বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন বলেছেন, চালের বাজারে দাম কিছুটা বেড়েছে, খুব শিগগিরই দাম কমে আসবে। এসময় চাল আমদানিকারক ও ব্যবসায়ীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ব্যবসা-বাণিজ্যকে সহজ করতে সরকার কাজ করছে। বাস্তবমুখী সকল সহযোগিতা নিশ্চিত করা হবে। গতকাল মঙ্গলবার সচিবালয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে চালের মজুত ও আমদানি পরিস্থিতি সংক্রান্ত সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন। সভায় আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন খাদ্য মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার। ব্যবসায়ীদের কোনো সমস্যা থাকলে সরকার তা সমাধানের চেষ্টা করবে উল্লেখ করে বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, পাইকারি বাজার ও খুচরা বাজারে চালের দামের বড় ব্যবধান দেখা যাচ্ছে এটার প্রকৃত কারণ জেনে আমরা সমাধান করতে চাই। বাজারের স্বাভাবিক পরিবেশ নিশ্চিত করতে চাই। শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, অধিকাংশ পণ্যের দাম কমে এসেছে। চালের বাজারে দাম কিছুটা বেড়েছে, খুব শিগগিরই দাম কমে আসবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
খাদ্য মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার বলেন, সরকারি খাদ্য মজুত এখন বারো লাখ টনের উপরে। চলতি মাসেই মিয়ানমার থেকে এক লাখ টন চাল আসবে। পার্শ্ববর্তী অন্যান্য দেশ থেকেও জিটুজি ভিত্তিতে চাল সংগ্রহের চেষ্টা চলমান রয়েছে। সরকার সিঙ্গেল সোর্স থেকে আমদানিনির্ভর না হয়ে বহুমুখী সোর্স থেকে চাল সংগ্রহের উদ্যোগ নিয়েছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি। আলী ইমাম মজুমদার আরো বলেন, টিসিবির মাধ্যমে নিয়মিত স্বল্প আয়ের মানুষকে চাল দেওয়া হচ্ছে। খাদ্য বান্ধব কর্মসূচিতে ৩০ কেজি করে চাল পাচ্ছে পঞ্চাশ হাজার পরিবার। এছাড়াও খাদ্য মন্ত্রণালয়ের নিয়মিত কার্যক্রম ওএমএস চালু রয়েছে।
মজুমদার এগ্রো ফুড ইন্ডাস্ট্রির আদিত্য মজুমদার বলেন, ব্যাংকগুলো এলসি খুলতে চাচ্ছে না। শতভাগ মার্জিনে এলসি খুলতে হচ্ছে। এতে আমদানিকারকরা চাল আমদানিতে বাধাগ্রস্ত হচ্ছেন। এসময় তিনি এলসি মার্জিন কমিয়ে ডলার সরবারাহ নিশ্চিত করতে উপদেষ্টাদ্বয়ের সহযোগিতা কামনা করেন।
চাল ব্যবসায়ী নাজির প্রধান বলেন, সরকারিভাবে চাল সংগ্রহকালে ব্যবসায়ীরা প্রতিযোগিতা করে ধান কেনায় দাম বেড়ে যায়। তিনি চালের বাজার স্থিতিশীল রাখতে স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক টেন্ডারের মাধ্যমে চাল সংগ্রহ করতে সরকারকে পরামর্শ দেন। বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর ড. মো. হাবিবুর রহমান বলেন, এলসি খোলার ব্যাপারে সার্বিক সহযোগিতার জন্য ব্যাংকগুলোকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। খাদ্যপণ্যে এলসি খোলায় কোনো রকম গাফিলতি হলে তা খতিয়ে দেখা হবে। প্রবাসী আয় বেড়েছে এলসি খোলায় আর সমস্যা হবে না বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
সভায় খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মাসুদুল হাসান, ট্যারিফ কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মইনুল খান, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব (রুটিন দায়িত্ব) মো. আব্দুর রহিম খান, টিসিবির চেয়ারম্যান বিগ্রেডিয়ার জেনারেল মো. মোস্তফা ইকবাল, বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর ড. মো. হাবিবুর রহমান, চাল আমদানিকারক আদিত্য মজুমদার ও ব্যবসায়ী নাজির প্রধান বক্তব্য রাখেন।