বাংলাদেশ সফরে আসছেন পাকিস্তানের ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন ফেডারেশন অব পাকিস্তান চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের (এফপিসিসিআই) ২৪ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল। আগামী ১০ জানুয়ারি থেকে ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত এই প্রতিনিধিদলটি ঢাকায় অবস্থান করবে বলে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে। ঢাকাস্থ পাকিস্তান হাইকমিশন থেকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে এক চিঠিতে উচ্চপর্যায়ের এই বাণিজ্য প্রতিনিধিদলকে সহযোগিতা করার অনুরোধ করা হয়েছে। ওই চিঠিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ (এফবিসিসিআই) এর আমন্ত্রণে বাংলাদেশ সফরে আসছেন পাকিস্তানের ব্যবসায়ীরা। এতে নেতৃত্ব দেবেন এফপিসিসিআইয়ের সভাপতি আতিফ ইকরাম শেখ ও সিনিয়র সহ-সভাপতি সাকিব ফায়াজ মাগুন। এই প্রতিনিধিদলে পাকিস্তানের বিভিন্ন খাতের শীর্ষস্থানীয় শিল্পপতি ও ব্যবসায়ীরা থাকবেন। সফরকালে পাকিস্তানের ব্যবসায়ীরা বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস, বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশির উদ্দিন, বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন ও রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) ভাইস চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেনের সাথে সাক্ষাৎ করবেন বলে পাকিস্তান হাইকমিশনের চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে। এদিকে ৬ জানুয়ারি ট্রেডিং কর্পোরেশন অব পাকিস্তানের (টিসিপি) চেয়ারম্যান সৈয়দ রাফিউ বশির শাহের নেতৃত্বে ছয় সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল ঢাকা পৌঁছেছেন। গতকাল এই প্রতিনিধিদলটির সদস্যরা ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশের চেয়ারম্যানসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে বৈঠক করবেন। জানা গেছে, ওই বৈঠকে দুই দেশের বাণিজ্য সংস্থার মধ্যে সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সই হতে পারে। বিশেষ করে, চাল আমদানি নিয়ে আলোচনা হবে বলে জানা গেছে। বাংলাদেশে সরকার পরিবর্তনের পর পাকিস্তানের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কের উন্নয়ন ঘটছে। দুই দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যও বেড়েছে এই সময়ে। গত বছরের ২ সেপ্টেম্বর সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর সঙ্গে সাক্ষাৎকালে বাংলাদেশে নিযুক্ত পাকিস্তানের হাইকমিশনার আহমদ মারুফ জানান, পাকিস্তান যেতে ভিসা ফি লাগবে না বাংলাদেশি নাগরিকদের। পাকিস্তানের নতুন ভিসা নীতিমালা অনুযায়ী, ১২৬টি দেশের মতো বাংলাদেশও এই সুবিধা পাবে। সম্প্রতি পাকিস্তানের করাচি থেকে দুটি কনটেইনার বহনকারী জাহাজ সরাসরি বাংলাদেশের চট্টগ্রাম বন্দরে পণ্য নিয়ে এসেছে। বলা হচ্ছে, বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর এবারই প্রথমবারের মতো সরাসরি জাহাজ করাচি থেকে চট্টগ্রাম আসলো। এরপর থেকে দুই দেশের বাণিজ্যে সম্ভাবনা দেখছেন উভয় দেশের ব্যবসায়ীরা। বাংলাদেশ পাকিস্তানের মধ্যে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য আগে থেকেই রয়েছে। তবে তার পরিমাণ খুব বেশি না। পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা প্রধানত বস্ত্র শিল্পের কাঁচামাল আমদানি করে থাকেন। বিশেষ করে তুলা আমদানি হয়। এছাড়া সিমেন্টের কাঁচামালও আমদানি করেন বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা। আর বাংলাদেশ থেকে পাকিস্তানে কাঁচা পাট, চা, তৈরি পোশাক, হাইড্রোজেন পার-অক্সাইড ও ওষুধ রপ্তানি হয়ে থাকে।