ঢাকা ০৫ জানুয়ারি ২০২৫, ২১ পৌষ ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

বাংলাদেশকে হারিয়ে যাওয়া ভাই বললেন পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী

বাংলাদেশকে হারিয়ে যাওয়া ভাই বললেন পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী

পাকিস্তানের উপ-প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইশাক দার বলেছেন, ‘বাংলাদেশ আমাদের হারিয়ে যাওয়া ভাই। বাংলাদেশকে সম্ভাব্য সব উপায়ে সহযোগিতা করবে পাকিস্তান।’ গতকাল বৃহস্পতিবার ইসলামাবাদে এক সংবাদ সম্মেলনে ইশাক দার এই মন্তব্য করেছেন বলে জানিয়েছে দেশটির ইংরেজি দৈনিক মিনিট মিরর। সংবাদ সম্মেলনে গাজায় চলমান গণহত্যার বিষয়ে পাকিস্তানের দৃঢ় অবস্থান এবং ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রীর প্রকাশ্য নিন্দা জানিয়ে বলেছেন, পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কার্যকরভাবে তার দায়িত্ব পালন করছে। তিনি সকল আন্তর্জাতিক ফোরামে কাশ্মির ইস্যু উত্থাপনের জন্য পাকিস্তানের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছেন। পাকিস্তানের কূটনৈতিক বিচ্ছিন্নতা এক বছরের মধ্যে শেষ হয়েছে বলেও সংবাদ সম্মেলনে মন্তব্য করেছেন ইশাক দার। তিনি বলেছেন, আমাদের পররাষ্ট্র দপ্তর বলেছে, আমরা অর্থনৈতিক কূটনীতি অনুসরণ করব। ঢাকা সফরের পরিকল্পনার কথা জানিয়ে পাকিস্তানের এই মন্ত্রী বাংলাদেশকে সহযোগিতার মূল অংশীদার হিসেবে বর্ণনা করেন। ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা নেতৃত্বাধীন সরকারের পতনের পর থেকে বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নে নানা ধরনের পদক্ষেপ নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে পাকিস্তান। এরই অংশ হিসেবে সম্প্রতি পাকিস্তানের দক্ষিণাঞ্চলীয় বন্দরনগরী করাচি থেকে একটি পণ্যবাহী জাহাজ সরাসরি চট্টগ্রাম বন্দরে নোঙর করেছে। ১৯৭১ সালের পর এটিই প্রথম কোনো পাকিস্তানি পণ্যবাহী জাহাজের বাংলাদেশে নোঙর করার ঘটনা।

উভয় দেশের মধ্যে এই সরাসরি সমুদ্র সংযোগকে ঐতিহাসিক বলেও আখ্যায়িত করা হচ্ছে। এমন অবস্থায় সমুদ্রপথে ঢাকা ও ইসলামাবাদের মধ্যে সরাসরি এই সংযোগে ভারতের ওপর কী ধরনের প্রভাব পড়বে তা নিয়ে প্রশ্নও আছে। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর বহু বছর দুই দেশের মধ্যে সরাসরি বাণিজ্য হতো না। পরবর্তীতে বাণিজ্যিক সম্পর্ক পুনরায় স্থাপিত হলেও পাকিস্তান থেকে সাধারণত সরাসরি পণ্যবাহী জাহাজ চট্টগ্রামে আসতো না। সে দেশের পণ্যবাহী জাহাজ প্রথমে শ্রীলঙ্কায় কন্টেইনার খালাস করতো। এরপর জাহাজ বদল করে সেসব কন্টেইনার বাংলাদেশে আসতো। বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শাসনামলে দুই দেশের মাঝে শীতল সম্পর্ক ছিল। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর থেকে পাকিস্তানের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম সীমিত হতে থাকে। তখন নিরাপত্তার কারণ দেখিয়ে পাকিস্তান থেকে আমদানি করা অধিকাংশ পণ্য ‘লাল তালিকাযুক্ত’ করে এনবিআর। অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় আসার পর পাকিস্তানের অনুরোধে গত ২৯ সেপ্টেম্বর লাল তালিকা থেকে মুক্ত হয়েছে দেশটির সব ধরনের পণ্য। তবে শুধু এক্ষেত্রে নয়, বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের সম্পর্ক উন্নয়নে আরো অনেক তৎপরতা দেখা যাচ্ছে।

গত সেপ্টেম্বরে জাতিসংঘে অধ্যাপক ইউনুস ও পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফের মধ্যে বৈঠকের ঘোষণায়ও উল্লেখ করা হয় যে- দুই দেশই বিভিন্ন স্তরে পারস্পরিক সহযোগিতা জোরদার করেছে। আর এসবের মাঝে নতুন করে এই জাহাজ ভেড়ানোর খবর দুই দেশের সম্পর্কের উষ্ণতার ইঙ্গিত দিচ্ছে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত