটা সম্পন্ন করতে পারবো।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত