নির্বাচন কমিশন ভোটারদের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দিয়ে তাদের বঞ্চনা ঘোচাতে চায় বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এএমএম নাসির উদ্দিন। তিনি বলেছেন, নির্বাচন কমিশন এ লক্ষ্যে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। গতকাল রোববার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে ভোটার হালনাগাদের তথ্য সংগ্রহকারী ও সুপারভাইজারদের প্রশিক্ষণের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে দেয়া বক্তব্যে একথা বলেন তিনি।
সিইসি বলেন, ‘ভোটের অধিকার থেকে বঞ্চিত ১৮ কোটি মানুষ। আমরা দায়িত্ব নিয়েছি- তাদের বঞ্চনা যেন ঘোচাতে পারি। তারা যে বঞ্চিত হয়েছেন, ভোটার অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়েছেন, তা ঘোচাতে চাই। বঞ্চনার কষ্ট দূর করতে চাই। আমাদের কমিটমেন্টে (অঙ্গীকার) অটল আছি। সবার সহযোগিতা চাই।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, আমাদের কমিটমেন্ট হলো, ফ্রি-ফেয়ার-ক্রেডিবল ইলেকশন জাতিকে উপহার দেয়া। আমি প্রায়ই বলি, আমাদের বঞ্চিত কর্মকর্তারা জনপ্রশাসনে যাচ্ছেন, আন্দোলন করছেন, তাদের বঞ্চনার তথ্য তুলে ধরছেন, দেশের ১৮ কোটি বঞ্চিত মানুষ কোথায় যাবেন? সামনে নির্ভুল ভোটার তালিকার পাশাপাশি ও নির্বাচনে সবার ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে হবে। তিনি আরো বলেন, ২০ জানুয়ারি থেকে বাড়ি বাড়ি গিয়ে নতুন ভোটার তথ্য সংগ্রহের এ কাজে সবার সহযোগিতা চাই। ধাপে ধাপে প্রশিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দেয়ার পর পৌনে এক লাখ লোকবলকে এ কর্মসূচির আওতায় আনা হবে। কাজ করতে গিয়ে ইচ্ছাকৃত ভুল কমিশন করবে না বলেও প্রতিশ্রুতি দেন সিইসি।
এ সময় মৃত ভোটার, ভুয়া ভোটার না বানাতে সংশ্লিষ্টদের সতর্ক করেন নির্বাচন কমিশনার (ইসি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ। তিনি বলেন, ‘টাকা অর্জনের মোটিভ নিয়ে যাতে কেউ ভোটার তালিকা অন্তর্ভুক্তির কাজে অংশগ্রহণ না করে। মৃত ভোটার, ভুয়া ভোটার এবং নতুন ভোটারের ক্ষেত্রে সমানভাবে কাজ করতে হবে।’ শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর নতুন নির্বাচন কমিশনের প্রতি মানুষের আস্থা বেড়েছে বলে দাবি করেন তিনি। বলেন, ভোটের প্রতি মানুষের অনাগ্রহ সেখান থেকে কমিশন এবার বেরিয়ে আসতে পারবে তিনি বলেন, ‘মানুষের মধ্যে যে আস্থার ঘাটতি ছিল তা কমে এসেছে। মানুষ এবার ভোট দিতে চায়। ভোটকে কেউ যাতে নষ্ট করতে না পারে সেই ব্যবস্থা নেয়া হবে।’ আরেক নির্বাচন কমিশনার আনোয়ারুল ইসলাম সরকার বলেন, ‘বিগত নির্বাচন যেভাবে কলুষিত হয়েছে, তা পুনরুদ্ধারে যা যা করা লাগে তার সবটুকুই করবে কমিশন। ভোটার হালনাগাদে অনিয়ম, অবহেলা অস্বচ্ছতা কোনোভাবেই বরদাস্ত করা হবে না।’
অনুষ্ঠানে ইসি তাহমিনা আহমদ বলেন, ‘সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে কমিশনের হাতিয়ার হবে আইন এবং বিবেক। ইসির কোনো কর্মকর্তা দূরভিসন্ধিমূলক কাজ করলে সেই দায় কমিশন নেবে না।’ ভোটে মানুষের আস্থা ফিরিয়ে আনতে স্বচ্ছতা এবং দায়িত্বের সাথে কাজ করার আহ্বান জানিয়ে ইসি আব্দুর রহমান মাছউদ বলেন, ‘নির্ভুল ভোটার তালিকা সুষ্ঠু নির্বাচনের পূর্বশর্ত বলেও মনে করে কমিশন।’ ভোটার তালিকা হালনাগাদে সর্বোচ্চ সতর্কতা এবং তৎপরতার সঙ্গে কাজ করার তাগিদ দেন তিনি।