সুপ্রিমকোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের একটি বেঞ্চে কাগজমুক্ত বিচারকাজ শুরু হয়েছে, যাকে নতুন যুগে প্রবেশ বলে মন্তব্য করেছেন ওই বেঞ্চের বিচারক। গতকাল রোববার বিচারপতি আহমেদ সোহেলের একক কোম্পানি বেঞ্চে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রথম এ ধরনের বিচারকাজ শুরু হলো। ২০২৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর সুপ্রিমকোর্টের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে নতুন বছর কাগজমুক্ত বিচারকাজ শুরু করার বিষয়ে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের প্রত্যাশার কথা জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ২০২৫ সালের মধ্যে প্রধান বিচারপতি ঘোষিত রোডম্যাপের সফল বাস্তবায়নের মাধ্যমে বিচারসেবাকে জনগণের দোড়গোড়ায় পৌঁছানোর জন্য বিভিন্নমুখী পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। এরই অংশ হিসেবে আগামী ২ জানুয়ারি থেকে বাংলাদেশ সুপ্রিমকোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের কোম্পানি সংক্রান্ত একটি বেঞ্চে সম্পূর্ণ কাগজমুক্ত বিচারিক কার্যক্রম পরিচালনা শুরু করা হবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়। তবে সে দিন কোর্ট বন্ধ থাকায় তা সম্ভব হয়নি। অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা এএফ হাসান আরিফের মৃত্যুতে তার প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে সে দিন সুপ্রিমকোর্টের উভয় বিভাগে বিচারকাজ বন্ধ ছিল। প্রথম দিন দুইটি মামলার আবেদন অনলাইনে জমা পড়েছে বলে এজলাশে বসে বিচারক আইনজীবীদের জানান। যে দুটি আবেদন জমা পড়েছে তার একটির আইনজীবী হলেন মো. জামিল খান। তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, অনলাইনে একটি ম্যানশন স্লিপ জমা দিয়েছেন তিনি। আরো কয়েকটি আবেদন প্রস্তুত আছে জমা দেয়ার জন্য। গতকাল রোববার এই কোম্পানি কোর্টের কার্য তালিকায় ৩০টি মামলা শুনানির জন্য ছিল। শুনানি করার সময় আইনজীবীদের উদ্দেশে বিচারক অনলাইনে মামলা ফাইল করার পরামর্শ দেন। এরপর তালিকায় থাকা মামলাগুলোর স্বাভাবিক শুনানি করা হয়। তিনি আইনজীবীদের বলেন, সুপ্রিমকোর্টের ওয়েবসাইটে এ বিষয়ে একটি ভিডিও দেয়া আছে। এতে কীভাবে ফাইল করতে হবে তা বলা হয়েছে। আস্তে আস্তে এতে অভ্যস্ত হয়ে যান। এ সময় কোভিড মহামারির সময় অনলাইনে শুনানির বিষয় স্মরণ করিয়ে বিচারক বলেন, প্রথম প্রথম ঝামেলা মনে হলেও পরে আইনজীবীরা এতে অভ্যস্ত হয়ে গিয়েছিলেন। এক পর্যায়ে তিনি ডেপুটি অ্যাটির্নি জোনারেলের উদ্দেশে বলেন, লারনেড ডিএজি, এখন তো সব অনলাইন, আমরা নতুন যুগে প্রবেশ করলাম।
তখন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মহসিনা খান লাকি বলেন, তার পরিচিত এক আইনজীবীও অনলাইনে একটি মামলা জমা দিয়েছেন। মামলা করার ধারাবাহিক প্রক্রিয়ার বিষয়ে অ্যাডভোকেট মো. জামিল খান বলেন, সংশ্লিষ্ট সেকশন থেকে প্রথমে একটি পাসওয়ার্ড নিতে হবে। এরপর নিজের একটি আইডি খুলতে হবে। কোনো মামলা ফাইল করার সময় আবেদনের অংশটি পিডিএফ করে নিজের আইডি দিয়ে সংশ্লিষ্ট সেকশনে ঢুকে আপলোড করতে হবে। এরপর ওই পাতার প্রিন্ট কপি নিয়ে আবেদনের অন্যান্য কাগজসহ এফিডেভিট করতে হবে। পরবর্তীতে সেই এফিডেভিট করার ফাইল নিয়ে সংশ্লিষ্ট কোর্টে শুনানি করতে হবে। শুনানি এখন এজলাশে হবে; পরবর্তীতে অনলাইনে করার ব্যবস্থা হলে করা যাবে বলেও তিনি বলেছেন।